কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সংস্কারে জরুরি টেন্ডার দাবি শিক্ষার্থীদের
Published: 14th, August 2025 GMT
কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যাতায়াতের অংশের জরুরি টেন্ডার দিয়ে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের কাছে তারা এ সংক্রান্ত স্মারকলিপি জমা দেন।
এতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান এবং হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সাব্বির।
আরো পড়ুন:
রবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, যমুনা সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক
জাবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ২১ সেপ্টেম্বর
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলার সাবেক মুখ্য সংগঠক বেলাল হোসাইন বাধন, সুকান্ত দাস, রিয়াদ হাসান রাব্বিসহ ইবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ কুষ্টিয়া-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মহাসড়কের ভয়াবহ দুরবস্থার শিকার হচ্ছি। মহাসড়কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান যাতায়াত পথ হওয়ায় এর উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড অত্যন্তভাবে নির্ভরশীল। দুঃখের বিষয়, বর্তমানে এই সড়কটির অবস্থা এতটাই করুণ যে, তা দিয়ে যানবাহন চলাচল একপ্রকার অনিরাপদ ও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, যা শিক্ষার্থীদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
তারা বলেন, এটি শুধু শারীরিক ঝুঁকি নয়, মানসিক ও একাডেমিক দিক থেকেও আমাদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সর্বোচ্চ ২০ কর্মদিবসের মধ্যে এ মহাসড়কের টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন করে মেরামতের কাজ শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। অন্যথায়, আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর স্বার্থে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, “শিক্ষার্থীরা সড়ক সংস্কারের দাবিতে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছি। সড়ক সংস্কারে নতুন প্রকল্প যেমন নেওয়া হচ্ছে, তেমনি যেসব স্থান চলাচলের একদম অনুপযোগী সেসব মেরামতের কাজও চলছে। সংস্কারের বিষয়টি আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগে কথা বলে গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করব।”
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যাতায়াতের একমাত্র পথ কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। বারবার সড়ক দূর্ঘটনায় সাধারণ মানুষ ছাড়াও ইবি শিক্ষার্থীরা আহত হলেও সড়ক সংস্কারে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া শহর থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বেহাল সড়ক দ্রুত সংস্কারের উদ্দেশ্যে জরুরি ভিত্তিতে টেন্ডার আহ্বান এবং সংস্কার কাজ শুরুর দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর ষ র শ ক ষ র থ সড়ক স স ক র স ম রকল প ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শাহজাদপুরে নির্মাণের এক মাসের মাথায় সড়কে ধস
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নির্মাণের এক মাসের মাথায় একটি সড়ক ধসে পড়েছে। ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সড়কের দুরবস্থার কারণে বিপাকে পড়েছেন চার ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের মানুষ। তাদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ করার ফলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন তারা।
শাহজাদপুর উপজেলার পাঁচিল-কৈজুরি আঞ্চলিক সড়কের জয়পুর ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন খালের ওপর নবনির্মিত সেতুর দুই পাশে এ সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল।
আরো পড়ুন:
বেইলি ব্রিজের পাটাতন খুলে নদীতে, দুর্ভোগে হাজারো মানুষ
দূরপাল্লার বাস বন্ধে ভোগান্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের যাত্রীরা
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৮ মাস আগে ১ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা ব্যয়ে মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডাস নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণ করে। এরপর ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা ও কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় ৬ লাখ ৩০ হাজার ৯১৬ টাকা ব্যয়ে সেতুর সংযোগ (সিসিকরণ) সড়ক নির্মাণ করা হয়। গত সপ্তাহে পাঁচিল-কৈজুরি আঞ্চলিক সংযোগ সড়কটি ধসে পড়ে।
সড়কে চলাচলকারীদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ এবং নিয়ম অনুযায়ী রড ছাড়াই নিম্নমানের পুরনো ইট ও লোকাল বালু ব্যবহার করে নামমাত্র গাইড ওয়াল দিয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ কারণে নির্মাণের এক মাস না যেতেই বৃষ্টিতে সড়কটি ভেঙে মানুষ ও যানবাহনের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবিতে গত শুক্রবার মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ উপস্থিত ছিলেন।
জয়পুরা গ্রামের নাসির উদ্দিন, কল্পনা বেগম ও আবু তাহের জানান, শিডিউল অনুযায়ী সংযোগ সড়কের পাইলিং ঠিকভাবে করা হয়নি। পুকুরে পানি থাকা সত্ত্বেও দায়সারাভাবে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া মাত্র এক মাস আগে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করায় কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তা ভেঙে পড়েছে। এই সড়ক দিয়ে এখন যানবাহন তো দূরের কথা, পথচারীরাও চলাচল করতে পারছেন না।
স্থানীয় শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ, নীরব হোসেন ও আখিঁ খাতুন বলেন, অনেক কষ্ট করে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের। রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় সবাই খুশি হয়েছিল। সংযোগ সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় স্কুল-কলেজে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিন শেখ ও আব্দুল আলিম জানান, সেতুটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে শিডিউল অনুযায়ী কাজ করতে বলা হয়েছি। ঠিকাদার সঠিক নিয়মে কাজ করেনি। পানির মধ্যে ৫০ ফুট পাইলিং না করে ২০ ফুটের কম পাইলিং করে সেতু নির্মাণ করেন তিনি। নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সংযোগ সড়ক তৈরি করায় তা এক মাসের মাথায় ধসে পড়েছে। সঠিক তদারকি না থাকায় (পিআইও) অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে এসব অনিয়ম হয়েছে।
এক মাসের মাথায় সড়কটি ধসে পড়ার কারণ জানতে চাইলে প্রকল্পের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। বিলও উত্তোলন হয়েছে। বৃষ্টির কারণে সংযোগ সড়কটি ভেঙে গেছে। এতে আমার কিছু করার নেই।”
শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল কালাম আজাদ বলেন, “আগের পিআইওর সময় সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। এ সম্পর্কে আমি কিছু বলতে পারব না। আমার সময়ে নির্মাণ করা সংযোগ সড়কটি বৃষ্টির কারণে ভেঙে গেছে। নতুন বরাদ্দ পেলে সংস্কার করা হবে।”
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, “কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির কারণে গাইড ওয়ালের পাশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় সংযোগ সড়কটি ধসে পড়েছে। ঠিকাদারকে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার করে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/অদিত্য/মাসুদ