‘চ্যাম্পিয়ন’ তকমা নিয়েই কাল বিকেলে জিম্বাবুয়ে থেকে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ ক্রিকেট দল। হারারেতে জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব–১৯ দলের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজ জেতার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় জিতেছে ৫০ ওভারের ম্যাচের সিরিজও। আগামী বছর জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় হতে যাওয়া যুব বিশ্বকাপ সামনে রেখে বাংলাদেশের জন্য এটি ছিল প্রস্তুতির মঞ্চ।

দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ে সফরের ফলাফলই বলে দিচ্ছে আজিজুল হাকিমের দলের প্রস্তুতিটা হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় যুব বিশ্বকাপ নিয়েও স্বপ্নটা বড় হয়েছে তাতে। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে অধিনায়ক আজিজুল বলেছেন, ‘আমরা ওভাবেই (চ্যাম্পিয়ন হওয়ার) প্রস্তুতি নিচ্ছি, চেষ্টা করছি। এক বছর ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে কঠোর পরিশ্রম করছি।’

জিম্বাবুয়ে ও দক্ষিণ আফ্রিকা মিলিয়ে যুবাদের সফর ছিল এক মাসের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২–১ ব্যবধানে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে জিম্বাবুয়েতে যায় তারা। এই সিরিজে ৭ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের যুবারা হেরেছেন মাত্র একটিতে। সিরিজে বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন আল ফাহাদ। ৫ ম্যাচ খেলে ১৪ উইকেট নিয়ে এই পেসারই সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক।

ভিন্ন কন্ডিশনে এমন সাফল্য পেয়ে রোমাঞ্চিত ফাহাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওখানে বল করে আলাদা একটা মজা পেয়েছি। ঠান্ডা ছিল, উইকেটেও বাউন্স ছিল। এ রকম কন্ডিশনে আগে কখনো বল করিনি। এই অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপে কাজে লাগবে।’

আরও পড়ুনএবার আইএল টি-টোয়েন্টিতেও মোস্তাফিজ১ ঘণ্টা আগে

দুই সিরিজেই ব্যাট ও বল হাতে অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল সামিউন বাসীর। ৫ ম্যাচে ব্যাট হাতে ১১৮ রানের সঙ্গে নিয়েছেন ৭ উইকেটও। ত্রিদেশীয় সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১ রানের নাটকীয় জয়ের ম্যাচেও নায়ক তিনি, ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৩৯ বলে করেছেন অপরাজিত ৪৫ রান।

জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বক প উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি ২৩ সংগঠনের

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ‘সিন্ডিকেটের’ (চক্র) সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি সংগঠনের মোর্চা বাংলাদেশ সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্রেন্টস (বিসিএসএম)। তারা বলেছে, অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে কর্মী পাঠানোর দাবি জানিয়েছে বিসিএসএম।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে বিসিএসএম। এতে বলা হয়, অতীতে সিন্ডিকেটের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিচার করতে হবে এবং কোনোভাবেই যেন তারা নতুন করে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হতে না পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত সাবেক সংসদ সদস্য লোটাস কামালের (সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল) পরিবারসহ সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়েশিয়াকিনি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণে জড়িত প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত স্থগিত করার মালয়েশিয়ার অনুরোধে বাংলাদেশ রাজি হয়েছে।

এসব খবরে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বিসিএসএম বলেছে, মালয়েশিয়ার সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দায়মুক্তি না দেওয়া এবং অভিযোগের পুনঃ তদন্ত এবং বিচারিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছে তারা। তা ছাড়া এই সিন্ডিকেটের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের যে অভিযোগ আছে, সেই অগ্রগতি সম্পর্কেও সাধারণ নাগরিকদের অবহিত করার জোর দাবি জানাচ্ছে বিসিএসএম। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তকরণের প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না এবং বিসিএসএম এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সরকারের অর্থনীতিবিষয়ক শ্বেতপত্রে, গণমাধ্যমে গত এক বছরে প্রকাশিত বিভিন্ন খবর এবং দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যাচ্ছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালে একেকজন কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে পাঁচ থেকে ছয় গুণ বেশি টাকা নেওয়া হয়েছে এবং কয়েক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, যার সঙ্গে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ দুই দেশেরই সিন্ডিকেট জড়িত। এর আগে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে দশজনের সিন্ডিকেট হয়েছিল এবং মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে ঘিরে নানা অনিয়মের খবর নতুন নয়। কিন্তু কখনোই তাদের বিচার হয়নি।

বিসিএসএমের চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী ও কো–চেয়ার সৈয়দ সাইফুল হকের স্বাক্ষরে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তারা আশঙ্কা করছেন, এখন এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা যদি জবাবদিহি ও দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেহাই পায়, তবে একই ধরনের সিন্ডিকেট আবারও গড়ে উঠবে। বিসিএসএম আহ্বান জানাচ্ছে, ১১ থেকে ১৩ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফরে শ্রমবাজার উন্মোচন করতে গিয়ে সিন্ডিকেট নির্মূল করার বিষয়টি যেন গুরুত্ব না হারায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অভিবাসন নিয়ে কাজ করা ২৩টি নাগরিক সংগঠনের জোট বিসিএসএম অতীতেও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। এর আগে ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল আরেক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিল, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া এলেই স্বচ্ছতার বদলে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটে। অতীতে সিন্ডিকেটসহ যেসব কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হয়েছিল আবার যেন ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

২৩ সংগঠন হচ্ছে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু), ওয়্যারবী ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রাম (ওকাপ), বাস্তব, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, বাসুগ-ডায়াসপোরা অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, রাইট যশোর, ইন্টারন্যাশনাল নেটওয়ার্ক অব অলটারনেটিভ ফিন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (ইনাফি), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশি অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা), ইমা রিসার্চ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশন (বিসিডব্লিউডব্লিউএফ), ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা), বোয়াফ, সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কমিউনিকেশন (ডেভকম) লিমিটেড, ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন, চেঞ্জ মেকারস, অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি), সেন্টার ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (সিসিডিএ), কর্মজীবী নারী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস), বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র (বিএনএসকে)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ