ভারত, আওয়ামী লীগ, জামায়াত—দেশের মূল শত্রু তিনটি পক্ষ: মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি
Published: 14th, August 2025 GMT
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেছেন, এই দেশের মূল শত্রু তিনটি পক্ষ। প্রথমটি হলো ভারত, তারপর আওয়ামী লীগ এবং জামায়াতে ইসলামী। তারা সুযোগ পেলে যে কারও কাঁধে ভর করে। তাদের থেকে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের এ কথা বলেন ইশতিয়াক উলফাত। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান ও ভূমিকা নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। আয়োজক জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এই নেতা বলেন, ‘এই জামায়াতে ইসলামী দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। যে জামায়াত স্বাধীন দেশ চায়নি, দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। মা–বোনদের পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে, তাদের এখন কত বড় গলা। তাদের কথা আপনারা ভুলবেন না।’
ইশতিয়াক উলফাত বলেন, টাকার বিনিময়ে দেশের প্রায় অর্ধশত জেলায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমিটি দেওয়া হয়েছে। এসব কমিটিতে স্থান পেয়েছে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সদস্য ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা। তিনি উদাহরণস্বরূপ লালমনিরহাট, ঝিনাইদহ ও খুলনা জেলার কমিটির কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অ্যাডহক কমিটি গঠনেও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন ইশতিয়াক উলফাত। তিনি বলেন, ‘এই কমিটি গঠনের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। এই কমিটিই দেশজুড়ে অর্থের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধা কমিটি দিচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা দলের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নিবন্ধিত প্রথম কমিটি ও বর্তমান অ্যাডহক কমিটি গঠনে অনিয়ম এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অর্থ আত্মসাৎ ও জেলা কমিটিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সদস্য অন্তর্ভুক্তিসহ ছয়টি অনিয়ম উল্লেখ করা হয়।
এসব অনিয়মের পেছনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ মুনিবুর রহমান ও সদস্যসচিব সাদেক আহমেদ খান জড়িত বলে অভিযোগ করেন ইশতিয়াক উলফাত। তিনি বলেন, জেলা কমিটিতে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করায় জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সমর্থকেরা সদস্য পদ থেকে তাঁদের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এসব অনিয়ম বন্ধ না হলে তাঁরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি এম এ শহীদ, শাহাবুদ্দিন রেজা, মোবারক হোসেন, এম এ হালিম, তরঙ্গ আনোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, শরীফ হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে এবার যমুনা সেতুর মুখে মহাসড়ক অবরোধ, চরম ভোগান্তি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়নের দাবিতে এবার যমুনা সেতুর মুখে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত তাঁরা যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকায় ঢাকা ও উত্তরবঙ্গমুখী মহাসড়কের উভয় লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ২১টি জেলার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও পরিবহনচালকেরা। এক ঘণ্টা পর বেলা একটার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে এর আগে গতকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে ছয় ঘণ্টা উল্লাপাড়া রেলস্টেশনের সামনে রেলগেট এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেন তাঁরা। এতে ঢাকা ও খুলনার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটে। গতকাল বেলা তিনটার দিকে আজকের যমুনা সেতুর পশ্চিমে মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়ে তাঁরা অবরোধ তুলে নিয়েছিলেন।
গত ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বর্জনের মধ্য দিয়ে ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে কয়েক দিন ধরে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ করে পথনাটক, শেকল ভাঙার গান ও প্রতীকী ক্লাসের আয়োজন করা হয়। এরপরও সাড়া না পেয়ে গত বৃহস্পতিবার হাটিকুমরুল গোলচত্বরে মানববন্ধন ও রোববার মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। গতকাল রেলপথ অবরোধের পর আজ যমুনা সেতুর পশ্চিমে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
আজ দুপুরে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকা অবরোধ করে দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে এক শিক্ষার্থীকে কাফনের কাপড় পরে স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আজ দুপুরে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বর এলাকা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় এক শিক্ষার্থীকে কাফনের কাপড় পরে স্লোগান দিতে দেখা যায়