গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক সংযোগ মেরামতের সময় স্পৃষ্ট হয়ে বাউলশিল্পীর মৃত্যু
Published: 7th, August 2025 GMT
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলায় তরিকুল ইসলাম ওরফে ডালিম (৩৪) নামের এক বাউলশিল্পী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে একটি গভীর নলকূপের (ডিপ টিউওয়েল) বৈদ্যুতিক সংযোগের মেরামতের কাজ করার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তরিকুল ইসলাম পৌর এলাকার হরিপুর গ্রামের আয়ুব আলীর ছেলে। তিনি উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) অফিসের মাস্টাররোলে সহকারী ইলেকট্রিশিয়ান পদে চাকরি করেন।
তরিকুল ইসলামের চাচা সাইদুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার শ্রীপুর গ্রামে বিএমডিএর একটি গভীর নলকূপে বৈদ্যুতিক সমস্যা দেখা দেয়। খবর পেয়ে তরিকুল ইসলাম ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে সমাধানের জন্য সেখানে যান। এরপর সেই নলকূপঘরের ছাদের ওপরে লোহার মই দিয়ে কাজ করার সময় মইটি বৈদ্যুতিক তারের সঙ্গে লেগে যায়। এ সময় বিদ্যুতায়িত হয়ে ছিটকে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তরিকুল ইসলাম। পরে স্থানীয় লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। তরিকুল ইসলামের স্ত্রী ও ছোট দুই সন্তান রয়েছে।
তরিকুলের ভাই রঞ্জু ইসলাম বলেন, গান গাওয়ার সময় তরিকুল ইসলাম ডালিম মাথায় গামছা বেঁধে রাখতেন। তাই তিনি এলাকায় বাউল ‘গামছা ডালিম’ নামে পরিচিত ছিলেন। সেই ছোটবেলা থেকেই গানবাজনা নিয়ে থাকতেন। দেশে অনেক গানের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি। বেসরকারি বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলেও গান করেছেন তিনি। ডালিম গানের পাশাপাশি ১০ বছর থেকে দুর্গাপুর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন অফিসের মাস্টাররোলে সহকারী ইলেকট্রিশিয়ানের চাকরি করে আসছেন।
এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হবে বলে জানিয়েছেন দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরুল হোদা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক, আন্দোলনরত ‘তথ্য আপা’দের কর্মস্থলে ফেরার আহ্বান
টানা ৭২ দিন রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব এলাকায় আন্দোলনের পর মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে একটি প্রতিনিধিদলের আলোচনা হয়। এ সময় উপদেষ্টা আন্দোলনরতদের কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
ঝালকাঠি সদরের তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও আন্দোলন পরিচালনা কমিটির সভাপতি সংগীতা সরকার প্রথম আলোকে বলেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁদের আলোচনা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, উপদেষ্টা বলেছেন, আগামী সপ্তাহে তথ্য আপা প্রকল্প রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তাঁদের কাজে ফিরে যেতে বলেছেন উপদেষ্টা।
অবশ্য উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, ‘এই সরকার কোনো প্রকল্প রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করছে না। তাই এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। তাঁদের জন্য বিকল্প কী প্রস্তাব নেওয়া যায়, সেটা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। সেই বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে তাঁদের জানিয়েছি।’
২০১১ সালে পাইলট আকারে ১৩টি উপজেলায় তথ্য আপা প্রকল্প শুরু হয়। পরে ২০১৮ সালের শেষ দিকে ৪৯২টি উপজেলায় প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। পরে তা দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩০ জুন করা হয়। গত বছর আরও এক বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ৩০ জুন করা হয়।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘জাতীয় মহিলা সংস্থা’র বাস্তবায়ন করা এ প্রকল্পের পুরো নাম ছিল ‘তথ্য আপা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন’। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত একনেক সভায় প্রকল্পটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘তথ্য আপা: তথ্য-যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন প্রকল্প’।