আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়ে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা পর রেলপথ ব্লকেড স্থগিত করেছে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ব্লকেডের কারণে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলার সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। 

বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেল ৩টায় উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মাসুম আলী খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা অবরোধের কারণে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। 

এর আগে সকাল ৯টায় স্থায়ী ক্যাম্পাসের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুমোদনের দাবিতে শিক্ষার্থীরা উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।

আরো পড়ুন:

বিসিএসে অযৌক্তিক অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ

ময়মনসিংহ মেডিকেলের হোস্টেল থেকে ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার, চিরকুট জব্দ

আগামীকাল যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তাইবুর রহমান বলেন, ‘‘স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে ১০ আগস্ট হাটিকুরুমল গোলচত্বরে এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেদিন ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। এরপরও সরকারের কোনো পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাইনি। আজকেও উল্লাপাড়া স্টেশন এলাকায় রেলপথ ব্লকেড করা হয় কিন্তু কোনো আশ্বাস পাইনি। ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে অবরোধ স্থগিত করেছি। আগামীকাল একইভাবে যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়ক অবরোধ করবে শিক্ষার্থীরা। আমাদের দাবি না মানলে এই আন্দোলন চলবে।’’

আন্দোনকারীরা বলেন, ‘‘একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ বছরেও ক্যাম্পাস নির্মিত হয়নি এটা দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের ভোগান্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা ক্যাম্পাস চাই। ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরব না।’’

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মোছা.

হাসিনা খাতুন জানান, অবরোধের কারণে ৮টি ট্রেন আটকা পড়ে। ঈশ্বরদীতে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস, ভাঙুড়া স্টেশনে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, শরৎনগর স্টেশনে চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস, লাহিড়ী মোহনপুরে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, টাঙ্গাইলে দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস, জামতৈলে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস, ইব্রাহিমাবাদে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ও চাটমোহরে ঢাকাগামী তেলবাহী ট্রেন আটকা পড়ে। 

তিনি আরো জানান, ধুমকেতু এক্সপ্রেস ২টার দিকে রাজশাহী এসে আবার ৪টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। অপরদিকে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছার পর পৌনে ৩টায় আবার রাজশাহী অভিমুখে ছেড়ে আসার কথা। এছাড়াও রংপুর এক্সপ্রেস রংপুরে ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস কুড়িগ্রামে পৌঁছে আবার ঢাকায় ফেরার কথা। কিন্তু অবরোধের কারণে এ সব ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা ছিল। ফলে ঢাকা-উত্তরাঞ্চল রেললাইনে সিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। 

প্রতিষ্ঠার ৮ বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস না হওয়ায় আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা একাত্মতা প্রকাশ করেছে। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা কর্মসূচিতে মহাসড়ক অচল করে দেন শিক্ষার্থীরা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এরপর ৬ মাসেও ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে আবার আন্দোলন শুরু হয়।

ঢাকা/রাসেল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের মন্দির

মানুষের মন্দির

এটি ছিল এক বিষণ্ন রাত

ফ্যাকাশে আলোর সঙ্গে,

হৈমন্তী চাঁদের আলোয়

আলোকসজ্জিত আকাশ।

আমরা আনন্দে একত্র হয়েছিলাম

শরতের রোদে রাঙা দুপুরে

আমাদের ঘামের ফসল হাতে

. . . . . . . . . . .

আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি

আমাদের বপনের ঋতুতে

আমাদের যত্নের ঋতুতে,

আমরা ছিলাম অধ্যবসায়ী

আমরা ছিলাম নিবেদিত

আমাদের প্রচেষ্টা প্রতি,

এখন সময় এসেছে ফসল তোলার।

এই সব দিনে

আমরা ভোগ করি পরিশ্রমের ফসল

আমাদের আগে ছিল যারা,

বুঝি না আত্মত্যাগের মানে

যা জন্ম নিয়েছে

নিজের গড়া গৌরবের ছায়া হতে।

আমারও লোভার্ত হাত পৌঁছেছিল সেই আলমারিতে

একটি নিরবচ্ছিন্ন চেতনা নিয়ে,

প্রাচুর্যের মানে বুঝতে অপারগ,

এক নিঃশব্দ অস্বীকৃতির ভারে।

. . . . . . . . . . . .

এই সময়ে

কিছু মানুষ আছে,

আমার প্রতিবেশীরা,

আমার সহপথিক মানবেরা

অক্লান্ত পরিশ্রম করে, তবু ভোগে যন্ত্রণায়।

এদিকে আমার কঠিন চেতনা

আসে আর যায়

সহানুভূতির প্রাঙ্গণ দিয়ে,

ফেলে রেখে যায়

আমার জন্মগত ও ঈশ্বরপ্রদত্ত করুণা,

আমার অসংবেদনশীলতার দ্বারে।

.. . . . . . . . . . .

দশমাংশ কী,

এ কি শুধু এইটুকুই...

আমাদের সীমিত পকেট আর পার্স খালি করা

চাঁদার ঝুড়িতে ফেলার জন্য?

. . . . . . . .

আমি আমার দশম ভেড়া কোথায় দেব,

আমার দশম ছাগল,

আর কোন মন্দিরে...?

এ কি মানুষের তৈরি মন্দির,

ইট, চুনসুরকি আর কাঠ দিয়ে গড়া,

যেখানে আমরা জমায়েত হই

আমাদের স্বেচ্ছায় জমানো অস্থিরতা উজাড় করতে,

নাকি এটা তার চেয়ে বড় কিছু,

একটি মন্দির যা বিরাট কোনো চেতনার জগতে বিরাজমান,

যা আমাদের সকলকে আপন করে জড়িয়ে ধরে?

যখন

যখন সবকিছু ধসে পড়বে,

তখন তুমি কোথায় দাঁড়িয়ে থাকবে?

যখন আকাশ নিজেকে গুটিয়ে নেবে,

তখন তুমি কীভাবে নিশ্বাস নেবে?

যখন তারারা তাদের আলো নিভিয়ে দেবে,

তখন কি আমাদের স্বপ্ন দেখার ক্ষমতাটাও

অদৃশ্য হয়ে যাবে?

যখন হাসি ব্যথার জন্ম দেবে,

তখন কি আমরা

অর্থবোধক অনুভূতি থেকে

সম্পূর্ণ শূন্য হয়ে যাব?

যখন আমরা আর আহারের জন্য ক্ষুধার্ত থাকব না,

তখন কি আমরা সময়ের মৃত্যুযাত্রায়

নীরবে আত্মসমর্পণ করব?

যখন দিগন্তের শেষ

আমাদের সামনে দাঁড়াবে,

তখন কি আমরা ছুটে বেড়াব

সবকিছু মনে করতে, ফিরে পেতে

যা আমরা অবহেলা করেছি,

ধ্বংস করেছি, ভুলে গেছি?

যখন সব ‘কেন’র উত্তর মিলবে,

তখন কি আমরা অবশেষে বুঝতে পারব?

যেমন মি. স্মিথ বলেছিল নিওকে,

আমরা একধরনের ভাইরাস,

একটা বিপজ্জনক জাত

যাদের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা হলো

ধ্বংস করার দক্ষতা।

এই আত্মনির্মিত দুঃস্বপ্ন

কবে শেষ হবে?

কবে?

সম্পর্কিত নিবন্ধ