সাত দিন পর বন্ধ করা হলো কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট
Published: 12th, August 2025 GMT
টানা সাত দিন পানি ছাড়ার পর রাঙামাটির কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট (জলকপাট) বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হ্রদের পানি কমায় আজ মঙ্গলবার সকাল আটটার দিকে এসব জলকপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হ্রদের পানি বাড়ায় ৫ আগস্ট বাঁধ খুলে দেওয়া হয়েছিল।
কর্ণফুলী জলবিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি না হওয়ায় হ্রদের পানি আর বাড়ছে না। কাপ্তাই হ্রদের বাঁধের পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট। তবে সম্প্রতি বৃষ্টিতে পানি ১০৯ দশমিক ৮৩ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় উঠেছিল। হ্রদটিতে পানির ১০৮ ফুট উচ্চতাকে বিপৎসীমা হিসেবে ধরা হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির কর্মকর্তারা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে বাঁধের ১৬টি জলকপাট সাড়ে তিন ফুট পর্যন্ত খোলা হয়। এরপর ধীরে ধীরে পানি কমতে থাকে। আজ সকাল ৭টায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ছিল ১০৭ দশমিক ৬ ফুট। গতকাল রাত ৯টায় ছিল ১০৭ দশমিক ৩৪ ফুট।
কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ায় রাঙামাটি জেলার অন্তত আড়াই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। অনেকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আশ্রয় নেন। রাঙামাটির বিভিন্ন সড়কও পানির নিচে তলিয়ে যায়। এখনো জেলার বেশ কিছু সড়কে পানি রয়েছে। এ ছাড়া রাঙামাটির পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ ঝুলন্ত সেতু আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।
জানতে চাইলে রাঙামাটি শহরের বিহারপুর এলাকার বাসিন্দা শিপন চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, তলিয়ে যাওয়া বাড়িঘর থেকে পানি সরে গেছে। তবে যাতায়াতের সড়ক থেকে এখনো পুরোপুরি পানি সরেনি।
জানতে চাইলে কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জলকপ ট
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটিতে পানিবন্দি মানুষ ২৩ হাজার
ধীরে ধীরে কমছে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর। তবে, এখনো তা বিপৎসীমায় রয়েছে। শনিবার (৯ আগস্ট) পানি কমতে থাকায় কৃত্রিম এই হ্রদে থাকা জলকপাটগুলো সাড়ে তিন ফুট থেকে কমিয়ে তিন ফুট খোলা রাখা হয়। ফলে প্রতি সেকেন্ড ৫৮ হাজার কিউসেক পানি কর্নফুলী নদীতে পড়ছে। বর্তমানে রাঙামাটি জেলায় পানিবন্দি অবস্থায় আছেন ২৩ হাজার ১২০ জন মানুষ।
এদিকে, কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে তৃতীয় দিনের মতো শনিবার বন্ধ ছিল চন্দ্রঘোণা-রাইখালী ফেরি চলাচল। এ কারণে রাঙামাটি জেলা সদরের সঙ্গে রাজস্থলী উপজেলা ও বান্দরবান জেলা সদরের যোগাযোগ বন্ধ ছিল। দুর্ভোগে পড়েন এই রুটে চলাচলকারীরা।
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে পানির স্তর বাড়তে থাকে কাপ্তাই হ্রদে। এই বছর সর্বোচ্চ পানির স্তর ১০৮.৮৪ এমএসএল রেকর্ড করা হয়। এ কারণে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট সাড়ে তিন ফুট খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত হ্রদে পানির স্তর ছিল ১০৮.৪০ এমএসএল। ছয় ইঞ্চি কমিয়ে বর্তমানে জলকপাটগুলো তিন ফুট খোলা রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
রাঙামাটিতে ২০ ইউনিয়নে পানিবন্দি ১৮ হাজার মানুষ
কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি, বাঁধের গেট খুলল সাড়ে ৩ ফুট
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গত শুক্রবার (৮ আগস্ট) পর্যন্ত জেলায় ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি ছিলেন। শনিবার সেই সংখ্যা বেড়ে ২৩ হাজার ১২০ জন হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, হ্রদে পানি কমতে শুরু করলেও কাচালং এবং চেঙ্গী নদীর পানি উপচে কিছু এলাকায় প্রবেশ করায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।
পানি কমতে থাকায় সীমান্তবর্তী উপজেলা বাঘাইছড়িতে মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে এখনো পুরোপুরি পানি কমেনি লংগদু, বরকল ও রাঙামাটি সদরের আসামবস্তি, পুরানপাড়া, শান্তি নগরের নিম্নাঞ্চলে। বৃষ্টি না হলে দ্রুত পানি কমার আশা
স্থানীয়দের।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, বন্যার্তদের জন্য ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রায় ১৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো ২ হাজার ৮৯৪ জন মানুষ অবস্থান করছেন। জেলায় বন্যার পানিতে ঘরবাড়ি ৮৩৭টি, ২৩৯ হেক্টর ফসলি জমি, ২০০টি গবাদি পশু, ৫৯টি মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রুহুল আমিন জানান, বৃষ্টি কমে আসায় কমছে হ্রদের পানি। শনিবার সকালে হ্রদে পানি ছিলো ১০৮.৪০ এমএসএল। পানিবন্দি মানুষের জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে ১৩৩৬ প্যাকেট শুকনো খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
ঢাকা/শংকর/মাসুদ