জাহিদ হাসান বললেন, শাকিবকে আরও বড় দেখতে চাই
Published: 3rd, July 2025 GMT
দীর্ঘদিন পর বড় পর্দায় ‘উৎসব’ সিনেমা দিয়ে ফিরেছেন জাহিদ হাসান। ঈদুল আজহায় মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি এখনও প্রেক্ষাগৃহে চলছে। এই সিনেমায় অভিনয় করে তুমুল প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি। তবে এরইমাঝে খানিকটা বিতর্কে জড়ালেন এই অভিনেতা।
সম্প্রতি জাহিদ হাসান একটি সাক্ষাৎকারে শাকিব খানের নামে পাশে ‘মেগাস্টার’ শব্দটি ব্যবহার বিষয়ে আপত্তি জানান। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে এই অভিনেতাকে নিয়ে সমালোচনা। বিশেষকরে শাকিব ভক্তরা বেজায় চটেছেন তার ওপর।
বুধবার জুলাই আরেকটি সাক্ষাৎকারে জাহিদ হাসান বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। এই অভিনেতার মতে, তার বক্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় একটা কথা মানি, কাউকে ছোট করে কেউ কখনো বড় হতে পারে না। আমি নিজেই তো ছোট মানুষ, শাকিব খানকে ছোট করতে যাব কেন? হয় আমার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, না হয় আমি ভালোভাবে বুঝাতে পারিনি। এটি ভুল বোঝাবুঝি। আমি যেভাবে বলতে চাচ্ছিলাম, সেভাবে হয়তো বুঝাতে পারিনি।’
টম ক্রুজ, শাহরুখ খান, সালমান খানের কথা উল্লেখ করে জাহিদ হাসান বলেন, ‘কেউ নিজেই যখন বড় মানুষ হয়ে যায়, তার সামনে অন্যকোনও বিশেষণ লাগে না। যেমন টম ক্রুজ, শাহরুখ খান, সালমান খান বা ম্যারাডোনা, তাদের নামের আগে কি অন্যকিছু দেওয়ার দরকার আছে? এই চিন্তু থেকে আমি আগের কথা বলেছি। শাকিব আজ যে জায়গায় গেছে, আমি তাকে আরও বড় দেখতে চাই।’
জাহিদ হাসানের কথায়, ‘আমি শাকিব ভক্তদের আবেগকে সম্মান করি। যারা তার ভক্ত-অনুসারী, তারা যে মন খারাপ করেছে, এটি এক ধরনের ইতিবাচক বিষয়। কিন্তু তারা বিষয়টি (আগের মন্তব্য) বুঝতে পারলে শাকিব খান আরও বড় হতো বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ তারা তো শাকিবকে ভালোবাসে, আমরাও ভালোবাসি। আমি কি বুঝাতে পেরেছি? এটাও যেন ভুলভাবে ব্যাখ্যা না হয়।’
অভিনেতা বলেন, ‘শাকিব খান তো আমাদেরই। আমাদের জিনিস আমাদের করে রাখতে হবে। নিজেরা এ রকম করলে খারাপ, এসব ভালো নয়। সবসময় মাথায় রাখতে হবে, কাউকে ছোট করে কখনও কেউ বড় হতে পারে না।’
তারকাদের মধ্যে বিরোধ বা হানাহানি কখানো ভালো বিষয় না বলেও জানান জাহিদ হাসান। এগুলো থেকে ব্যক্তিজীবনে দূরে থাকতে চান তিনি।
জাহিদ হাসানের ভাষ্য, ‘শিল্পীদের মধ্যে বিরোধ-হানাহানি কখনোই ভালো না। ধর্মগ্রন্থ, পাঠ্য বই কিংবা সামাজিকতায় যেটাই বলি না কেন সবখানে হানাহানির বিরোধীতা করা হয়েছে। এগুলো কখনোই ভালোকিছু বয়ে আনে না। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবেও নিজেদের মধ্যে কোনো ধরণের মনমালিন্য চাই না।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফরিদপুরে এ কে আজাদের বাড়িতে চড়াও বিএনপির একাংশ
ফরিদপুর–৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদের বাড়িতে চড়াও হয়েছেন স্থানীয় বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। ‘আওয়ামী লীগের গোপন মিটিং’ হচ্ছে অভিযোগ তুলে এই ঘটনা ঘটানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের ঝিলটুলীতে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজের নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই বাড়িতে ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ল্যান্ড অফিসার মো. রাফিজুল খান, হা-মীম গ্রুপের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. সোলাইমান হোসেন, সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান ও ক্লিনার মো. হান্নান মিয়া।
রাফিজুল খান বলেন, কিছু লোক বাড়ির গেটে বারবার আঘাত করলে সিকিউরিটি গার্ড মেহেদী হাসান এগিয়ে যান। একপর্যায়ে গেট খুলে দিলে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম নাহিদসহ কয়েকজন বাড়িতে ঢুকে পড়েন। তাঁরা বাড়িতে আওয়ামী লীগের গোপন সভা হচ্ছে কি না, এই বলে ধমকাধমকি করেন। একপর্যায়ে খালি বাড়ি থেকে তাঁরা বেরিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ কে আজাদের বাসা থেকে বের হয়ে মহানগর বিএনপির নেতা–কর্মীরা পাশে ভূমি অফিসের সামনে জড়ো হন। পরে সেখানে শতাধিক লোক জড়ো করা হয়। তাঁরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি ভূমি অফিসের সামনে থেকে শুরু হয়ে অনাথের আচারের মোড় এলাকায় যায়।
মিছিলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলী রেজোয়ান বিশ্বাস, ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব শাহরিয়ার হোসেন, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুনিব হাসান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ বলেন, ‘আমরা জানতে পারি ঝিলটুলীর ওই বাড়িতে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য সভা করছে। সে জন্য আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম।’
একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে দেশের শীর্ষ একজন ব্যবসায়ীর বাড়িতে এভাবে চড়াও হতে পারেন কি না, জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এ কে আজাদ হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের স্বত্বাধিকারী। তিনি ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ফরিদপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল মার্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় এ কে আজাদকে জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পদ থেকে বহিষ্কার করে আওয়ামী লীগ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এ কে আজাদ।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ নির্বাচন করতে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন এই সংসদীয় আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে নায়াব ইউসুফ। তিনি জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ কে আজাদের বাড়িতে যাঁরা চড়াও হয়েছিলেন, তাঁরা সবাই নায়াব ইউসুফের সমর্থক।
এ ব্যাপারে নায়াব ইউসুফ জানান, ‘শহরে এ কে আজাদের অনেকগুলো বাড়ি। আজ (গতকাল) বিএনপির একটি মিছিল হয়েছে, কিন্তু কোন বাড়িতে বিএনপির নেতা–কর্মীরা চড়াও হয়েছে, এ খবর আমার জানা নেই।’
নায়াব ইউসুফ দাবি করেন, ‘এ কে আজাদ আগামী নির্বাচন সামনে রেখে এলাকায় মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। তবে আমি হিংসার রাজনীতি করি না, হামলার রাজনীতি করি না। আমি এর পক্ষপাতী নই। সন্ত্রাস–বিশৃঙ্খলা আমি পছন্দ করি না এবং আমার নেতা–কর্মীদের করতে দিই না।’
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী জানান, তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছেন। এ কে আজাদের বাড়িতে কিছু ঘটেছে বলে তাঁর জানা নেই। কেউ তাঁকে জানায়নি।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে খবর পাই, এ কে আজাদের বাড়িতে বিএনপির লোকজন গেছে। পরে দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কাউকে পায়নি।’