Prothomalo:
2025-11-17@10:11:57 GMT

ডিমের ডজন এখন ১৫০ টাকা

Published: 14th, August 2025 GMT

বাজারে চাহিদা বাড়তেই বেড়ে গেল ডিমের দাম। ১০ দিনের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে ২০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, হঠাৎ করে ডিমের এই মূল্যবৃদ্ধির কয়েকটি কারণের মধ্যে রয়েছে মাছ ও সবজির চড়া দাম। সব ধরনের মাছ ও সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষ ডিমের প্রতি বেশি ঝুঁকেছেন। এতে বাজারে ডিমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে দামও। আর উৎপাদকেরা বলছেন, কিছু খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উৎপাদনও কমে গেছে।

বাজারে এখন প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। এর মধ্যে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সাদা ডিম আর ১৫০ টাকা বাদামি রঙের ডিম। ১০ দিন আগেও প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, ৮–১০ দিনের ব্যবধানে বাজারে হঠাৎ করে ডিমের চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবজি ও মাছের দাম অনেক বেশি। তাই নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ বাধ্য হয়ে মাছ ও সবজির বদলে ডিমে বেশি আগ্রহী হয়েছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, দেশে দৈনিক সাড়ে ৪ কোটি থেকে ৫ কোটি পিস ডিম উৎপাদিত হয়। ডিমের চাহিদাও ৫ কোটি পিসের আশপাশে। ফলে কোনো কারণে হঠাৎ করে ডিমের চাহিদা বেড়ে গেলে বা সরবরাহ কমে গেলে তাতে ডিমের দামে তার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে।

গতকাল বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার, আগারগাঁও, তালতলা ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ডিমের দাম সম্পর্কে খোঁজ নেন এই প্রতিবেদক। এ সময় এসব বাজারে বিক্রেতা ও কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা ডিমের হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির উল্লিখিত কারণের কথা জানান। বিক্রেতারা আরও বলেন, বাজারে এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে তেমন কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। মাছ–মুরগির দামও বেশি। এ কারণে নিম্ন ও স্বল্প আয়ের মানুষের একটি বড় অংশ ডিমের প্রতি ঝুঁকেছেন। তাতে চাহিদা কিছুটা বেড়ে গেছে।

কৃষি মার্কেটের মুরগি ও ডিম বিক্রেতা মো.

মুরাদ হোসেন বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক ডজন ডিমের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় গত তিন দিন ডিম বিক্রি করিনি। দাম কমছে না দেখে বুধবার থেকে আবার বিক্রি শুরু করেছি।

গত বছরও সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বাজারে ডিমের দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। ওই সময় প্রতি ডজন ডিমের দাম ওঠে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়। তারই একপর্যায়ে ডিমের যৌক্তিক দাম নির্ধারণ এবং বাজার তদারকি শুরু করে সরকার। পাশাপাশি তখন বিদেশ থেকে ডিম আমদানিরও অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর দাম কমতে শুরু করে।

কোন পর্যায়ে কত দরদাম

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর গত বছরের সেপ্টেম্বরে ডিমের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। তখন উৎপাদন পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের যৌক্তিক দাম ধরা হয় ১০ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এ দামে উৎপাদনকারীরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে ডিম বিক্রি করবেন। একই সঙ্গে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের যৌক্তিক দাম ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরায় তা ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সেই হিসাবে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিমের দাম হওয়ার কথা ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সা। বর্তমানে বাজারে এক ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তবে গত কয়েক মাসে ডিম বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়।

রাজধানীর কাপ্তানবাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমান জানান, গতকাল তিনি রংপুরের খামার থেকে প্রতি পিস ডিম কিনেছেন ১০ টাকা ৭০ পয়সায়। এরপর ওই ডিম ঢাকায় আনতে পরিবহন ব্যয়সহ সব মিলিয়ে খরচ হয় ১১ টাকা ১০ পয়সা। খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তিনি প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৩০ পয়সায় বিক্রি করেছেন। আর খুচরায় সেই ডিম বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ১২ টাকায়।

কেন দাম বাড়ছে

বাংলাদেশ এগ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হিসাবে সাম্প্রতিক সময়ে ডিমের উৎপাদন প্রায় ২০ শতাংশ কমেছে। ডিম উৎপাদনকারী বেশ কিছু খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মুরগির সংখ্যা ও ডিমের উৎপাদন কমেছে।’ তবে ডিমের উৎপাদন ব্যয় আগের মতোই আছে বলে জানান তিনি।

প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, গত সাত মাস যে দামে ডিম বিক্রি হয়েছে, সেটি যৌক্তিক দাম ছিল না। গত সাত মাস খামারিরা ৭ থেকে ৮ টাকায় প্রতি পিস ডিম বিক্রি করেছেন। অথচ এই ডিমের উৎপাদন খরচ ন্যূনতম ১০ টাকা। দীর্ঘ সময় ধরে উৎপাদকেরা অনেকটা কম দামে কিংবা লোকসানে ডিম বিক্রি করেছেন। এতে অনেক খামার বন্ধও হয়েছে। এখন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় খামারিরাও দাম বাড়িয়েছেন।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খামার শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, সারা বছরের তুলনায় বর্ষার এই মৌসুমে ডিমের চাহিদা বেশি থাকে। কারণ, এ সময় বাজারে সবজি ও মাছের দাম বেশি থাকে। এতে ডিমের চাহিদা বেড়ে যায়; যার প্রভাব পড়ে দামে। ওই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ডিমের যে মূল্য নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে অনেক কম দামে সারা বছর খামারিরা ডিম বিক্রি করেছেন। এতে অনেকে লোকসানে ছিলেন। এখন মূল্যবৃদ্ধির পরও যৌক্তিক মূল্যের কাছাকাছিই রয়েছে ডিমের দাম।

এদিকে ডিমের দাম বাড়ায় অসুবিধায় পড়েছেন ভোক্তারা; বিশেষ করে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষেরা এ নিয়ে ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি বস্তিতে থাকেন রিকশাচালক ময়েজউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘আমার আয় দিয়ে মাছ-মুরগি সেভাবে কিনতে পারি না। এ জন্য বেশির ভাগ সময় ডিম কিনি। এখন ডিমের দামও বেড়ে গেল।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ডজন ড ম র দ ম ১৫০ ট ক পর য য় ১১ ট ক কর ছ ন বলছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থান

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।

তবে, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিক পতনের ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪ হাজার ৭০০ পয়েন্টের ঘরে নেমেছে।

আরো পড়ুন:

প্রথম প্রান্তিকে ইউনিক হোটেল ও ইফাদ অটোসের মুনাফায় বড় উত্থান

ডিএসইতে সূচকের উত্থান, সিএসইতে পতন

আগের কার্যদিবসের চেয়ে ডিএসই ও সিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, অনেক দিন ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের শুরুতে সূচকের উত্থান দেখা গেলেও লেনদেন শেষে তা পতনে রূপ নেয়। সোমবার সকালে ডিএসইএক্স সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু হয়। তবে, লেনদেন শুরুর ২০ মিনিট পর থেকে সূচকের উত্থান দেখা যায়। লেনদেন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। 

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪২.৮০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৭৪ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১০০০ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৯.৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৭৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩২২টি কোম্পানির, কমেছে ৩৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৬টির।

এদিন ডিএসইতে মোট ৩৪৮ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৮.৯৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৮ হাজার ২৮৭ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪১.৬৯ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৫.১১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১৬.৮৭ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ১১৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে মোট ১৫৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১০০টি কোম্পানির, কমেছে ৪৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১১টির।

সিএসইতে ১৪ কোটি৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

ঢাকা/এনটি/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ