এক লাখ ১০ হাজার টন সার আমদানিতে ব্যয় ৮৫০ কোটি টাকা
Published: 1st, July 2025 GMT
দেশের কৃষিখাতে ব্যবহারের জন্য রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ১ লাখ ১০ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করবে সরকার। এ সংক্রান্ত তিনটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৫০ কোটি ৫০ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পঞ্চম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি সভার অনুমোদনক্রমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দেশটি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে পঞ্চম লটে ৩০ হাজার মেট্রিক টন (১০%+) বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৫ লাখ ৬৫ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪১ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের মূল্য ৩৮৫.
সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় চীন থেকে প্রথম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
বিএডিসি ও চীন এর মধ্যে ১০ জানুয়ারি সার আমদানির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রথম লটে ৪০ হাজার (+১০%) মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৯১ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫৮ কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।
সভায় রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় সৌদি আরব থেকে সপ্তম লটে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি (ডাই এ্যামোনিয়াম ফসফেট) সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। বিএডিসি কর্তৃক সৌদিআরব থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ডিএপি সার আমদানি করা হয়। ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তারিখে চুক্তি নবায়ন করা হয়। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে সৌদিআরব থেকে ৭ম লটে ৪০ হাজার (+১০%) মে. টন ডিএপি সার বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ব্যয় হবে ২ কোটি ৮৬ লাখ ডলার সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৫১ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন ডিএপি সারের দাম ৭১৫ মার্কিন ডলার।
ঢাকা/হাসনাত/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ষ ট র য় পর য য় হ জ র ম ট র ক টন স র আমদ ন র ৪০ হ জ র ইউর য়
এছাড়াও পড়ুন:
খনিজ ও তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতার পরিসর বাড়াতে আগ্রহী। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
গত মাসে ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদ বাণিজ্যচুক্তিতে সই করেছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, এই চুক্তির মধ্য দিয়ে শুল্ক কমবে ও বিনিয়োগ বাড়বে। পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল জানান, ইসলামাবাদ মার্কিন কোম্পানিগুলোকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে খনন প্রকল্পে স্থানীয় কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বিনিয়োগের সুযোগ দেবে এবং ইজারা চুক্তিতে ছাড়ের মতো নানা ধরনের সুবিধা দেবে। খবর রয়টার্স
বেলুচিস্তান প্রদেশে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সোনা ও তামার খনি আছে বলে ধারণা করা হয়। রেকো ডিক নামের এক খনিপ্রকল্প সেখানে চলমান; এই প্রকল্প পরিচালনা করছে ব্যারিক গোল্ড নামের একটি খনিপ্রতিষ্ঠান।
রুবিও বুধবার রাতে বলেন, ‘আমরা অর্থনৈতিক সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র, বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও তেল-গ্যাস খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও ব্যবসায়িক অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ও বাণিজ্য সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে কৃতজ্ঞ।
ট্রাম্প প্রশাসনের আগে পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কিছুটা শীতল ছিল। এর পেছনে একটি কারণ হলো, পাকিস্তানের চিরশত্রু ভারতের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঝুঁকে পড়া। মূলত চীনের উত্থান মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র ভারতের দিকে ঝুঁকেছে। এ ছাড়া আফগানিস্তানের বিষয়েও ওয়াশিংটনের ক্ষোভ ছিল, বিশেষ করে বাইডেন প্রশাসনের সময় আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সময় তালেবানদের ক্ষমতা দখলের ঘটনায়। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, পাকিস্তান এই কাজে তালেবানদের সহযোগিতা করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
সম্প্রতি দুই দেশের সম্পর্কে উন্নতি হয়েছে। ট্রাম্পের উদ্যোগে মে মাসে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি হয় বলে দাবি করা হয়। পাকিস্তান ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে, যদিও ভারত জানিয়েছে, সমস্যা সমাধানে দুই দেশকে সরাসরি আলোচনায় বসতে হবে, বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়া তা হতে হবে।
এদিকে মঙ্গলবার ইসলামাবাদে সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ওয়াশিংটন সফরের সময় ‘বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংস্থা হিসেবে চিহ্নিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।’
দুই দেশের বাণিজ্যইউনাইটেড স্টেটস ট্রেড রিপ্রেজেনটেটিভ বা ইউএসটিআরের তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে পণ্য ও সেবা–বাণিজ্যের মোট পরিমাণ ছিল প্রায় ১০ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ১ হাজার ১০ কোটি ডলার; ২০২৩ সালের তুলনায় যার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানের পণ্যবাণিজ্য (রপ্তানি ও আমদানি) ছিল মোট ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ৭২০ কোটি ডলার। গত বছর পাকিস্তানে মার্কিন পণ্যের রপ্তানি হয়েছে ২ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ২১০ কোটি ডলার, আগের বছরের তুলনায় যা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেশি। পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানি ছিল ৫ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ৫১০ কোটি ডলারের; ২০২৩ সালের তুলনায় যা ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ফলে ২০২৪ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে মার্কিন পণ্যবাণিজ্যের ঘাটতি ছিল ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলার—২০২৩ সালের তুলনায় যা ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি।
২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সেবা–বাণিজ্য ছিল প্রায় ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন বা ২৯০ কোটি ডলারের। পাকিস্তানে মার্কিন সেবা রপ্তানি হয়েছে ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ১৭০ কোটি ডলারের, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ২০ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সেবা আমদানি হয়েছে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন বা ১১০ কোটি ডলারের, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি। ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সেবা–বাণিজ্যের উদ্বৃত্ত ৬১০ মিলিয়ন বা ৬১ কোটি ডলার; ২০২৩ সালের তুলনায় যা ১৪৭ শতাংশ বেশি।