ভারতের বিহার রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানালেন, আধার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। নথির ভিত্তিতে নাগরিকত্ব আলাদা করে যাচাই করা প্রয়োজন।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে এসআইআর–সংক্রান্ত একগুচ্ছ মামলার শুনানি চলছে। আজ মঙ্গলবার সেই শুনানির সময় বিচারপতি সূর্যকান্ত এ মন্তব্য করে বলেন, আধার আইনের ৯ নম্বর ধারাতেই সে কথা বলা আছে।

আজ মঙ্গলবার বোম্বে হাইকোর্টেও এক মামলায় বিচারপতি অমিত বোরকার এ মন্তব্য করে বলেন, আধার, প্যান বা ভোটার কার্ড থাকলেই কোনো ব্যক্তি নিজেকে ভারতীয় নাগরিক বলে দাবি জানাতে পারেন না। এই নথিগুলো শুধু পরিষেবা পাওয়া ও শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে পারে।

বোম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবু আবদুর রউফ নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে তিনি ভুয়া নথি দেখিয়ে পাসপোর্ট, আধার ও প্যান কার্ড পেয়েছিলেন। গত বছর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। হাইকোর্ট তাঁর জামিন বাতিল করার সময় আজ মঙ্গলবার এ মন্তব্য করেন।

বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় আধার, ভোটার ও রেশন কার্ড গ্রাহ্য করার পরামর্শ ইসিকে দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। ইসি সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে এই কার্ডগুলো সম্পর্কে নিজেদের আপত্তির কথা জানায়। ইসি জানিয়েছিল, আধার নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ইসির দাবিই যথার্থ মেনে নিল। বিচারপতি সূর্যকান্তর এই পর্যবেক্ষণ মামলাকারীদের কাছে এক বড় ধাক্কা।

মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি শুনানিতে বলেন, নাগরিকত্ব নির্ধারণ করা ইসির কাজ নয়। এ ছাড়া নির্বাচনের মাত্র দুই মাস আগে এসআইআর শুরু করে তারা লাখ লাখ ভোটারের নাম বাদ দিতে পারে না।

আইনজীবী কপিল সিব্বাল বলেন, এভাবে সংশোধনের জন্য লাখ লাখ ভোটারের নাম বাদ যাবে। তিনি বলেন, ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম উঠেছিল, তাঁদেরও নতুন করে ফর্ম ভরতে বাধ্য করা হচ্ছে। সেই তালিকায় নাম থাকা যাঁদের ঠিকানা পরিবর্তন হয়নি, নতুন করে ফর্ম না ভরলে তাঁদের নামও বাদ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বেশ কিছু উদাহরণ দেন, যেখানে জীবিত ব্যক্তিদের মৃত ও মৃতদের জীবিত দেখানো হয়েছে।

শুনানির সময় বিচারপতিরা স্বীকার করেন, এ ক্ষেত্রে বিশ্বাসের ঘাটতি রয়েছে। আগামীকাল বুধবারও শুনানি চলবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব চ রপত র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি

ব্যবসায় অংশীদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৭ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ করা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার’ অভিযোগের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তার ভাই আলিসান চৌধুরী। 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক আফরোজা তানিয়া শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মেহজাবীন চৌধুরীর আইনজীবী তুহিন হাওলাদার। 

আরো পড়ুন:

আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন চৌধুরী

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে যা বললেন মেহজাবীন

সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে মেহজাবীন চৌধুরী তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে এ মামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন এই অভিনেত্রী।    

মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “একজন অজানা ব্যক্তি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আমার ও আমার ১৯ বছর বয়সি ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত নয় মাসে আমি এই মামলার কোনো তথ্য পাইনি, কারণ অভিযোগকারী পুলিশকে আমার সঠিক ফোন নম্বর, সঠিক ঠিকানা বা কোনো যাচাইকৃত তথ্য দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন যে, ২০১৬ সাল থেকে তিনি আমার সাথে ‘ব্যবসা’ করছিলেন।”  

মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি অভিযোগকারী। এ বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তবে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, ‘তিনি ২০১৬ সাল থেকে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিতেন। কিন্তু তিনি যা দেখাতে পারেননি।’ একটি মেসেজ যেটা তিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন মেসেজের, হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বরে, কিংবা আমার পক্ষ থেকে একটি উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও না।” 

অভিযোগকারীর পরিচয় অসম্পূর্ণ। এ তথ্য উল্লেখ করে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তার পরিচয় অসম্পূর্ণ। তার সম্পূর্ণ পরিচয়পত্র এখনো জমা দেয়া হয়নি। তার এনআইডি পর্যন্ত অনুপস্থিত। অভিযোগকারী ও তার আইনজীবী ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। গতকাল খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অভিযোগকারী তার ফোন বন্ধ করে রেখেছেন, এমনকি তার আইনজীবীর নম্বরও বন্ধ।” 

আর্থিক লেনদেনের কোনো নেই। মেহাজাবীনের ভাষায়, “আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি দাবি করেন যে, তিনি আমাকে ২৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দেখাতে পারেননি—কোনো ব্যাংক লেনদেন, কোনো চেক, বিকাশ লেনদেন, কোনো লিখিত চুক্তি, কোনো রশিদ, কোনো সাক্ষী, কিছুই না। একটি কাগজপত্রও নেই।” 

অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “১১ ফেব্রুয়ারির ঘটনাটি সম্পূর্ণ প্রমাণহীন। তিনি দাবি করেন ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেঁধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম, আমার ছোট ভাইসহ আরো ৪–৫ জনকে নিয়ে। গত নয় মাসে তিনি দেখাতে পারেননি রেস্টুরেন্ট বা আশেপাশের রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ, কোনো সাক্ষী, কোনো প্রমাণ, কিছুই না। হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা, তবু তিনি একটি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।” 

মামলা হওয়ার পর ৯ মাস কেটে গেলেও কোনো নোটিশ পাননি মেহজাবীন চৌধুরী। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত নয় মাসে আমি কোনো নোটিশ পাইনি। এই নয় মাসে আমি কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল, কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট। একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগে থেকেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম।” 

আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন মেহজাবীন। তার ভাষায়, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও, যখন জানতে পারলাম যে একটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে, তখন আমি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছি। কারণ আমি আমাদের আইন ও নিয়ম মানি। প্রমাণ ছাড়া দায়ের করা মামলা কখনো সত্য হয়ে যায় না। সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখনকার দিনে কাউকে অপমান করা, মানহানি করা বা ভাইরাল হওয়ার জন্য অন্যকে ব্যবহার করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যক্তির যে উদ্দেশ্যই থাকুক, আমার বা আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে, সে যা-ই করতে চায়—আমি বিশ্বাস করি সবকিছু খুব দ্রুতই পরিষ্কার হয়ে যাবে।” 

অনুরোধ জানিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “এর আগ পর্যন্ত আমি সবাইকে অনুরোধ করব—দয়া করে সহানুভূতিশীল হোন, দয়া করে মানবিক হোন এবং কাউকে না জেনে কোনো মিডিয়া ট্রায়াল শুরু করবেন না। গত ১৫ বছর ধরে আমি আমার কাজ, আমার পেশা এবং আমার দর্শকদের জন্য যে পরিমাণ পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা দিয়ে এসেছি, সেই পরিশ্রমের পরেও আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে—এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এই রায়ে কষ্ট পেয়েছি: শেখ হাসিনার আইনজীবী
  • বিশ্ব দেখছে শেখ হাসিনার বিচার
  • বাংলাদেশ সীমান্তে অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় ৩০০ জন
  • হৃদয় থেকে বলছি, শেখ হাসিনা খালাস পেলে খুশি হব: রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
  • জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
  • দুই আসামিকে খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেল রাষ্ট্রপক্ষ
  • এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তিপ্রক্রিয়ায় অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নে রুল
  • এস আলমের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগসংক্রান্ত আদেশ স্থগিত
  • মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
  • ‎আইনজীবী মাসুদ মিয়ারমৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া