টাকা না পেয়ে ইয়াবায় ফাঁসানোর মামলা, দুই পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত
Published: 12th, August 2025 GMT
চট্টগ্রামে দুই লাখ টাকা না পেয়ে এক ব্যক্তিকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার পর আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের বন্দর অঞ্চলের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মহসিন ও কনস্টেবল মো. আজাদ।
জানতে চাইলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) মো.
এর আগে গতকাল সোমবার অতিরিক্ত চিফ চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে মামলাটি করেন নগরের ডবলমুরিং এলাকার বাসিন্দা সাবিনা আক্তার। আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জানান বাদীর আইনজীবী আফজাল হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২২ জুলাই বাদীর ভাই জাকির হোসেনকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু টাকা দিতে পারবে না বলায় তাঁকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে বাদী খবর পেয়ে নগরের মনসুরাবাদ ডিবি কার্যালয়ে যান। সেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বাদীকে বলেন, তাঁর ভাইয়ের কাছে তিন হাজার ইয়াবা পেয়েছেন। ১ লাখ টাকা দিলে ৪০০ ইয়াবা দিয়ে মামলা দেবেন। একেবারে ছেড়ে দিতে হলে দুই লাখ টাকা লাগবে। পরে বাদী তাঁর ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি আলাপ করেন। কিন্তু এত টাকা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় বিষয়টি ডিবির দুই পুলিশ সদস্যকে জানানো হয়। টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা ৪০০ ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে পরদিন ২৩ জুলাই ডবলমুরিং থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, জাকির ২০১৯ সালে নগরের সদরঘাট থানায় হওয়া একটি মাদক মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। তিনি পেশায় বাবুর্চি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত