আগামী নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি
Published: 9th, August 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে। নির্বাচনের সময়ে আরও ভালো হবে।
আজ শনিবার সকালে রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কথা বলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যে বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশে। তারপরও আমি বলব, গত বছরের জুলাই-আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা ঘুমাতে পারছি। আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা ঘুমাতে পারছেন না, তাঁরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ইলেকশন আসতে আসতে আরও ভালো হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে নিয়ে আমরা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই, মানুষ যাতে নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশন মোকাবিলা করতে পারবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনী সিস্টেম, নির্বাচন কমিশন এবং যাঁরা নির্বাচন পরিচালনা করেন, সেই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার—সবাই মিলে যে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে, এ বিশ্বাস ও আস্থা সৃষ্টি করা বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অভ্যাস ভুলে গেছে। মানুষকে কেন্দ্রমুখী করা, সবাইকে নিয়ে আসাও চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে।’
দেশে রাষ্ট্র, সরকার, দল, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান একাকার হওয়ার পর সরকারের পতন হলে সব একসঙ্গে ধসে পড়ে বলে মন্তব্য করেন এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সে ধরনের একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হয়েছে। সেসব দেশের সঙ্গে তুলনা করলে আমি বলব, বাংলাদেশে অবস্থা অনেক ভালো।’
অস্ত্রের চেয়ে এআই ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘পেশাদার সাংবাদিকেরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য ভূমিকা রাখবেন, এটা ভালো দিক। কিন্তু যাঁরা ফেসবুক সাংবাদিক হয়েছেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে বিভিন্ন খণ্ডিত বক্তব্য প্রকাশ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কী করা যায়, আমরা ভেবে দেখছি।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো.
আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত আরেকটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সিইসি। সভায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনার, বিভাগের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।
আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে মাঠপর্যায়ে মতবিনিময় করতে রংপুর যাচ্ছেন সিইসি০৭ আগস্ট ২০২৫আরও পড়ুনচ্যালেঞ্জ থাকলেও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে ইসি: সিইসি০৬ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বড় চ য ল ঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে এসপি-ওসির পদায়ন হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পুলিশ সুপার (এসপি) ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) লটারির মাধ্যমে পদায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে লটারির মাধ্যমে এসপি ও ওসির পদায়ন করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশন যদি কাউকে বদলি ও পদায়নের প্রয়োজন মনে করে, তারা সেটা করবে।
আজ বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মপরিকল্পনাবিষয়ক এক বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ডিসি ও ইউএনও যেহেতু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন, সেখানে লটারির মাধ্যমে পদায়ন হবে কি না, তারা সিদ্ধান্ত নেবে। আশা করছি, তারাও লটারি মাধ্যমে পদায়ন করবে।
তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এসপি ও ওসি পদায়ন হবে লটারির মাধ্যমে। তবে ওসির সংখ্যা যেহেতু বেশি, তাই একটি বিভাগ ধরে ধরে লটারির মাধ্যমে পদায়ন করা হবে। এবারের নির্বাচনে ৪৭ হাজার কেন্দ্রে একটি করে বডি ক্যামেরা থাকবে। ওই কেন্দ্রে পুলিশের জ্যেষ্ঠ সদস্যের কাছে বডি ক্যামেরা থাকবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এবারের নির্বাচনে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আট লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে দায়িত্বে থাকবেন, তাঁদের প্রত্যেককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যিনি যে বাহিনীর, যার যার এলাকা অনুযায়ী প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
নির্বাচনে পুলিশের পক্ষপাত ঠেকাতে সরকার কী করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। একই সঙ্গে গণমাধ্যমের সহযোগিতা নেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে, এবার নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।