শরীয়তপুরে রাতের আঁধারে এক ব্যক্তি আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন দেয়াল ও বিদ্যুতের খুঁটিতে পোস্টার লাগাচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি–সংবলিত এসব পোস্টার লাগানোর দৃশ্য গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়ায়। ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজেও ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে।

এদিকে পোস্টার লাগানো ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করার দাবি করেছে পুলিশ। তাঁর নাম সাজিট মোল্যা। তিনি শরীয়তপুর সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের নিয়ামতপুর গ্রামের বাসিন্দা ও নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মী। পুলিশের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে নয়, বেশ আগে পোস্টারগুলো লাগানোর সময় ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল। সাজিট এ মুহূর্তে দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানা-পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর শহরের পালং তুলাসার সরকারি স্কুলের দেয়াল, গেট, ঈদগাহ এলাকা, পৌরসভা এলাকা, তুলাসার এলাকাসহ অন্তত আটটি স্থানে রাতের আঁধারে পোস্টার লাগিয়েছেন ওই ব্যক্তি। এসব পোস্টার লাগানোর ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গতকাল রাত ১০টার দিকে সাজিট মোল্যা নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেন। এরপর ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে রাত ১২টার দিকে ভিডিওটি ছাত্রলীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকেও পোস্ট করা হয়েছে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণ দেয়ালে দেয়ালে ও বিদ্যুতের খুঁটিতে পোস্টার লাগাচ্ছেন। পেছন থেকে কেউ তা ভিডিও করছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি–সংবলিত ওই পোস্টারে লেখা ছিল, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে; ইনশাল্লাহ। শেখ হাসিনাতেই আস্থা। প্রচারে শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন।’

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, গত বছর ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জাজিরায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা গত বছরের ১৫ আগস্ট সর্বশেষ প্রকাশ্যে কর্মসূচি পালন করেন। এরপর সংগঠনটির আর প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি দেখা যায়নি; কিন্তু রাতের আঁধারে জেলার বিভিন্ন স্থানে মশালমিছিল, পোস্টার টানানো ও বিক্ষোভ মিছিল করেন দলটির নেতা-কর্মীরা।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোস্টার লাগানোর ভিডিওটি সম্প্রতি সময়ের নয়, পুরোনো কোনো ভিডিও এখন ছড়ানো হয়েছে। ভিডিওতে যেসব স্থানের উল্লেখ আছে, সেখানে পুলিশ গিয়েছিল; কিন্তু পোস্টার লাগানোর কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। আমরা পোস্টার লাগানো ওই তরুণকে শনাক্ত করেছি। তরুণের মা জানিয়েছেন, তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন। এ কারণে বিষয়টি নিয়ে আমরা আর আগাইনি।’

এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে জানিয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তথ্য পেয়েছি, পোস্টার লাগানোর পর ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ ছেড়ে অন্য কোনো দেশে চলে গেছেন। এই তরুণের পেছনে কারা আছেন, তাঁদেরও খুঁজে বের করা হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম র ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ছয় নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার

রাজধানীতে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ছয় নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া নেতা–কর্মীরা হলেন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন (৪৪), চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. খান জাহান আলী (৫৫), ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. মশিউর রহমান (৩২), খুলনার খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ (৫২), ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের কর্মসংস্থান সম্পাদক আলিম আল তারিফ (২৮), আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. টিপু সুলতান (৪৫)।

ডিবির বরাত দিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে মো. শাহাদাত হোসেনকে তেজগাঁওয়ের মনিপুরিপাড়া এলাকা থেকে এবং সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে খিলগাঁওয়ের নন্দীপাড়া ব্রিজ এলাকা থেকে খান জাহান আলীকে গ্রেপ্তার করে ডিবির তেজগাঁও বিভাগের একটি দল। আর রাত আটটার দিকে পশ্চিম আগারগাঁও থেকে মো. মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবির লালবাগ বিভাগ।

এ ছাড়া গতকাল রাত পৌনে ১১টার দিকে বসুন্ধরা এলাকা থেকে কাজী ফয়েজ আহমেদকে ও রাত ১২টার দিকে ডেমরা থেকে মো. টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার ডিবির সাইবার বিভাগ। আর রাত ১২টার ১০ মিনিটে লালবাগ এলাকা থেকে আলিম আল তারিফকে গ্রেপ্তার করে ডিবি সাইবার দক্ষিণ বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ