কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়কের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যাতায়াতের অংশের জরুরি টেন্ডার দিয়ে দ্রুত সংস্কার কাজ শুরুর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের কাছে তারা এ সংক্রান্ত স্মারকলিপি জমা দেন।

এতে শিক্ষার্থীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি বিভাগের ২০১৯-২০ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান, আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাতুল্লাহ শেখ, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০২০-২১ বর্ষের শিক্ষার্থী ফুয়াদ হাসান এবং হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের একই বর্ষের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সাব্বির।

আরো পড়ুন:

রবি শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, যমুনা সেতুতে যান চলাচল স্বাভাবিক

জাবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ২১ সেপ্টেম্বর

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলার সাবেক মুখ্য সংগঠক বেলাল হোসাইন বাধন, সুকান্ত দাস, রিয়াদ হাসান রাব্বিসহ ইবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ কুষ্টিয়া-ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মহাসড়কের ভয়াবহ দুরবস্থার শিকার হচ্ছি। মহাসড়কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান যাতায়াত পথ হওয়ায় এর উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড অত্যন্তভাবে নির্ভরশীল। দুঃখের বিষয়, বর্তমানে এই সড়কটির অবস্থা এতটাই করুণ যে, তা দিয়ে যানবাহন চলাচল একপ্রকার অনিরাপদ ও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, যা শিক্ষার্থীদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

তারা বলেন, এটি শুধু শারীরিক ঝুঁকি নয়, মানসিক ও একাডেমিক দিক থেকেও আমাদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সর্বোচ্চ ২০ কর্মদিবসের মধ্যে এ মহাসড়কের টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন করে মেরামতের কাজ শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। অন্যথায়, আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃহত্তর স্বার্থে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমান বলেন, “শিক্ষার্থীরা সড়ক সংস্কারের দাবিতে একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়টি জানিয়েছি। সড়ক সংস্কারে নতুন প্রকল্প যেমন নেওয়া হচ্ছে, তেমনি যেসব স্থান চলাচলের একদম অনুপযোগী সেসব মেরামতের কাজও চলছে। সংস্কারের বিষয়টি আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগে কথা বলে গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করব।”

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যাতায়াতের একমাত্র পথ কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। বারবার সড়ক দূর্ঘটনায় সাধারণ মানুষ ছাড়াও ইবি শিক্ষার্থীরা আহত হলেও সড়ক সংস্কারে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া শহর থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বেহাল সড়ক দ্রুত সংস্কারের উদ্দেশ্যে জরুরি ভিত্তিতে টেন্ডার আহ্বান এবং সংস্কার কাজ শুরুর দাবিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর ষ র শ ক ষ র থ সড়ক স স ক র স ম রকল প ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তের পাশ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের দুই পাশে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়কের পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার গর্তের গভীরতা এত বেশি যে, ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু, ট্রাকে আগুন

সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও, এর ওপরে নির্মিত পাকা সড়কটি সওজ বিভাগের আওতাধীন। এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর যানবাহন চলাচল করে।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক রোবেল হোসেন বলেন, ‍“নির্মাণের দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।”

মোটরসাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “দিনে কোনোভাবে পার হওয়া যায়, কিন্তু রাতের পরিস্থিতি থাকে ভয়ঙ্কর। কারণ, অনেক সময় দূর থেকে গর্ত দেখা যায় না। এই সড়কে খুব ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।” 

পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুর রহমান বলেন, “কয়েক বছর না যেতেই রাস্তা গর্তে ভরে গেছে। রাতের বেলায় গর্তগুলো বোঝা যায় না, তাই সব সময় আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”

কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। এখন গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা একাধিকবার জানিয়েছি।”

মতলব উত্তর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, “এই বেড়িবাঁধ শুধু মতলব নয়, পুরো অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। তাই সওজ বিভাগের উদাসীনতা জনজীবনে ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্ষার আগেই এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি।”

চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে। আমরা সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।”

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, মতলব ব্রিজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। পশ্চিম অংশ এখনও ঠিকাদারের দায়িত্বে আছে, তাদেরকেও মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) সেলিম শাহেদ বলেন, “বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও এর ওপরে থাকা পাকা সড়ক সওজ বিভাগের দায়িত্বে। বেড়িবাঁধের যদি কোথাও ক্ষতি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই; সড়ক সংস্কার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হয়।”

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ
  • হাসপাতাল-স্কুলে যাওয়ার সড়কটি এমন বেহাল