গাজা উপত্যকায় ব্যবহার করা হতে পারে, ইসরায়েলে এমন সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি স্থগিত করবে জার্মানি। চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্ৎস আজ শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনার প্রতিক্রিয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

এক বিবৃতিতে মার্ৎস বলেন, ‘জার্মান সরকার পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় ব্যবহার হতে পারে, এমন কোনো সামরিক সরঞ্জাম ইসরায়েলে রপ্তানির অনুমোদন দেবে না।’

গাজায় চলমান মানবিক দুর্দশার কথা তুলে ধরে জার্মানি এই ঘোষণা দিয়েছে। এতে ইসরায়েলকে ঘিরে তাদের নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

গত জুনে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনের আগে দেওয়া এক বক্তব্যে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্ৎস বলেন, ‘ইসরায়েলের অস্তিত্ব রক্ষা আমাদের রাষ্ট্রীয় কর্তব্য।’ তাঁর এমন বক্তব্যের পর গাজায় ব্যবহার করা হতে পারে, এমন সামরিক অস্ত্র ইসরায়েলে রপ্তানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জার্মানির জন্য একটি বড় পদক্ষেপ।

ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে জার্মানি।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (সিপরি)-এর তথ্য অনুসারে, ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ইসরায়েলের অস্ত্র আমদানির ৩৩ শতাংশ জার্মানি থেকে সরবরাহ করা হয়েছে (যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ৬৬ শতাংশ)। এই অস্ত্রের মধ্যে ছিল, নৌযুদ্ধযান (যেমন ফ্রিগেট, টর্পেডো)। তবে সাঁজোয়া ট্রাক, ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র ও গোলাবারুদও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

তবে মার্ৎস হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্ত করার অধিকারে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। অবশ্য বলেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করা ‘ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।’

বিশ্বযুদ্ধে গণহত্যার দায়বোধ থেকে সৃষ্টি হওয়া ইসরায়েলের প্রতি জার্মানির দীর্ঘদিনের সমর্থন এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি হতে থাকায় এবং মানবিক সংকটে জার্মানরা সরকারের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা দেশে টিকতে পারবে না: মৎস্য উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “জুলাই থাকবে-মীর মুগ্ধ মঞ্চ সেই বার্তাই দিচ্ছে। এটি মনে করিয়ে দেয়, স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশে টিকতে পারবে না।

শুক্রবার (৮ আগস্ট) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) বাস্তবায়িত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বীর শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণে উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের রবীন্দ্র সরোবরে নির্মিত ‘মুগ্ধ মঞ্চ’ এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “গত ১৫-১৭ বছর মানুষ কথা বলতে পারেনি। তবে এর অর্থ এই নয় যে ভবিষ্যতেও জনগণ কথা বলতে পারবে না বা শাসকগোষ্ঠী প্রশ্নবিহীনভাবে ক্ষমতায় থাকবে। এই মঞ্চ সেই প্রতিবাদের প্রতীক।”

আরো পড়ুন:

সরকার শহীদদের পুনর্বাসন ও স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ করছে: আদিলুর রহমান

অন্তর্বর্তী সরকার: এক বছরে সফলতা ও ব্যর্থতা

শহীদদের বাবা-মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “আপনারা যে দাবিগুলো তুলে ধরেছেন, আমরা তা সমর্থন করি। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যেখানে কোনো মায়ের বুক খালি হবে না, কোনো বাবাকে আর সন্তানের লাশ কাঁধে বহন করতে হবে না।”

তিনি বলেন, “আমরা আন্দোলন করব, প্রতিবাদ করব। কিন্তু আমাদের বুকে যারা গুলি চালায়—সেই ধরনের পুলিশ বাহিনী আমরা চাই না।”

২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তখন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেছিল—রাষ্ট্রের মেরামত দরকার। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তা আরো একবার প্রমাণ করেছে। তাই বলছি—রাষ্ট্রের মেরামত চলবে এবং তা অব্যাহত রাখতে হবে।”

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান, নারী শহীদ নাঈমা সুলতানার মা, শহীদ জাবিরের বাবা, জুলাই আহত যোদ্ধা আব্দুল আজিজ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ