আতঙ্কের বিষয়: ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে প্রবাল প্রাচীর
Published: 10th, August 2025 GMT
প্রকৃতি, পরিবেশের সবকিছুতেই প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে। কোনো কোনো প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রকৃতি থেকে চিরতরে হারিয়ে যাচ্ছে। এইতো গত এক বছরের মধ্যে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ থেকে বিপুল পরিমাণে প্রবাল হারিয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, গত এক বছরে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে জীবন্ত প্রবাল হারিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ মেরিন সায়েন্স- এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘‘২০১৭ সাল থেকে গ্রেট ব্যারিয়ার রিফে প্রবালের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছিলো। কিন্তু ২০২৪ সালে প্রবাল ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এবং হারিয়ে যাচ্ছে।’’
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, সমুদ্রতলেও তাপমাত্রা বেড়েছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে প্রবাল দুর্বল হয়ে পড়ছে। এর ফলে পৃথিবী আরও উত্তপ্ত হবে।
আরো পড়ুন:
দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: পার্বত্য উপদেষ্টা
দেনমোহরে গাছ, প্রশংসায় ভাসছেন সুকৃতি-আদনান দম্পতি
জানা যায়, উত্তর-পূর্ব অস্ট্রেলিয়া উপকূলে ৩ লাখ ৪৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে এই প্রবাল প্রাচীর। যদিও এখনও সেখানে যথেষ্ট প্রবালের স্তর আছে। কিন্তু যে হারে কমতে শুরু করেছে তা আতঙ্কের বিষয়।
অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড উপকূল বরাবর ১৫০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই প্রবাল প্রাচীরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়— উত্তর, মধ্য, দক্ষিণ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দক্ষিণ ভাগে থাকা প্রবাল প্রাচীর। এই অংশের তিন ভাগের এক ভাগ ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে।
এরপরেই মধ্য ভাগ। এখানে থাকা প্রবাল প্রাচীরের ১৪ শতাংশ ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে। চার ভাগের এক ভাগ অংশ ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে উত্তর ভাগে থাকা প্রবাল প্রাচীর।
ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৩-২৪ সালে প্রচণ্ড গরম পড়ার কারণে প্রবাল দুর্বল হয়ে পড়েছে। এবং ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। কিন্তু প্রবাল প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত হলে পৃথিবীতে তাপমাত্রা আরও বেড়ে যাবে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রক ত প রব ল প র চ র
এছাড়াও পড়ুন:
জগন্নাথের শিক্ষার্থী নূরনবী ক্যানসারে আক্রান্ত, ফুল বিক্রি করে সহায়তার উদ্যোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মীর নূরনবী কয়েক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন। তবে অর্থসংকটে বন্ধ রয়েছে তাঁর চিকিৎসা। এ সংকট সমাধানে নূরনবীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা। এ জন্য ক্যাম্পাসে ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। সেই অর্থ তুলে দেওয়া হবে নূরনবীর চিকিৎসায়।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হেঁটে হেঁটে শিক্ষার্থীদের কাছে ফুল বিক্রি করে নূরনবীর চিকিৎসা বাবদ অর্থ সংগ্রহ করতে দেখা যায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীদের। সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের চত্বরে টেবিল–চেয়ার পেতে ফুল বিক্রি করেন তাঁরা। এরপর শহীদ মিনার, কলা অনুষদ, সামাজিক অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের প্রাঙ্গণে হেঁটে হেঁটে শিক্ষার্থীদের কাছে ফুল বিক্রি করে নূরনবীর জন্য অর্থ সহায়তা নেওয়া হয়।
নূরনবী বর্তমানে স্নাতক চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। পরে বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু পড়াশোনায় হাল ছাড়েননি নূরনবী। অদম্য সাহস ও স্বপ্ন নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তি হন। প্রতিদিন সাভার থেকে বাসে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত ক্লাস করেন তিনি। এরই মধ্যে সাতটি সেমিস্টার শেষ করেছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ক্যানসার এখন নূরনবীর ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়েছে।
ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আল শাহরিয়ার বলেন, ‘সবার সহায়তা নূরনবীর জন্য নতুন জীবনের আলো নিয়ে আসতে পারবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণার কাজ করছি। বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালিকা লাগানো হয়েছে। সামনে আরও নতুন কিছু অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আসুন, মানবতার বন্ধনে আমরা সবাই এক হয়ে নূরনবীর পাশে দাঁড়াই।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকারের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘অনেকেই অনেকভাবে নূরনবীর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে। আমরা ভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহের চিন্তা করলাম। ফুলের বিনিময়ে অর্থ সাহায্যের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বেশ সাড়া পাচ্ছি। শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বেশ আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নূরনবীকে সহায়তা করা হবে কি না—জানতে চাইলে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক কে এ এম রিফাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রকল্যাণ দপ্তর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোনো বরাদ্দ নেই। এখানে যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটা শুধু দাপ্তরিক কাজে খরচ হয়। এখন নূরনবীর চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কনসার্ট আয়োজন করতে চেয়েছে তার সহপাঠীরা। সে ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা করব।’