কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম আশফাকের ছোট ছেলে শাহেদুল ইসলাম অনিক (২৩) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনিকের বন্ধু আবু সাঈদ (২৩)। আবু সাঈদ কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের উকিল পাড়া এলাকার টিটু মিয়ার ছেলে।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের জাফরাবাদ বাগান বাড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শোলাকিয়া এলাকার বাসিন্দা নিহত অনিকের বাবা আমিনুল ইসলাম আশফাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় অনিক তার বন্ধুদের নিয়ে করিমগঞ্জে তাদের আরেক বন্ধুর বোনের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যায়। অনুষ্ঠান শেষে অনিক তার বন্ধু আবু সাঈদের মোটরসাইকেলে চড়ে বাড়ি ফিরছিল। পথে জাফরাবাদ বাগান বাড়ি এলাকায় অন্য মোটরসাইকেল অতিক্রম করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে গিয়ে দুইজন মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়। স্থানীয়রা তাদের দ্রুত কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পপুলার হাসপাতালে নিয়ে আসে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর ৬টায় দিকে অনিক মারা যায়। আবু সাঈদ ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বুকের পাঁজর ও কোমড়ের হাড় ভেঙে গেছে। 

আরো পড়ুন:

পঞ্চগড়ে রাতভর বর্ষণে স্লুইসগেটের সংযোগ সড়কে ধস

গাইবান্ধায় ট্রাকের ধাক্কায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে অনিকের মরদেহ ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের বাড়িতে আনা হয়েছে।

করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব মোর্শেদ জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রুমন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন সড়ক দ র ঘটন ন হত ক শ রগঞ জ জ ল দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারত-চীন সম্পর্কের আসলে কতটা উন্নতি হতে পারে

দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও চীন এখন ধীরে এবং সতর্কভাবে সম্পর্ক জোরদার করার পথে হাঁটছে। একদিকে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট আবার চালু করার আলোচনা, অন্যদিকে উচ্চপর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সফরের ধারাবাহিকতা—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনিশ্চিত নীতির প্রেক্ষাপটে সবই ঘটছে।

দুই দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত এমন কয়েকটি সূত্র জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আগামী সপ্তাহে নয়াদিল্লি সফরে যাবেন। সেখানে তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে হিমালয় সীমান্ত বিরোধ নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। ২০২০ সালে ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর এটি হবে দ্বিতীয় বৈঠক।

চলতি মাসের শেষ দিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীন সফরে যাচ্ছেন। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করবেন। সাত বছরের মধ্যে এটি হবে তাঁর প্রথম চীন সফর। চীনে তিনি সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন।

গত বছরের অক্টোবরে সীমান্ত টহল চুক্তির পর সম্পর্কের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বশেষ এসব ঘটনা ঘটছে। পাঁচ বছরের অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্কের অবনতির কারণে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আকাশপথে যোগাযোগ বেশ ব্যাহত হচ্ছিল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিগত কয়েক সপ্তাহে ভারত-চীনের সম্পর্কে বেশ উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার মধ্যে এই সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ট্রাম্প ভারতীয় রপ্তানির ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। ওয়াশিংটনের কৌশলগত অংশীদারদের মধ্যে এটি অন্যতম সর্বোচ্চ হার।

অন্যদিকে এ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন নিজেদের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ আরও ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছে। ফলে চীনের পণ্যের ওপর সম্ভাব্য তিন অঙ্কের শুল্ক এড়ানো গেছে।

চীন ও ভারত ইতিমধ্যে ২০২০ সাল থেকে স্থগিত থাকা সরাসরি ফ্লাইট আবার চালু করতে সম্মত হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাধা কমানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে হিমালয়ের তিনটি সীমান্তপথে বাণিজ্য আবার চালুর বিষয়ও রয়েছে।

গত অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে ১২ হাজার ৭০৭ কোটি ডলারের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের তুলনায় সীমান্ত বাণিজ্যের পরিমাণ বেশ কম। এরপরও সীমান্তপথ খুলে দেওয়াকে আবার চালু হওয়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নির্ধারিত সব বাণিজ্যপথের মাধ্যমে সীমান্ত বাণিজ্য আবার চালুর বিষয়ে আমরা চীনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়ন

চীন রয়টার্সকে জানায়, তারা সীমান্ত বাণিজ্য আবার চালু করতে প্রস্তুত। দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের জীবনমান উন্নয়ন এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সীমান্ত বাণিজ্য ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ রেখেছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, সরাসরি ফ্লাইট যত দ্রুত সম্ভব আবার চালুর জন্য বেইজিং নয়াদিল্লির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফ্লাইট চালুর বিষয়ে সঠিক সময়সীমা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

ইতিমধ্যে ভারতের সরকারি চিন্তন প্রতিষ্ঠান চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য বিনিয়োগের কঠোর নিয়ম শিথিল করার প্রস্তাব দিয়েছে, যা অতিরিক্ত যাচাইয়ের শর্ত তৈরি করেছিল। এটিকে দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততায় সম্ভাব্য পরিবর্তনের আরেকটি ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের সরকারি চিন্তক প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দিয়েছে, চীনা কোম্পানির বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত যাচাইয়ের নিয়ম কিছুটা যেন শিথিল করা হয়। দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কে সম্ভাব্য পরিবর্তনের আরেকটি ইঙ্গিত হিসেবে একে দেখা যাচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ