গাজীপুরে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে হত্যা ও প্ররোচনার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা হয়েছে।

গতকাল সোমবার রাতে কালিয়াকৈর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক।

কালিয়াকৈর উপজেলার আন্দারমানিক গ্রামের আবদুল্লাহ আল মামুন (২০) ও ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার নাওগাঁও গ্রামের হাফিজুল ইসলাম গাজীর (২৫) মৃত্যুর ঘটনায় এসব মামলা করা হয়।

একটি মামলা করেন হাফিজুল ইসলামের বড় ভাই আবদুল হামিদ গাজী। কালিয়াকৈর থানায় করা মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া মামলায় ওবায়দুল কাদের, সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু–কিশোর পরিষদের সভাপতি তালহা ইবনে অলিসহ আরও ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০০ জনকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৪ আগস্ট বিকেলে কালিয়াকৈরের সফিপুর আনসার একাডেমির ৩ নম্বর গেটের সামনে ছাত্র–জনতার মিছিল হয়। মিছিলে গুলিবর্ষণ ও লাঠিপেটায় বেশ কয়েকজন নিহত ও শতাধিক ছাত্র–জনতা আহত হন। সেখানে হাফিজুল ইসলাম গাজী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন ৫ আগস্ট তিনি মারা যান।

আবদুল্লাহ আল মামুনের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর বন্ধু নয়ন মিয়া মামলা করেছেন। ওই মামলায়ও প্রধান আসামি করা হয়েছে শেখ হাসিনাকে। এ ছাড়া মামলায় ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও আসামি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের ৪০০ নেতা-কর্মীকে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ৪ আগস্ট সফিপুর আনসার একাডেমির সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ আল মামুন। তাঁকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্‌যাপন

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।

আরো পড়ুন:

কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি

চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি

ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্‌যাপিত হবে জন্মদিন।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়। 

যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে। 

দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ