স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে রেলপথ ব্লকেড করে বিক্ষোভ করছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। 

ব্লকেডের কারণে উভয় পাশে ছয়টি ট্রেন আটকা পড়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি যাত্রীবাহী ও একটি মালবাহী ট্রেন। ফলে, ঢাকার সঙ্গে রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের রেল যোগাযোগে শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।

বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মাসুম আলী খান রাইজিংবিডি ডটকমকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী ছয়টি ট্রেন আটকা পড়েছে। সেগুলো হলো—শরৎনগর স্টেশনে চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস, লাহিড়ী মোহনপুরে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, টাঙ্গাইলে দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস, জামতৈলে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস, ইব্রাহিমাবাদে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস এবং চাটমোহরে ঢাকাগামী তেলবাহী ট্রেন।

ব্লকেডের সময় বাড়লে ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা আছে। তবে, এ মুহূর্তে অবরোধ তুলে নিলে ট্রেন চলাচলে লেট হলেও শিডিউল বিপর্যয়ের আশঙ্কা থাকবে না।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বোস্তামী ও হাবিবুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তাইবুর রহমান, বাংলা বিভাগের মেরাজ আহম্মেদসহ আন্দোলরত শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে ১০ আগস্ট হাটিকুরুমল গোলচত্বর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেদিন ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। তারপরও সরকারের কোনো পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাইনি। আজ ৪৮ ঘণ্টা শেষ। কর্মসূচি অনুযায়ী উল্লাপাড়া স্টেশন এলাকায় রেলপথ ব্লকেড করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আট বছরেও একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস নির্মিত হয়নি, এটা দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের চরম ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা ক্যাম্পাস চাই। ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরব না।

সিরাজগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক তপন ঘোষ জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন অবস্থান করছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে পুলিশ, র‌্যাব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। অবরোধের কারণে ট্রেনে শিডিউলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। আপাতত ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সাথে রেল যোগাযোগ বন্ধ আছে।

প্রতিষ্ঠার ৯ বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। 

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা কর্মসূচিতে মহাসড়ক অচল করে দেন শিক্ষার্থীরা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এরপর ছয় মাসেও ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে আবার আন্দোলন শুরু হয়।

ঢাকা/অদিত্য/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত ব লক ড শ ড উল অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার

কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে গৃহবধূ উর্মি খাতুনের (৩০) মরদেহ উদ্ধারের অভিযোগে স্বামী আবু বক্কর সিদ্দিক রানাকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

তবে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।

মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শহরের মজমপুর গেট এলাকা থেকে রানাকে গ্রেপ্তার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।

আরো পড়ুন:

সিলেটে ছুকিরাঘাতে মাদরাসা শিক্ষক নিহত

চাঁদপুরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে রিকশাচালক নিহত

এর আগে, শনিবার (৯ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে হাউজিং এফ ব্লকের একটি ভাড়া বাসা থেকে উর্মির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত উর্মি খাতুন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখী ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মহিম মন্ডলের মেয়ে। প্রায় ৫ বছর আগে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকার রানা খানের সঙ্গে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। তারা কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন এবং সিটি কলেজের সামনে একটি কাপড় ও খাবারের দোকান পরিচালনা করতেন।

নিহতের ভাই আবু সাইদ অভিযোগ করে বলেন, “বিয়ের পর থেকেই রানা মাদকাসক্ত ছিলেন এবং এ কারণে একাধিকবার কারাগারে যান। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। এ থেকেই ঝগড়া-বিবাদের জেরে মারধর ও শ্বাসরোধ করে উর্মিকে হত্যা করা হয়েছে।”

ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা স্বীকার করেছেন, স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহে তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে রানা উর্মিকে মারধর করে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তিনি বাইরে থেকে ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান।

ঢাকা/কাঞ্চন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ