দেশে চিকিৎসাকাজে প্রায় চার হাজার ধরনের সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হয়। এর ১০ শতাংশ দেশে তৈরি হয়, ৯০ শতাংশ আমদানি করা হয়। পরনির্ভরশীলতা কমাতে এই খাতকে পৃথক শিল্পের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তাঁরা বলেছেন, যথাযথ গুরুত্ব দিলে ওষুধের মতো চিকিৎসা যন্ত্রপাতি তৈরিতেও স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন সম্ভব।

আজ রোববার দুপুরে ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম খাতের বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এই খাতের উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন। এই খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফর মেডিকেল ডিভাইসেস অ্যান্ড সার্জিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স (বিএএমডিএসআইএমই) ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। রাজধানীর রমনা এলাকায় বিএএমডিএসআইএমই কার্যালয়ে এ সভা হয়।

মতবিনিময় সভায় বিএএমডিএসআইএমইর সভাপতি ও জেএমআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.

আবদুর রাজ্জাক বলেন, দেশে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির বাজার প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার। প্রায় চার হাজার রকমের চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম ব্যবহৃত হয়। প্রয়োজনের ১০ শতাংশ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম দেশের ১০ থেকে ১২টি কোম্পানি তৈরি করে। বাকি ৯০ শতাংশ ভারত, চীনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

ব্যবসায়ীরা বলেন, একসময় প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯০ শতাংশই আমদানি করা হতো। ১৯৮২ সালের ওষুধনীতি পরিস্থিতি পাল্টে দেয়। দেশ এখন ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। সরকারের নীতিসহায়তা পেলে প্রয়োজনের ৮০ শতাংশ যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম দেশেই তৈরি করা সম্ভব।

আপাতত সরকারের কাছে চারটি দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামকে পৃথক শিল্পের মর্যাদা দিতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নীতি, আইন তৈরি করতে হবে। এখনই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে এর জন্য পৃথক শাখা খুলে সেখানে একজন পরিচালক নিয়োগ দিতে পারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি যেসব সরঞ্জাম দেশে তৈরি হচ্ছে, সেগুলো বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ করতে হবে।

চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের জন্য পৃথক শিল্পাঞ্চল করা দরকার বলে মন্তব্য করেন এএনসি মেডিকেল ডিভাইস বিডি লিমিটেডের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওহেদুর রহমান।

ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা বলেন, খাতটি বেশ পেছনে পড়ে থাকার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, এখানে কোনো নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। দ্বিতীয়ত, চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম আমদানিকারকেরা বেশ জোটবদ্ধ এবং তারা নানাভাবে সরকারকে প্রভাবিত করে। তবে আশার কথা এই যে, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এই খাতকে সুরক্ষা দেওয়ার কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নিয়ে তরুণেরা বের হচ্ছে। একটি প্রতিষ্ঠান ৪০টি দেশে চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম রপ্তানি শুরু করেছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গেটওয়েল লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক মো. সাইদ হোসেন চৌধুরী ও এক্যুরা বায়োটেকনোলজি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ও সরঞ জ ম ব যবস য় এই খ ত আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

তবে, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক পতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমেছে।

আরো পড়ুন:

প্রথম প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল ও ইফাদ অটোসের মুনাফায় বড় উত্থান

ডিএসইতে সূচকের উত্থান, সিএসইতে পতন

আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকালে ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে, লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর থেকে সূচকের উত্থান দেখা যায়। লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। 

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪২.৮০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১০০০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩২২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮.৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১.৬৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৫.১১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৬.৮৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০০টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১১টির।

সিএসইতে ১৪ কোটি৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ