শরীর স্পর্শ করার প্রয়োজন হলে অনুমতি নিতেন শাহরুখ: শিবা
Published: 9th, August 2025 GMT
বলিউড অভিনেত্রী শিবা চাড্ডা নব্বই দশকের শেষের দিকে বলিউডে অভিষেক ঘটে। ‘দিল সে’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন তিনি। পরবর্তীতে ‘বাধাই দো’ ‘ডক্টর জি’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। শাহরুখ খানের সঙ্গে বেশ কটি সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন। শাহরুখ তার কলেজের সিনিয়র। ৫২ বছর বয়সি শিবার চেয়ে ৮ বছরের বড় শাহরুখ।
কয়েক দিন আগে সিদ্ধার্থ কাননের পডকাস্টে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিবা চাড্ডা। এ আলাপচারিতায় শাহরুখের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
শিবা চাড্ডা বলেন, “দিল সে’ সিনেমায় আমার কোনো চরিত্রই ছিল না বলা যায়! এতটাই ছোট যে, আমি ভুলেই গেছি সেটা কী ছিল। সেই সময় ডালহৌসিতে শুটিং করতে গিয়ে শাহরুখ খানের সঙ্গে দেখা, এটাই ছিল বড় ব্যাপার। মণীষা কৈরালা তখন সেটে ছিলেন না। মূলত, ব্যক্তিগত কিছু কাজের জন্য সেটের বাইরে ছিলেন, আর তুষারের মধ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ দৃশ্যের শুট ছিল। শাহরুখ-মণীষার হাঁটার দৃশ্য ছিল এটি। তখন পরিচালক মণি রত্নম এসে আমাকে বলেন, ‘আপনি কি মণীষার পোশাক পরে তার বডি ডাবল হিসেবে দৃশ্যটিতে হাঁটতে পারবেন?”
আরো পড়ুন:
‘সাইয়ারা’ সিনেমার সাফল্য: প্রথমবার মুখ খুললেন নায়িকা
কমল হাসানের পায়ের ধুলোরও যোগ্য নন শাহরুখ: লিলিপুট
শিবার কলেজে সিনিয়র ছিলেন শাহরুখ খান। তা স্মরণ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি ‘জিরো’ ও ‘রইস’ সিনেমায় তার (শাহরুখ) মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। অথচ শাহরুখ আমার কলেজের সিনিয়র। আমি এখন বুঝতে পারছি, হংস রাজ কলেজে তিনি আমার সিনিয়র ছিলেন। যদিও তাকে বিষয়টি মনে করিয়ে দিইনি।”
একটি ঘটনা বর্ণনা করে শিবা চাড্ডা বলেন, “যখন ‘রইস’ সিনেমার শুটিং করছিলাম, তখন শাহরুখ দিল্লিতে কোনো একটি সাক্ষাৎকারে গিয়ে বলছিলেন, ‘রইস’ সিনেমায় একজন অভিনেত্রী আছেন, যে আমার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। উনাকে দেখুন, দারুণ অভিনয় করেছেন।’ অথচ আমাদের একটা দৃশ্যও একসঙ্গে ছিল না। শাহরুখ খুবই আলাদা ধরনের একজন মানুষ।”
শুটিংয়ে শিবার শরীর স্পর্শ করার প্রয়োজন হলেও অনুমতি নিতেন শাহরুখ। তার ভদ্র আচরণের ঘটনা বর্ণনা করে শিবা চাড্ডা বলেন, “আমার মনে আছে, আমাদের আলিঙ্গনের একটা দৃশ্য ছিল। দৃশ্যটি এমন ছিল—শাহরুখ মার খাচ্ছে, আমি তাকে রক্ষা করব। সিনেমাটিতে বামন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন শাহরুখ। দৃশ্যের শুটিং শুরুর আগে, শাহরুখ আমার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমি কি আপনাকে স্পর্শ করতে পারি?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ শাহরুখ খুবই দারুণ একজন মানুষ। আমি সেটে যাওয়ার আগেই আমার নাম জানতেন। সেই অনুভূতি একেবারেই আলাদা।”
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘আপনাদের কার্যক্রম তো সন্ত্রাসীদের মতো’ সাংবাদিকদের বললেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ভিডিও ভাইরাল
সংবাদ সংগ্রহে যাওয়ার সময় নৌকায় মোটরসাইকেল তোলা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডায় পঞ্চগড়ের কয়েকজন সাংবাদিককে ‘আপনাদের কার্যক্রম তো সন্ত্রাসীদের মতো’ বলেছেন জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর আউলিয়ার ঘাটে এই ঘটনা ঘটে। সাংবাদিকদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়া ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নাম মো. তাহমিদুর রহমান। তিনি পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত। মহালয়া উপলক্ষে পুণ্যার্থীদের নদী পারাপারে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত ছিলেন তিনি।
তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান দাবি করেন, অনুমতি ছাড়া ভিডিও করা এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার কারণেই তিনি এ ধরনের কথা বলেছেন।
ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাভিশন ও দৈনিক কালবেলার পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন, আজকের পত্রিকার পঞ্চগড় প্রতিনিধি ফাহিম হাসান, ঢাকা পোস্টের পঞ্চগড় প্রতিনিধি নুর হাসান এবং ভোরের ডাকের বোদা উপজেলা প্রতিনিধি মাহমুদুল হাসান।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ৩৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলছেন, ‘আপনাদের কার্যক্রম তো সন্ত্রাসীদের মতো।’ তখন তাঁরা প্রতিবাদ করেন। সাংবাদিকেরা দাবি করেন, এর আগে আরও চারটি মোটরসাইকেল নৌকায় পার হয়েছে। কিন্তু তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থল আউলিয়ার ঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরেই বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ত্রিস্রোতা মহাপীঠধাম শ্রীশ্রী বোদেশ্বরী শক্তিপীঠ মন্দির। মহালয়া উপলক্ষে সেখানে আজ সকাল থেকে পূজা চলছে। ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার দিন করতোয়া নদীতে নৌকাডুবিতে ৭১ জনের মৃত্যু ও একজন নিখোঁজের ঘটনার পর থেকে প্রশাসন ঘাটে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা চালু রেখেছে।
বাংলাভিশন টেলিভিশন ও কালবেলার পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘মহালয়ার খবর সংগ্রহের জন্য আমরা বোদেশ্বরী মন্দিরে যেতে মোটরসাইকেলসহ নৌকায় নদী পার হতে যাই। আমাদের আগেও কয়েকটি মোটরসাইকেল পার হয়েছে। কিন্তু আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমাদের বাধা দেন। অন্যরা যেতে পারলে আমরা কেন পারব না—এই প্রশ্ন করলে তিনি আমাদের সন্ত্রাসী বলে গালাগাল করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২২ সালের নৌকাডুবির ঘটনার পর প্রশাসনের নির্দেশনা ছিল—এক নৌকায় যেন ৩০ জনের বেশি যাত্রী বা কোনো যানবাহন না ওঠে। সাংবাদিকেরা মোটরসাইকেল নিয়ে একই নৌকায় যেতে চাইছিলেন বলে আমি বাধা দিই। পাশ থেকে একজন সাংবাদিক বলেন, আমাকে ভাইরাল করবেন, ঝামেলায় ফেলবেন। এভাবে আমাকে পরোক্ষভাবে হুমকি দেওয়ার জন্যই এই কথা বলেছি। আমি বলেছি, আপনারা স্টেটমেন্ট নিতে চাইলে বলেন, কিন্তু এভাবে র্যানডমলি তো ক্যামেরা ধরে ভিডিও করতে পারেন না।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, ‘আমার তেমন দোষ না থাকার পরও ইউএনও স্যার (বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) আমার পক্ষ হয়ে তাঁদের কাছে “সরি” বলেছেন। ওসি সাহেবও সমাধানের চেষ্টা করেছেন। তারপরও তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ওই ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল করার চেষ্টা করছেন।’
এ বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে সেখান থেকে চলে আসতে বলা হয়েছে।