আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভালো হচ্ছে। নির্বাচনের সময়ে আরও ভালো হবে।

আজ শনিবার সকালে রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ কথা বলেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা হয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যে বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে দেশে। তারপরও আমি বলব, গত বছরের জুলাই-আগস্টের পর আইনশৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা ঘুমাতে পারছি। আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা ঘুমাতে পারছেন না, তাঁরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। ইলেকশন আসতে আসতে আরও ভালো হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সবাইকে নিয়ে আমরা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাই, মানুষ যাতে নির্ভয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন।’

আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চ্যালেঞ্জ নির্বাচন কমিশন মোকাবিলা করতে পারবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনী সিস্টেম, নির্বাচন কমিশন এবং যাঁরা নির্বাচন পরিচালনা করেন, সেই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে গেছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রিসাইডিং অফিসার—সবাই মিলে যে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে, এ বিশ্বাস ও আস্থা সৃষ্টি করা বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার অভ্যাস ভুলে গেছে। মানুষকে কেন্দ্রমুখী করা, সবাইকে নিয়ে আসাও চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে।’

দেশে রাষ্ট্র, সরকার, দল, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান একাকার হওয়ার পর সরকারের পতন হলে সব একসঙ্গে ধসে পড়ে বলে মন্তব্য করেন এ এম এম নাসির উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সে ধরনের একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এটা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে হয়েছে। সেসব দেশের সঙ্গে তুলনা করলে আমি বলব, বাংলাদেশে অবস্থা অনেক ভালো।’

অস্ত্রের চেয়ে এআই ও সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন সিইসি। তিনি বলেন, ‘পেশাদার সাংবাদিকেরা নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক করার জন্য ভূমিকা রাখবেন, এটা ভালো দিক। কিন্তু যাঁরা ফেসবুক সাংবাদিক হয়েছেন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে বিভিন্ন খণ্ডিত বক্তব্য প্রকাশ করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কী করা যায়, আমরা ভেবে দেখছি।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন রংপুরের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো.

দুলাল তালুকদার। অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, রংপুর বিভাগের আট জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন।

আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলনকক্ষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসংক্রান্ত আরেকটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন সিইসি। সভায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি, মহানগর পুলিশ কমিশনার, বিভাগের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা অংশ নেবেন।

আরও পড়ুননির্বাচন নিয়ে মাঠপর্যায়ে মতবিনিময় করতে রংপুর যাচ্ছেন সিইসি০৭ আগস্ট ২০২৫আরও পড়ুনচ্যালেঞ্জ থাকলেও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নিচ্ছে ইসি: সিইসি০৬ আগস্ট ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বড় চ য ল ঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, বিসর্জনকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব শেষ করার জন্য পুলিশ, র‍্যাব, এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে।

আরো পড়ুন:

ছুটোছুটির মধ্যে কাটছে মিমের পূজা

বুড়িগঙ্গায় চলছে প্রতিমা বিসর্জন

পুলিশ জানায়, প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা এবং বিসর্জন স্থানসমূহে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোতায়েন করা হয়েছে কয়েক হাজার পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। শুধু ঢাকাতেই প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পুলিশ সদস্য এবং অতিরিক্ত আরো প্রায় ২ হাজার ৪০০ ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া র‍্যাবের ৯৪টি টহল টিম সাদা পোশাকে নিরাপত্তা তদারকিতে নিয়োজিত রয়েছে।

বিশেষ নজরদারি
প্রতিমা বিসর্জনের মূল ঘাটগুলো, যেমন—পলাশীর মোড়, রায়সাহেব বাজার ও ওয়াইজঘাট এলাকায় অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। বিসর্জন শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সব ঘাটকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।

বিশেষ ইউনিট প্রস্তুত
যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াত, বোম ডিসপোজালও কে-নাইন ইউনিটকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

নৌ-নিরাপত্তা:
নৌ-দুর্ঘটনা এড়াতে কোস্টগার্ড ও স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। সাঁতার না জানা ব্যক্তিদের নৌকায় উঠতে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে এবং যাত্রীদের লাইফ জ্যাকেট পরার অনুরোধ করা হয়েছে। বিসর্জনস্থলে প্রশিক্ষিত ডাইভার (ডুবুরি দল) প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জেলায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব, গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও সিটি স্পেশাল ব্রাঞ্চের সদস্যদের সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানো বন্ধে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে। অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে একত্রিত হয়ে সেখান থেকে শোভাযাত্রা সহকারে বিনা স্মৃতি স্নান ঘাট, ওয়াইজ ঘাট ও নবাববাড়ি ঘাটে বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ:
শোভাযাত্রার পথ নির্বিঘ্ন রাখতে এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান সড়কগুলোতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। শোভাযাত্রার সময় যান চলাচলের জন্য বিকল্প পথের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পূজা কমিটির প্রতি নির্দেশনা:
পূজামণ্ডপগুলোতে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, মণ্ডপে ব্যাগ, থলে বা পোঁটলা নিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। সব নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বিত ও কঠোর তৎপরতায় প্রতিমা বিসর্জন উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন হবে বলে আশা করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৈরী আবহাওয়ায়ও উৎসবের আমেজ, এক ঘণ্টায় ১২৭ প্রতিমা বিসর্জন
  • টেকনাফের পাহাড়ে পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি রাখা আরও ২১ নারী ও শিশু উদ্ধার
  • বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
  • প্রতিমা বিসর্জন ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • অনীষাদের পূজার আনন্দ বাড়িয়ে দিলেন প্রধান উপদেষ্টার সহকারী
  • চার দিন পর স্বাভাবিক যান চলাচল, জনজীবনে স্বস্তি
  • পূজামণ্ডপের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জানতে ও ব্যবস্থা নিতে ‘শারদীয় সুরক্ষা অ্যাপ’ চালু এনটিএমসির
  • দুর্গাপূজা যাতে শান্তিপূর্ণ না হতে পারে, সে জন্যই খাগড়াছড়ির ঘটনা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • খাগড়াছড়িতে আজও অবরোধ চলছে, স্থবির জনজীবন
  • খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তরণে কাজ করছে বিজিবি