সরিনা খাতুন যেন ‘আসমানী’রই প্রতিচ্ছবি
Published: 12th, August 2025 GMT
কবিতার সেই আসমানীদের হয়তো রসুলপুরে গিয়ে বাস্তবে দেখা সম্ভব হবে না। তবে ছেঁড়া পলিথিনে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করা সরিনা খাতুনকে (৫০) দেখলে মনে হবে যেন আসমানীরই আরেক প্রতিচ্ছবি।
হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের গুদাম মাঠে পরিত্যক্ত রেলের জমিতে বসবাস করেন সরিনা খাতুন। তার ঘরের সামনে স্তুপ করে রাখা লাকড়ি (জ্বালানি কাঠ)। এই লাকড়ি বিক্রির টাকাতেই জীবন চলে তার।
রাস্তার পাশে খাল লাগোয়া একটি স্থানে কয়েকটি বাঁশের খুঁটির সঙ্গে পুরনো টিন ও পলিথিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছে থাকার ঘর। পলিথিনের নিচে মাটিতে প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে তৈরি হয়েছে ঘুমানোর জায়গা। তারই অদূরে রান্নার চুলা। একেবারে বসবাসের অযোগ্য। তারপরও এরই মধ্যে কোনোমতে টেনেটুনে জীবন পার করছেন তিনি।
সরিনা খাতুন জানান, তার বাবা শেখ আব্দুল হালিম শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে এখানে তাদের বসাবস। বাবা হারান ছোট বেলায়, মাও নেই। স্বামী নোয়াজ আলী মেকারও প্রায় ১২ বছর আগে মারা গেছেন। সেই সময় থেকে একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিনি। মানুষের বাড়িতে কাজ করে দুই সন্তানকে বড় করেছেন। এক ছেলে-এক মেয়ে, দুজনেরই সংসার হয়েছে। এখন আর মানুষের বাড়িতে কাজ করতে পারেন না। তাই জীবিকা নির্বাহে বেছে নিয়েছেন লাকড়ি বিক্রির পেশা।
রঘুনন্দন পাহাড়ি এলাকা থেকে পরিত্যক্ত লাকড়ি সংগ্রহ করেন সরিনা। নিজ ঝুপড়ি ঘরের সামনে বসে সামান্য লাভে সেই লাকড়ি বিক্রি করে দৈনিক একশ’ থেকে দুইশ’ টাকা আয় হয়। তাতেই চলে সংসার। লাকড়ি বিক্রি না হলে বাজার হয় না, চুলায় জ্বলে না আগুন। অনাহারেই থাকতে হয়। কোনো সরকারি সহায়তাও পান না তিনি। পুরনো টিনের জোড়াতালি আর পলিথিনে তৈরি ঝুপড়ি ঘরে রোদ-বৃষ্টির সঙ্গে লড়াই করে বসবাস করতে হয় প্রতিনিয়ত।
ছেলের কথা জিজ্ঞেস করলে সে ব্যাপারে কথা বলতে চাননি তিনি। বিয়ের পর নিজের সংসার নিয়েই চলা কঠিন হয়ে পড়েছে ছেলের। তাকে কীভাবে দেখবে? এটুকু বলেই থেমে যান তিনি। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার ভোটার হলেও বিধবা ভাতার কার্ড তার ভাগ্যে জোটেনি।
বর্তমান সরকারের কাছে তার চাওয়া- বসবাসের জন্য একটি ছোট ঘর আর ব্যবসার জন্য কিছু পুঁজি। এছাড়া বিধবা ভাতার একটি কার্ডও চান তিনি। এসব পেলে বাকি জীবনটা হয়তো কিছুটা ভালোভাবে কাটাতে পারবেন এই সংগ্রামী নারী।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মো.
উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আ স ম আফজল আলী বলেন, “আমি নিঃস্বার্থভাবে তৃণমূল মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছি। এজন্য লোকজন ভোট দিয়ে আমাকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছিল। বর্তমানে দায়িত্বে না থাকলেও ঘরে বসে নেই। তৃণমূল মানুষের পাশে আছি। এখানে অসহায় সরিনা খাতুনের কষ্টের কথা জেনেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত তার জন্য কিছু একটা করতে চাই।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পল থ ন বসব স
এছাড়াও পড়ুন:
পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।
তবে, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক পতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমেছে।
আরো পড়ুন:
প্রথম প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল ও ইফাদ অটোসের মুনাফায় বড় উত্থান
ডিএসইতে সূচকের উত্থান, সিএসইতে পতন
আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকালে ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে, লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর থেকে সূচকের উত্থান দেখা যায়। লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪২.৮০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১০০০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩২২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬টির।
এদিন ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮.৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১.৬৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৫.১১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৬.৮৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০০টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১১টির।
সিএসইতে ১৪ কোটি৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঢাকা/এনটি/রফিক