বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সড়ক ও রেল খাতে বড় বড় প্রকল্পের নামে বিপুল খরচের আয়োজন করেছিল। এসব খরচের একটা বড় অংশই ছিল অপচয়। ব্যয়ের প্রতিটি খাতে ছিল অস্বচ্ছতা, দুর্নীতিতে ভরপুর। 

অন্তর্বর্তী সরকার আমাকে সড়ক ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার পর প্রথম লক্ষ্যই ছিল চলমান প্রকল্পে যতটা সম্ভব ব্যয় সাশ্রয় করা। প্রকল্প থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করেও চলমান বড় বড় প্রকল্পের প্রায় সব কটি থেকেই কিছু না কিছু ব্যয় কমানো গেছে। এ ছাড়া মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সংস্থাগুলোর দৈনন্দিন খরচের ক্ষেত্রেও কৃচ্ছ্রসাধনের চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন কেনাকাটা বা প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে এর ব্যয় পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সড়ক ও রেল খাতের কেনাকাটা এলেই তা অনুমোদন দেওয়া হয়নি। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে আবার মাঠপর্যায়ে পরিদর্শন করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

যে অনাচার বিগত সরকারের আমলে হয়েছে, তা আটকে দেওয়াই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। সেটা অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। মেট্রোরেল নির্মাণে বাড়তি ব্যয়ের বিষয়টি বহুলভাবে আলোচিত। বিগত সরকারের আমলে শুরু করা দরপত্রে ঠিকাদারের সঙ্গে দর-কষাকষি করে ব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন নতুন মেট্রোরেল পথ নির্মাণ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশকে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে। এতে কেনাকাটায় প্রতিযোগিতা বাড়বে, ব্যয় কমবে। 

দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম দূর করার জন্য এক বছর সময় খুব বেশি নয়। যেমন ইঞ্জিন বা কোচ কেনার উদ্যোগ নিলেও তা পেতে দেড় থেকে দুই বছর সময় লেগে যায়। নতুন বাস নামানোর জন্যও সময় দরকার। পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনার বিষয়ে পুরোপুরি সফল হতে পারিনি। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যেভাবে রাস্তা দখল করে নানা দাবি-দাওয়ার আন্দোলন হয়েছে, এর জন্য কিছুটা রয়ে-সয়ে চলতে হয়েছে। 

মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন সড়ক থেকে উচ্ছেদ করতে গিয়ে কিছুটা বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে সরকার তা থেকে পিছু হটেনি। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে, দুর্ঘটনা কমাতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ছোট দেশ, জমির স্বল্পতা আছে। তাই কম ভূমি ব্যবহার করে কীভাবে টেকসই উন্নয়ন করা যায়, সেই বিষয়ে একটা মহাপরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা অনাচারটা বন্ধ করে, কিছু সুষ্ঠু পরিকল্পনা রেখে যেতে চাই। বাকিটা নির্বাচিত নতুন সরকার এগিয়ে নেবে বলে আশা করি।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান: উপদেষ্টা, সড়ক পরিবহন, সেতু ও রেলপথ মন্ত্রণালয়

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের মতো হতে চান সামিউন, রিজান কি স্টোকস হতে পারবেন

ছেলেটি বাঁহাতি স্পিনার। ব্যাট করেন চার–পাঁচে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে এর আগেও এমন ছেলে এসে কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন এবং তাঁর নামের শুরু ‘স’ দিয়ে। এখনকার ছেলেটির নামও তা–ই।

যাঁর কিংবদন্তি হয়ে ওঠার কথা বলা হলো, এতক্ষণে তাঁর নামটা আন্দাজ করে ফেলার কথা—সাকিব আল হাসান। যে ছেলেটির কথা বলা হলো, তাঁর নাম সামিউন বাসীর। সামিউনের গল্প একটু পরে বলা যাক। কারণ, আলাপচারিতায় এর মধ্যেই হাজির আরেকজন, তিনি সামিউনেরই সতীর্থ।

আরও পড়ুন২০ বলের ১০টিই বাউন্ডারি, বেধড়ক পিটুনি খেয়ে রেকর্ড রশিদ খানের১ ঘণ্টা আগে

মিরপুরে একাডেমি ভবনের নিচতলায় সামিউনের সঙ্গে কথা বলার সময় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দলের পেস বোলিং অলরাউন্ডার রিজান হোসেনের সঙ্গেও দেখা হয়ে যায়। বাংলাদেশের ক্রিকেটে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জাতটা বিরল। রিজানের কাছে জানতে চাওয়া হলো, আপনি কার মতো হতে চান? মুখের চওড়া হাসিতে উত্তর এল, ‘ভাই, আমার প্রিয় তো বেন স্টোকস…।’

কেন ইংল্যান্ডের এই ক্রিকেটার তাঁর প্রিয়, সে ব্যাখাও দিলেন, ‘দেখলেন না, বিশ্বকাপে–অ্যাশেজে কীভাবে চাপ সামলে জিতিয়ে দিল ইংল্যান্ডকে!’ স্টোকসের একটা ছবি টাঙানো আছে রিজানের রুমে, ফোনও ভর্তি স্টোকসের ছবিতে। স্টোকস যখন, যেখানে খেলতে নামেন, রিজানের চোখ দুটো তাঁকে অনুসরণ করে।

স্টোকসের মতো হতে চান রিজান

সম্পর্কিত নিবন্ধ