শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় নারী ঘাতক আর হতে পারে না: এবি পার্টি
Published: 2nd, July 2025 GMT
জুলাইয়ের গণহত্যা পৃথিবীর যেকোনো পৈশাচিক দুঃশাসনের ইতিহাসকে ম্লান করেছে। গুম, খুন, লুটপাট, হেলিকপ্টার থেকে গুলি, কারফিউ জারিসহ সব ধরনের অত্যচার চালিয়ে জনগণকে দমনের চেষ্টা হয়েছে। জুলাইয়ের ৩৬ দিনের নৃশংসতার ছবি যিনিই দেখবেন, তিনিই বলবেন, বিশ্বে শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় নারী ঘাতক আর হতে পারে না।
৩৬ দিনব্যাপী এবি পার্টির জুলাই উদ্যাপন কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বুধবার আয়োজিত এক চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এসব কথা বলেন। বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ দিলারা চৌধুরী। ১৩ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলারা চৌধুরী বলেন, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে মানুষ যে মুক্তি পেল, সেটাকে যেভাবেই হোক ধরে রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব না হলে আবারও নতুন কোনো ফ্যাসিবাদের কবলে পড়লে দেশ একটা গভীর অন্ধকারে ঢেকে যাবে। গণ-অভ্যুত্থান ধরে রাখতে না পারলে নিজেদেরই ভুক্তভোগী হতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন।
শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে আবদুর রহমান জিসান রায়েরবাগে শহীদ হন। জিসানের শহীদের পর তাঁর স্ত্রী আত্মহত্যা করে। আমার একসঙ্গে দুটি সন্তান হারাতে হয়েছে। জিসান ছিল আমার একমাত্র ছেলে। আমি খুনি হাসিনার বিচার চাই।’ শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী রায়েরবাগে শহীদ হন। পরিস্থিতি এমন ছিল আমার স্বামীর লাশটাও তখন আমি আনতে পারিনি।’
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।