চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উন্নয়ন প্রদর্শনীর উদ্বোধন
Published: 8th, August 2025 GMT
বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো গভীর করতে উভয় দেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যখনই কোনো সংকট কিংবা দুর্যোগের মুখোমুখি হয়, তখন চীন বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো পাশে দাঁড়িয়েছে।”
শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনায় ‘নি হাও চীন-বাংলাদেশ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা উন্নয়ন প্রদর্শনী’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে বেল্ট অ্যান্ড রোড হেলথকেয়ার সেন্টার।
আরো পড়ুন:
অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর: বাণিজ্য আদালত প্রতিষ্ঠার পথে বাংলাদেশ
বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কমিউনিটি ব্যাংকের নারী উদ্যোক্তাদের রিফাইন্যান্সিং চুক্তি
নূরজাহান বেগম বলেন, “সম্প্রতি মাইলস্টোন কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনার পর চীন তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসক দল পাঠিয়ে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সহায়তা করেছে। এছাড়া গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসায় চীন এগিয়ে আসে। জুলাই আন্দোলনে আহতদের জন্য চীন রোবোটিক হাত-পা সরবরাহ করেছে, যা তাদের জীবনে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে।”
তিনি আরো বলেন,“রংপুর অঞ্চলে চীন সরকারের অনুদানে এক হাজার শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ, সরঞ্জাম সরবরাহ এবং ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জুলাই যোদ্ধাদের জন্য একটি পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপনেও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “সরকার সংস্কার বাস্তবায়ন, বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামো সহজ করার মাধ্যমে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে।”
চীনা মেডিকেল ইকুইপমেন্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
প্রদর্শনীতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, “চীন আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি ও মানসম্মত হাসপাতাল সেবায় বিশ্বজুড়ে পরিচিত। বাংলাদেশকে সঙ্গে নিয়ে একটি টেকসই ও আধুনিক স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
প্রদর্শনীতে চীনের ১০টিরও বেশি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল অংশ নেয়। তারা বাংলাদেশি রোগীদের জন্য উন্নত চিকিৎসা সহজলভ্য করতে অন-সাইট ও অনলাইন চিকিৎসা পরামর্শ, ভিসা ইনভাইটেশন ও প্রসেসিং, অনুবাদক সেবা এবং বিমানবন্দর থেকে পিকআপ সুবিধাসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের ঘোষণা দেয়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা, চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ, রোগী ও সাধারণ দর্শনার্থীরা।
ঢাকা/এএএম/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১২টি পাম্পের ৬টি অচল, পানি সরবরাহ কমায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ
তিন দিন ধরে নোয়াখালী পৌরসভার সরবরাহ করা সুপেয় পানি পাচ্ছেন না শহরের সার্কিট হাউস এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ কিসলু। পানি না পেয়ে রান্নাসহ গৃহস্থালির নানা কাজ করতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাঁর পরিবারের সদস্যদের। বোতলজাত পানি কিনে পান করতে হচ্ছে তাঁদের।
শুধু ফরহাদ কিসলুই নন, তাঁর মতো একই ভোগান্তিতে রয়েছেন নোয়াখালী পৌরসভার অনেক বাসিন্দা। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পানির সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় তাঁদের এই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
নোয়াখালী পৌরসভা কর্তৃপক্ষের সরবরাহ করা পানির গ্রাহকসংখ্যা প্রায় সাত হাজার। বিভিন্ন স্থানে বসানো ১২টি বৈদ্যুতিক পাম্পের সাহায্যে ভূগর্ভ থেকে পানি তোলার পর তা পরিশোধন করে গ্রাহকদের সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন এক কোটি লিটার পানি সরবরাহ করতে পারে পৌর কর্তৃপক্ষ। তবে গত কয়েক দিনে ১২টি পাম্পের ৬টি বিকল হয়ে পড়ায় পানি সরবরাহও অর্ধেকে নেমে এসেছে। প্রতিদিন ৫০ লাখ লিটারের মতো পানি সরবরাহ করতে পারছেন।
পৌর শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আরেক বাসিন্দা মো. মোস্তফা জানান, বাসিন্দাদের নিজেদের বসানো পাম্পে যে পানি ওঠে, তাতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন, যে কারণে এই পানি দিয়ে রান্না করা সম্ভব হয় না। পানও করা যায় না। তিন দিন ধরে পৌরসভার পানি না পেয়ে অনেক বাসিন্দা দূরদূরান্তের পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে এনে রান্না করছেন। পান করার জন্য বোতলজাত পানি কিনতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘এমনিতে প্রায় সময় পৌরসভার পানিতে দুর্গন্ধসহ নানা সমস্যা থাকে। এর মধ্যে এখন পানি সরবরাহই বন্ধ। মানুষের ভোগান্তির কোনো শেষ নেই।’
পৌর শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, গত দুই দিনে তাঁর এলাকায় পানি সরবরাহ কমেছে। পানি পাচ্ছেন খুবই কম, তা দিয়ে পরিবারের পানির চাহিদা মিটছে না।
পানি সরবরাহ কমার বিষয়টি স্বীকার করেছেন পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. সোহেল। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পানি তোলার ১২টি পাম্পের মধ্যে ৬টিই বর্তমানে বিকল। এ কারণে গত তিন দিনে দৈনিক এক কোটি লিটারের পরিবর্তে ৫০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে। বিকল পাম্পগুলো সচলের চেষ্টার পাশাপাশি নতুন পাম্প সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। তবে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন লাগতে পারে।
পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ ইসমাঈল প্রথম আলোকে বলেন, পানি সরবরাহে সমস্যার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত রয়েছেন। বিদ্যুৎ লাইনের সমস্যার কারণে ঠিকমতো পানি ওঠানো যাচ্ছে না। আবার পাম্পের সমস্যাও রয়েছে। সমস্যাগুলো দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা চলছে।