জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় আনা পাঁচটি অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানি শেষে আমির হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। তাঁদের পক্ষে আমির হোসেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী।

ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের আমির হোসেন বলেন, এই মামলা থেকে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে খালাস করার জন্য তাঁর আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে।

এক প্রশ্নের জবাবে আমির হোসেন বলেন, তিনি মনে করেন, তাঁর (শেখ হাসিনা) বিরুদ্ধে যে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো সঠিক নয়। অভিযোগগুলো সঠিক না বিধায় তিনি ট্রাইব্যুনালে ডিসচার্জের (অব্যাহতির) আবেদন করবেন।

মামলার তিন আসামির বিরুদ্ধে যে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো হলো—উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া; বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যার দায়; চানখাঁরপুলে আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যার দায় এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায়।

এ ধরনের বড় মামলায় রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবীর কাউকে মুক্ত করার নজির আছে কি না, তা আমির হোসেনের কাছে জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে তিনি বলেন, নজির নেই। কিন্তু নজির তো যেকোনো সময় হতে পারে।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন ট্রাইব্যুনালে৩ ঘণ্টা আগে

এর আগে আজ দুপুরে বিচারপতি মো.

গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

শুনানিতে আমির হোসেন বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক মামলা। তিনি এই মামলার নথিপত্র ২৫ জুন পেয়েছেন। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পাননি, তা ছাড়া তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাই তাঁর প্রস্তুতির জন্য ১৫ দিন সময় প্রয়োজন।

ট্রাইব্যুনাল ৬ দিন সময় মঞ্জুর করে আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। সেদিন আসামিপক্ষ যুক্তি তুলে ধরবে।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনাসহ আসামি ২০৬, গ্রেপ্তার ৭৩ জন৮ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র হ স ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি আ.লীগ, যুব মহিলা লীগ না’, আদালতে সাবেক এমপি তুহিন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে তুহিনের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ করেন। শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে এ মামলা হয়।

এদিন আদালতে শুনানিতে সাবেক এমপি তুহিন বিচারককে বলেন, আমার ঔষধ শেষ হয়ে গেছে, ঔষধ প্রয়োজন।

শুনানির সময় তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোরশেদ আলম শাহীন সাবেক এমপি তুহিনের ঔষধ দেখিয়ে আদালতকে বলেন, উনার ঔষধ প্রয়োজন, এগুলো দিতে হবে। এসময় বিচারক বলেন, এখান থেকে ঔষধ দেওয়ার নিয়ম নেই। যথাযথ নিয়মে ঔষধ নেবেন। বাইরে থেকে দেওয়া যাবে না। 

এর আগে শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুহিনকে যুব মহিলা লীগ উল্লেখ করলে আদালতে তুহিন বলেন, আমি আওয়ামী লীগ। যুব মহিলা লীগ না।

এদিন আদালতে শুনানির সময় হাসিমুখে গল্প করতে দেখা যায় সাবেক এই এমপিকে। শুনানিতে পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে তিনি হাসি দিয়ে মাথা নাড়তে থাকেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী যখন শুনানিতে কথা বলেন, তখন তিনি মুচকি হাসি দিয়ে তার কথা শুনতে থাকেন।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তুহিনের উদ্দেশ্যে বলেন, তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। বিভিন্ন মিটিং-মিছিলসহ হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কিছু প্রমাণও পাওয়া গেছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের জন্য তার পরবর্তী রিমান্ড প্রয়োজন।

এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী মোরশেদ আলম শাহীন আদালতকে বলেন, একটা অনুমানের ওপর নির্ভর করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া রিমান্ড চাইতে পারে না রাষ্ট্রপক্ষ। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ নেই। এটা আইনের লঙ্ঘন। তিনি বলেন, একজন পার্লামেন্ট সদস্যের কাছে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি সুসমন্বিত থাকে। ভাবমূর্তি বিপন্ন হয় না। আমরা রিমান্ড বাতিলসহ জামিন চাই। কারণ তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ নেই। কোনও প্রমাণ নেই।

এর উত্তরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, বিনা ভোটের পার্লামেন্ট মেম্বার তিনি। তার পক্ষে এতো বলার কিছু নেই। সাবেক সিইসি হাবিবুল আওয়ালই যখন বলেছেন যে, এটা ডামি নির্বাচন- সেখানে বিনাভোটের পার্লামেন্ট মেম্বার ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার সহচরকে এতো ভালো প্রমাণের যৌক্তিকতা নেই। তিনি আওয়ামী লীগের সব খারাপ কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।

এর আগে গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খালাস চেয়ে আপিল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হিটু শেখের
  • আইনজীবী হত্যা: চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র 
  • চিন্ময় দাসসহ ৩৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট
  • মানবতাবিরোধী অপরাধ: শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবীর বক্তব্য আগামী সোমবার
  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের আবেদন ট্রাইব্যুনালে
  • এমপিওভুক্তির পরিবর্তে জ্যেষ্ঠতা প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে গণনা কেন শুরু করা হবে না
  • মুন্সীগঞ্জে সাবেক এমপি বিপ্লবের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  • ঢাকা শহরের সৌর প্যানেলগুলো সচল করার নির্দেশ হাইকোর্টের
  • ‘আমি আ.লীগ, যুব মহিলা লীগ না’, আদালতে সাবেক এমপি তুহিন