আবারও সেই গোলের ‘গাড়ি’ নিয়ে প্রস্তুত বার্সেলোনা
Published: 12th, August 2025 GMT
গোল ফুটবলে চরম আনন্দের এক মুহূর্ত। দুই দলের ২২ ফুটবলারের লক্ষ্য থাকে এটাই—প্রতিপক্ষের জালে কোনোভাবে বলটা জড়ানো। সেই গোল ঠেকাতে কৌশলেরও কমতি নেই। ডিফেন্ডাররা এমন কোনো চেষ্টা নেই, যা করেন না, যেন গোল দিতে না পারলে ক্ষতি নেই কিন্তু গোল হজম করা যাবে না!
তবে গোল ঠেকানোর এই চেষ্টা সব সময় সফল হয় না। শেষ পর্যন্ত ফুটবল মানেই যে গোল। হোক তা কম বা বেশি, কিন্তু গোল করেই তো জিততে হয়। আর গোলের খেলায় সাম্প্রতিক কালে একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠাকারী দল বার্সেলোনা।
হ্যান্সি ফ্লিকের অধীনে বদলে যাওয়া বার্সেলোনা গোল করাকে এখন ছেলের হাতে হাতের মোয়া বানিয়ে ছেড়েছে। ব্যাপারটা এমন যে এলাম দেখলাম আর গোল করলাম! সর্বশেষ মৌসুমে তো বটেই সাম্প্রতিক প্রাক্–মৌসুমেও গোলের বন্যা বইয়ে দিয়েছে কাতালুনিয়ার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি।
গত মৌসুম দিয়েই শুরু করা যাক। ২০২৪–২৫ মৌসুমে ফ্লিক যখন বার্সার দায়িত্ব নেন, তখন অনেকেরই সন্দেহ ছিল, জার্মান কোচের অধীনে বার্সেলোনা কতটা সফল হবে। কেউ কেউ আগেভাগেই ফ্লিকের বিদায়ী এপিটাফও লিখে রেখেছিলেন। কিন্তু জার্মান এই কোচ ডাগআউটে এসেই আমূল বদলে দেন বার্সাকে। পুরো দলটিকেই তিনি পরিণত করেন আশ্চর্য এক গোল মেশিনে।
আরও পড়ুনবার্সেলোনায় রিয়াল মাদ্রিদ যেভাবে ‘হালি মাদ্রিদ’১২ মে ২০২৫দলের ফরোয়ার্ড লাইনের প্রত্যেক ফুটবলার ফ্লিক হাতে ধরে কার্যকর স্কোরারে পরিণত করেন। এই চিত্র যে শুধু লা লিগাতে দেখা গেছে তা নয়, বরং প্রতিটি প্রতিযোগিতায় গোল করায় এককভাবে নিজেদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করে বার্সা। গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৬০ ম্যাচ খেলে বার্সা গোল করেছে ১৭৪টি। ম্যাচ প্রতি গোল প্রায় তিনটি (২.
লিগে বার্সেলোনা সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয় পেয়েছে গত বছরের ৩১ আগস্ট রিয়াল ভায়াদোলিদের বিপক্ষে। ৭–০ গোলে জেতে বার্সা। এরপর ৭ জানুয়ারি ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে বার্সা জিতেছিল ৭–১ গোলে। আর সব মিলিয়ে ৪ বা তার বেশি গোল করে বার্সা জিতেছে ১৩ ম্যাচ। মৌসুমজুড়ে বার্সার গোলের উৎসব কেমন ছিল, সেটা বোঝা যাবে আরেকটি পরিসংখ্যানে। লিগে দ্বিতীয় রিয়াল মাদ্রিদের গোল সংখ্যা ৭৮। অর্থাৎ বার্সার সমান ম্যাচ খেলে তাদের চেয়ে ২৪ গোল কম করেছে রিয়াল।
চ্যাম্পিয়নস লিগেও দেখা গেছে একই দৃশ্যপট। এই প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে হেরে বিদায় নিলেও গোল করায় বার্সার ধারেকাছেও ছিল না অন্যরা। প্রতিযোগিতায় ১৪ ম্যাচ খেলে বার্সা গোল করে ৪৩টি, ম্যাচপ্রতি গোল তিনটির বেশি। ৩৮ গোল করে এ তালিকার দুই নম্বরে চ্যাম্পিয়ন পিএসজি। বার্সার চেয়ে ৫ গোল কম করা পিএসজি ৩ ম্যাচ বেশি খেলেছে।
বার্সার গোল করার এই ধারা দেখা গেছে কোপা দেল রে এবং সুপার কোপাতেও। কোপা দেল রেতে ৬ ম্যাচ খেলে বার্সার গোল ২২টি। ম্যাচপ্রতি গোল ৩.৬৬। আর স্প্যানিশ সুপার কাপে দুই ম্যাচে বার্সার গোল ৭টি, এখানেও ম্যাচ প্রতি গোল সাড়ে তিনটি করে। গোলের অবিশ্বাস্য এক পরিসংখ্যানই বটে।
আরও পড়ুনযে ক্লাসিকোয় বার্সার কাছে ৬৩ গোল খেয়েছে রিয়াল০৭ মার্চ ২০২৫গত মৌসুমে অ্যাটাকিং থার্ডে বার্সা ছিল অনেকটা শিকারি নেকড়ের মতো। এমনকি তাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদও। ২০২৪–২৫ মৌসুমে এল ক্লাসিকোয় রিয়াল–বার্সা মুখোমুখি হয়েছিল চার ম্যাচে। এই চার ম্যাচে রিয়ালের জালে বার্সা বল জড়িয়েছে ১৬ বার। ম্যাচপ্রতি গোল সংখ্যা ৪টি! খেলাধুলার তথ্য–উপাত্ত নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান ‘অপ্টা’ জানিয়েছে, এক মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের জালে কোনো দলের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড এটাই। বলা বাহুল্য, এই চার ম্যাচের প্রতিটিতে জিতেছে বার্সাই।
বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিকউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গত ম স ম গ ল কর ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে চান মনন
‘আপনার জীবনে দারুণ এক মুহূর্ত এটা। একটা পুরস্কার জিতলেন, যে পুরস্কার দাবার চৌকোনা বোর্ডে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি’—কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলেন মনন রেজা। উত্তর দিলেন খুবই ছোট্ট করে, ‘জি।’
এরপর তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো গত বছর তাঁর অর্জন ও সাফল্যের কথা। ২০২৪ সালে জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের ৪৩ বছরের পুরোনো রেকর্ড ভেঙে হয়েছেন দেশের সর্বকনিষ্ঠ আন্তর্জাতিক মাস্টার। ওপর–নিচ মাথা ঝাঁকিয়ে এবার বললেন, ‘হুম।’
এসবই মনন করেছেন ১৫ বছরে পা রাখার আগে। এখনো তাঁর সামনে পুরো জীবন পড়ে আছে—দাবার বোর্ডে মনন আরও কত কী করবেন ভবিষ্যতের সেই জীবনে, এমন আলোচনা দেশের দাবার অঙ্গনে। সেই সম্ভাবনার কথা ভেবেই মননকে সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার ২০২৪–এর বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
মননের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী আর এখন কীই–বা চান?’ মনে হচ্ছিল, আন্তর্জাতিক মাস্টার হওয়া মনন নিশ্চয়ই গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার স্বপ্নের কথাই বলবেন, যেটা থেকে খুব বেশি দূরেও নন তিনি। কিন্তু মনন ওই প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘আমি তো অনেক কিছুই করতে চাই। কিন্তু চাইলেই তো আর পাওয়া যাবে না। এর জন্য পরিশ্রম করতে হবে। লাগবে অবকাঠামোগত সহযোগিতাও।’
মননের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, পাশে বসে ছিলেন অন্য এক খেলার বর্ষীয়ান এক ক্রীড়াবিদ। তিনি একটু অবাক হয়েই বলে উঠলেন, ‘ছেলেটা ওর বয়সের চেয়ে বড়!’
মনন রেজার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ২০০৪ সালের উদীয়মান রাসেল মাহমুদ জিমি