মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে পুত্রজায়ায় তারা বৈঠকে বসেছেন।

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে আজ সকাল ৮টার দিকে এক পোস্টে বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শুরুর আগে পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন প্রধান উপদেষ্টা। পুত্রজায়ায় পৌঁছানোর পর অধ্যাপক ইউনূসকে নিজ কার্যালয়ে স্বাগত জানান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। সেখানে কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার পরিচয় করিয়ে দেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

প্রধান উপদেষ্টা তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর পৌঁছান। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় অধ্যাপক ইউনূসকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি দুপুর ২টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

সফরকালে মোট পাঁচটি এমওইউ এবং তিনটি নোট অব এক্সচেঞ্জ সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, অধ্যাপক ইউনূসের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায়ও যোগ দেওয়ারও কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার এই সফরে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সঙ্গে রয়েছে। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন- পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.

তৌহিদ হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।

আগামী ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

ঢাকা/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিদায় দেওয়ার সময় গাড়ির ভেতর ঘুমানোর কথা বলেছিল’ 

রাজধানীর মৌচাকে ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পার্কিংয়ে থাকা একটি প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে উদ্ধার হওয়া দুই মরদেহের পরিচয় মিলেছে। তারা নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা। তারা হাসপাতালটিতে গিয়েছিলেন এক রোগীকে আনতে। প্রাইভেটকারটির মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ সৌরভ এ তথ্য জনান।

মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার রামনারায়ণপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ গোমাতলি দৌলতার বাড়ির মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে মো. মিজান এবং খিলপাড়া ইউনিয়নের লটপটিয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে মো. জাকির। তিনি প্রাইভেটকারটির চালক  ছিলেন।

আরো পড়ুন: মৌচাকে হাসপাতালের পার্কিংয়ে প্রাইভেটকারে ২ মরদেহ 

আরো পড়ুন:

পিয়াইন নদীতে নিখোঁজ বিজিবি সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিনশেড ঘর থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার 

জাকির ও মিজান বন্ধু বলে জানান প্রাইভেটকারের মালিক জোবায়ের আল মাহমুদ সৌরভ। মোবাইলে জোবায়ের জানান, তিনি তার স্ত্রীর বড় ভাইকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দিতে গত শনিবার রাতে ঢাকায় যান। এ সময় গাড়িতে জাকিরের সঙ্গে তার বন্ধু মিজানও ওঠেন। স্ত্রীর বড় ভাইকে বিমানবন্দরে নামিয়ে দেওয়ার পর গত রবিবার ভোরে বিমানবন্দর থেকে তারা গাড়ি নিয়ে মালিবাগ এলাকায় পৌঁছান।

এরপর জাকির তাকে মালিবাগ থেকে নোয়াখালীগামী একটি বাসে তুলে দেন। তারা হাসপাতালে যান রোগী আনতে। রোগী নিয়ে তাদের নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় যাওয়ার কথা ছিল।

জোবায়ের আল মাহমুদ বলেন, “বিদায় দেওয়ার সময় জাকির বলেছিলেন, বেলা ১১টার দিকে রোগীকে ছাড়পত্র দেবে, ততক্ষণ তারা দুইজন গাড়িতেই ঘুমাবেন। আমি পৌনে ১১টার দিকে জাকিরকে ফোন দিয়েও পাইনি। পরে রাত ৮টা পর্যন্ত আরো কয়েকবার ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছি, তিনি কল ধরেননি।”

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য মোবারক উল্লাহ বলেন, “মিজান আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তার কোনো শত্রু নেই। প্রায় ১০ বছর আগে তিনি মাটি ও বালুর ব্যবসা করতেন। অবিবাহিত ছিলেন। দুলাভাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় ৩০টি ডাব নিয়ে মিজান প্রাইভেটকারে করে তাকে দেখতে গিয়েছিলেন। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা আমরা বুঝতে পারছি না।” 

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রবিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গাড়িটি পার্কিংয়ে প্রবেশ করে। গেটে নিরাপত্তাকর্মীদের জিজ্ঞাসায় বলা হয়, গাড়িতে রোগী আছে। গাড়িটি বের না হওয়ায় গতকাল সোমবার নিরাপত্তাকর্মীরা গাড়ির কাছে গিয়ে ভেতরে দুইজনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

রমনা জোনের ডিসি মাসুদ আলম জানান, নিহতদের একজন জাকির, যিনি গাড়ির চালক ছিলেন। তিনি ড্রাইভারের সিটে মৃত অবস্থায় ছিলেন, আরেকজন মিজান তার পাশে ছিলেন। তারা একই এলাকার বাসিন্দা এবং এক স্বজনকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন।

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে হত্যার আশঙ্কা খুব কম, তবে কোনো কিছু উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। সঠিক কারণ জানতে বিশেষজ্ঞ মতামতের অপেক্ষা করা হচ্ছে।

ডিসি মাসুদ আলম জানান, বেজমেন্টে সাফোকেশন ও প্রচণ্ড গরমের কারণে মরদেহে পচন ধরে। গাড়িটি টয়োটা ফিল্ডার-এক্স মডেলের, মালিক জোবায়ের আহমেদ সৌরভ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

চাটখিল থানার ওসি মোহাম্মদ ফিরোজ আহমেদ চৌধুরী জানান, নিহত দুইজনের বাড়ি চাটখিল উপজেলায়। গাড়ির মালিক সৌরভের বাড়িও চাটখিল। আমরা তথ্যসহ সব বিবরণ রমনা থানায় পাঠানো হয়েছে, তারা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ঢাকা/সুজন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ