চীনে ৯০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা ফৌজদারি আইন সম্পর্কে জানতে নিয়মিত আইনের বই ও সাময়িকী পড়ছেন, প্রতিদিন যাচ্ছেন আদালতে, খতিয়ে দেখছেন মামলাসংক্রান্ত নথিপত্র। চীনের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম উইবোতে সম্প্রতি এমন একটি ঘটনা আলোড়ন তুলেছে।

চীনা ওই বৃদ্ধার পারিবারিক নাম হে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে চাঁদাবাজির বহুল আলোচিত এক মামলায় গ্রেপ্তার হন হের ছেলে লিন। লিনের বয়স ৫৭ বছর। লিনের বিরুদ্ধে মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় উদ্যোক্তা হুয়াং। চাঁদাবাজির অঙ্ক শুনলে যে কারও চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে।

লিনের বিরুদ্ধে হুয়াং ১১ কোটি ৭০ লাখ ইউয়ান চাঁদাবাজির অভিযোগে ওই মামলা করেছেন।

চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের একটি আদালতে ওই মামলার শুনানি চলছে। হে তাঁর ছেলের পক্ষে আদালতে মামলা লড়ছেন। এ মামলার সর্বশেষ শুনানি হয় গত ৩০ জুলাই।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে এ–সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পুলিশ ছেলেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার পর ভেঙে পড়েছিলেন হে। প্রতিনিয়ত তাঁর ছেলের কথা মনে পড়ত। এ অবস্থায় চুপচাপ চোখের পানি ফেলে দিন পার না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ছেলের পাশে দাঁড়াতে গত বছর তিনি আইন পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।

যদিও হের এই সিদ্ধান্তে পরিবার থেকে শুরুতে প্রবল আপত্তি জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন এবং ছেলের পক্ষে আদালতে লড়াইয়ের প্রস্তুত হতে শুরু করেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫

ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।

সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।

জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।

সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।

সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ