অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, খাদের কিনারা থেকে ফিরে এসেছি। অর্থনীতি এখনো নিরাপদ পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছায়নি। স্বস্তি এসেছে অর্থনীতিতে, কিন্তু এখনো তৈরি হয়নি আত্মতুষ্টির জায়গা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের অর্থনীতি নিয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশকে একটি সমতাভিত্তিক ও কল্যাণমুখী রাষ্ট্র করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার। অর্থনৈতিক খাতের বড় সংস্কারগুলো কিছুটা করে যেতে পারব আমরা। বাকিটা নির্বাচিত সরকার এসে করবে। সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা এখন হতাশাজনক নয়। এমন কিছু আমরা করে যেতে চাই, যাতে পরের সরকার এসে বলতে না পারে আগের সরকারের সব ভুল ছিল।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী, অর্থসচিব মো.

খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘অর্থনীতিকে আমরা এসে যে অবস্থায় পেয়েছি, এখন তা মোটামুটি সন্তোষজনক পর্যায়ে এসেছে। আমরা এসে দেখেছি অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাব, মুদ্রা পাচার। আমরা বলি অর্থনীতি খাদের কিনারে ছিল। অনেকেই বলেন আইসিইউতে ছিল।’ আগের সরকারের সময়ে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেখান থেকে উন্নতি করতে সরকার কাজ করছে। যেমন গত বছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ শতাংশ। এ বছরের জুলাইয়ে তা কমে ৮ শতাংশের ঘরে এসেছে। শিগগিরই তা ৬ শতাংশে নেমে আসবে। দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারা থেকে আইসিইউ হয়ে এখন কেবিনে ফিরছে, এটি কবে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি এখনো কেবিনে ফেরার মতো অবস্থায় নেই। আর গরিব দেশের অর্থনীতি কেবিনে ফিরবে না। পেয়িং বেড বা ওয়ার্ডে ফিরবে, তারপর বাড়ি ফিরবে।’ অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির মধ্যেই দেশের অর্থনীতি ওয়ার্ডে ফেরার মতো সুস্থ অবস্থায় পৌঁছাবে।’

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে সরকার সব প্রক্রিয়া শেষ করছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এ জন্য গঠিত টাস্কফোর্স কাজ করছে। কারা অর্থ পাচার করেছে, সেটি চিহ্নিত করা হচ্ছে। আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে দেশের মধ্যে দুর্নীতির টাকা ফেরত আনা যত সহজ, বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা তত সহজ নয়।

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক বছরের মধ্যে একের পর এক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, রিজার্ভ সংকট, বৈদেশিক বিনিয়োগের ধীরগতি ইত্যাদি। তবে ধাপে ধাপে বিভিন্ন নীতিমালা করা হয়েছে। সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে ফিরছে।

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার গত অর্থবছরে ছিল, যেখানে ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশের মতো, চলতি অর্থবছর শেষে তা ৫ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হতে পারে বলে মনে করেন সালেহউদ্দিন আহমেদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র বছর র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে শ্বশুড় বাড়ির সন্ত্রাসী হামলায় মা ও ছেলে জখম  

বন্দরে পারিবারিক কলহের জের ধরে প্রতিপক্ষ শ^শুর বাড়ির সন্ত্রাসী হামলায় মা ও ছেলে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ওই সময় হামলাকারিরা বসত ঘরে অনাধিকার ভাবে প্রবেশ করে ঘরের ওয়ারড্রপে রক্ষিত নগদ ২ লাখ টাকা ও আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।

 সন্ত্রাসী হামলায় আহতরা হলো- মা সেলিনা বেগম (৫৫) ও ছেলে সেলিম (৩০)। স্থানীয়রা আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে  কর্তব্যরত চিকিৎসক সেলিমকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে সে সাথে তার মা আহত সেলিনা বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য  ঢামেক হাসপাতালে রেফার্ড করে।

এ ব্যাপারে আহত জামাতা সেলিম মিয়া বাদী হয়ে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার রাতেই হামলাকারি শশুড়  নান্টু মোল্লা ও তার ৩ সন্ত্রাসী ছেলে জুয়েল, মেহেদী, সোহাগ, স্ত্রী নিশী, শাশুড়ী পাখী, তন্নী ও মহনাকে আসামী করে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

এর আগে গত রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় বন্দর থানার সোনাকান্দা এনায়েতনগরস্থ জালাল মিয়ার বসত বাড়ি সামনে এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জানা গেছে, গত রোববার সন্ধ্যা পারিবারিক কলহের জের ধরে বিবাদী শশুড়  নান্টু মোল্লা ও তার ৩ সন্ত্রাসী ছেলে জুয়েল, মেহেদী, সোহাগ, স্ত্রী নিশী, শাশুড়ী পাখী, তন্নী ও মহনাগং দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জামাতা সেলিমের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়।

ওই সময় হামলাকারি মেহেদী সেলিমের গালের বাম পাশে সজোরে কামড় মেরে রক্তাক্ত জখম করে। এ ছাড়াও শশুড় নান্টু মোল্লা, জুয়েল, সোহাগ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য সেলিনা বেগমের মাথায়  এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে জখম করে

এ ছাড়াও অন্যান্য বিবাদী নিশী,তন্নী, মহনা লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে উল্লেখিত টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ