ভারতে আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়: সুপ্রিম কোর্ট
Published: 12th, August 2025 GMT
ভারতের বিহার রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানালেন, আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। নথির ভিত্তিতে নাগরিকত্ব আলাদা করে যাচাই করা প্রয়োজন।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে এসআইআর–সংক্রান্ত একগুচ্ছ মামলার শুনানি চলছে। আজ মঙ্গলবার সেই শুনানির সময় বিচারপতি সূর্যকান্ত এ মন্তব্য করে বলেন, আধার আইনের ৯ নম্বর ধারাতেই সে কথা বলা আছে।
আজ মঙ্গলবার বোম্বে হাইকোর্টেও এক মামলায় বিচারপতি অমিত বোরকার এ মন্তব্য করে বলেন, আধার, প্যান বা ভোটার কার্ড থাকলেই কোনো ব্যক্তি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি জানাতে পারেন না। এই নথিগুলো শুধু পরিষেবা পাওয়া ও শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।
বোম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবু আবদুর রউফ নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে তিনি ভুয়া নথি দেখিয়ে পাসপোর্ট, আধার ও প্যান কার্ড পেয়েছিলেন। গত বছর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। হাইকোর্ট তাঁর জামিন বাতিল করার সময় আজ মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন।
বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় আধার, ভোটার ও রেশন কার্ড গ্রাহ্য করার পরামর্শ ইসিকে দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। ইসি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এই কার্ডগুলো সম্পর্কে নিজেদের আপত্তির কথা জানায়। ইসি জানিয়েছিল, আধার নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ইসির দাবিই যথার্থ মেনে নিল। বিচারপতি সূর্যকান্তর এই পর্যবেক্ষণ মামলাকারীদের কাছে এক বড় ধাক্কা।
মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি শুনানিতে বলেন, নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা ইসির কাজ নয়। এ ছাড়া নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে এসআইআর শুরু করে তারা লাখ লাখ ভোটারের নাম বাদ দিতে পারে না।
আইনজীবী কপিল সিব্বাল বলেন, এভাবে সংশোধনের জন্য লাখ লাখ ভোটারের নাম বাদ যাবে। তিনি বলেন, ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম উঠেছিল, তাঁদেরও নতুন করে ফর্ম ভরতে বাধ্য করা হচ্ছে। সেই তালিকায় নাম থাকা যাঁদের ঠিকানা পরিবর্তন হয়নি, নতুন করে ফর্ম না ভরলে তাঁদের নামও বাদ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বেশ কিছু উদাহরণ দেন, যেখানে জীবিত ব্যক্তিদের মৃত ও মৃতদের জীবিত দেখানো হয়েছে।
শুনানির সময় বিচারপতিরা স্বীকার করেন, এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। আগামীকাল বুধবারও শুনানি চলবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাইকে বাঁচাতে বান্ধবীকে ফাঁসানোর অভিযোগ
পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঘুমন্ত অবস্থায় বান্ধবীর ছবি তুলেছিলেন ভাই। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানালে ভাইকে বাঁচাতে উল্টো বান্ধবীর নামে মিথ্যা চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তানিয়া হক নামের এক নারীর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও চুরির ঘটনার কোনো তদন্ত ছাড়াই মামলা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা জজকোর্টের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল।
পাবনা সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালত ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা সানিমুনকে জামিন দিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রাসেল বলেন, “আমার মক্কেল ইফফাত মোকাররমা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতায় পেশায় নিয়োজিত। তিনি একজন সম্মানিত লোক। মামলার বাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের কারণে তার বান্ধবীর বাসায় গিয়েছিলেন এবং একসঙ্গে ঘোরাঘুরির পর যখন রাত্রীযাপন করছিলেন সেই সময়ে বাদীর ভাই ইফফাত মোকাররমার ছবি তুলেছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান এবং ছবিগুলো দেখানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরেরদিন সকালে আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলে ইফফাত মোকাররমা ঢাকায় চলে যান এবং সেখানে জিডি করেন। কিন্তু এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো ইফফাত মোকাররমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চুরির মামলা দায়ের করেন তার বান্ধবী।”
তিনি আরো বলেন, “বাদী তানিয়া হক উল্লেখ করেছেন ২৬ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে যা তিনি তার শরীরে পড়ে তার বান্ধবীর সঙ্গে ঘুড়ে বেড়িয়েছিলেন। কিন্তু ওইদিনের ঘোরাঘুরির ছবিতে তার শরীরে কোনো স্বর্ণালঙ্কার ছিল না। এছাড়াও ঘটনার দুইদিনের মাথায় যেভাবে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে তাতে বোঝা যায় কোনো তদন্ত ছাড়াই থানা কোনো পক্ষ থেকে প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেছেন।”
ভুক্তভোগী নারী ইফফাত মোকাররমা বলেন, “এই মামলার নূন্যতম প্রমাণ নেই। আমি যে একজন শিক্ষক হিসেবে আমার ছাত্রদের সামনে দাঁড়াবো সেই অবস্থাও তারা আমাকে রাখেনি। আমার সন্তানসহ পুরো পরিবার সামাজিকভাবে হেয় পতিপন্ন হচ্ছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
এ বিষয়ে মামলার বাদীর তানিয়া হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করে ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, “উনি (আইনজীবী) উনার মক্কেলের জন্য এসব কথা বলতেই পারেন। উনার মক্কেলকে সুবিধা দেওয়ার জন্য এসব অভিযোগ করেছেন। কিন্তু ঘটনার তদন্ত করে এবং আইনানুগভাবেই মামলা দায়ের হয়েছে, যা এখনও তদন্ত চলছে।”
ঢাকা/শাহীন/এস