ইসলামি দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের ডাক দিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির (চরমোনাইর পীর) সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘এই ডাকে আমরা সাড়া পাচ্ছি। এখনই সুযোগ এসেছে ইসলামি শাসন কায়েম করার। এটা দেখে ফ্যাসিস্ট চরিত্র ও চাঁদাবাজদের সহ্য হচ্ছে না। তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছে। তারা ওলামা ও চরমোনাইয়ের বিরুদ্ধে লেগেছে। বিশেষ করে যাদের ডাকে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছে, তাদের বিভিন্নভাবে সমালোচনা করছে। কিন্তু তারা ১৫ বছরে বালুভর্তি একটি ট্রাক সরাতে পারেনি।’

ফরিদপুরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘ইসলামপন্থীদের ঐক্য ভাবনা ও ওলামায়ে কেরাম তৌহিদি জনতার করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে তিনি এ কথা বলেন। আজ বুধবার বিকেলে শহরের গেয়ালচামট এলাকার বীরশ্রেষ্ঠ আবদুর রউফ পৌর মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ।

চরমোনাইর পীর বলেন, ‘এখন আমার ভাইদের বলব, সুযোগ যখন আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন, আমরা যেন এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারি। আমাদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। আর বিদেশ যেন আমাদের গোলাম বানিয়ে রাখতে না পারে। আমরা স্বাধীন দেশ হিসেবে আমাদের দেশকে মানবতার কল্যাণের পক্ষে মাথা উঁচু করে তুলতে পারি।’

স্বার্থান্বেষীরা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্টেশন-ঘাট দখলে নেমেছে মন্তব্য করে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘তারা পাথর মেরে মানুষ হত্যা করে চিত্তবিনোদন করে, উল্লাস করে। আমরা ওদের ঘৃণা জানাই। ওই স্বার্থান্বেষী মহলকে বাংলার জমিন থেকে উৎখাত করতে হবে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে হবে। সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।’

চরমোনাই পীর আরও বলেন, নির্বাচন হতে হবে পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে। এতে প্রতিটি ভোটারকে মূল্যায়ন করা হয়। তাই সবচেয়ে বড় সংস্কার হলো নির্বাচনপদ্ধতির সংস্কার। এ সিস্টেমে প্রতিটি ভোটারের মূল্যায়ন করা হয়, এই পদ্ধতির মাধ্যমে এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, গুন্ডা তৈরি হয় না এবং সমস্ত দলের প্রতিনিধির সংসদে যাওয়ার সুযোগ থাকে। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর ৫৩ বছরে ইসলামকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নেওয়ার এই সুযোগ কিন্তু আগে আর আসে নাই। যেই সুযোগ এখন এসেছে, সেই সুযোগকে যদি আমরা কাজে লাগাতে না পারি, যখন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ইতিহাস পড়বে, তখন তারা আমাদের ধিক্কার জানাবে, ঘৃণা করবে।’

আয়োজক সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা সৈয়দ শামসুল হকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন পরিষদের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি রেজাউল করিম আবরার। এতে অন্যান্যের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য আবদুত তাওয়াব, ফরিদপুর জেলার আমির বদরুদ্দীন, প্রবীণ আলেম আল্লামা শাহ আকরাম আলী, আল্লামা হেলালুদ্দিনসহ ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের নেতারা বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চরম ন ই আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্‌যাপন

উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।

আরো পড়ুন:

কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি

চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি

ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।

তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্‌যাপিত হবে জন্মদিন।

১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়। 

যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে। 

দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ