স্বামীর মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন কহিনুর বেগম (২৭), কোলে ছিল দেড় মাসের ছেলে রিসাত। পথে ইজিবাইকের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারায় মোটরসাইকেল। কোলে থাকা ছেলেসহ মহাসড়কের ওপর পড়ে যান কহিনুর। পেছন থেকে ট্রাক চাপা দেয় তাঁদের। মহাসড়কে পড়ে থাকে মা ও ছেলের নিথর দেহ।

দিনাজপুরের বিরামপুর পৌর শহরের সোনালী ব্যাংকের সামনে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে আজ শুক্রবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কহিনুর বেগম উপজেলার দিওড় ইউনিয়নের ধানঘরা গ্রামের গোলাম রব্বানীর স্ত্রী। তিনি হাকিমপুর উপজেলার খট্টা মাধবপাড়া ইউনিয়নের পরিবার কল্যাণ সহকারী ছিলেন। আর নিহত রিসাত কাইফ ওই দম্পতির ছেলে। খবর পেয়ে বিরামপুর ফায়ার সার্ভিস ও থানা-পুলিশ দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, হাকিমপুর উপজেলার শালপুকুর নামক গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে গোলাম রব্বানী মোটরসাইকেলে করে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে বিরামপুর পৌর শহরের সোনালী ব্যাংকের সামনে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি ইজিবাইকের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনজন মহাসড়কের ওপর পড়ে যান। এ সময় পেছন থেকে আসা পণ্যবাহী একটি ট্রাক তাঁর স্ত্রী ও ছেলের ওপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলে তাঁরা দুজন মারা যান। পরে স্থানীয় লোকজন থানা–পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন।

এ বিষয়ে বিরামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। দুর্ঘটনার পর পণ্যবোঝাই ট্রাক ও ইজিবাইকের চালক গাড়ি নিয়ে পালিয়েছেন। নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই দুজনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

এআই নিয়ে টার্মিনেটর সিনেমার পরিচালক জেমস ক্যামেরনের সতর্কবার্তা

১৯৮৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য টার্মিনেটর’ সিনেমা দেখেছেন অনেকেই। জেমস ক্যামেরনের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় সেই সিনেমায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির স্কাইনেট নামের একটি কাল্পনিক এআইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়, যেটি পুরো মানবজাতির অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিল। কাল্পনিক সেই এআইয়ের স্রষ্টা জেমস ক্যামেরন এবার বাস্তবের আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র, বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের ঝুঁকি নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার আশঙ্কা, এআই প্রযুক্তি লাগামহীনভাবে সামরিক প্রযুক্তিতে যুক্ত হলে মানবসভ্যতা টার্মিনেটরের মতো সর্বনাশের মুখে পড়তে পারে।

রোলিং স্টোন সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্যামেরন জানান, সামরিক ক্ষেত্রে এআইয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণের গতি মানুষের সক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের নিয়ন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও বিপর্যয় ঠেকানো সম্ভব নাও হতে পারে। মানবজাতি এখন একসঙ্গে তিনটি বড় সংকটের মুখে। এগুলো হলো জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ ধ্বংস, পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার এবং অতিবুদ্ধিমান এআই। এই তিনটি সংকট একই সময়ে তীব্র আকার ধারণ করছে, যা মানব ইতিহাসে আগে কখনো ঘটেনি।

স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে, এআই পারমাণবিক বিপর্যয়ের সমতুল্য দুর্যোগ ঘটাতে পারে বলে মনে করেন ৩৬ শতাংশ এআই গবেষক। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সম্মেলনে বিশেষজ্ঞেরা সতর্ক করে বলেছেন, খুব শিগগির এআই ও পারমাণবিক অস্ত্রের সমন্বয় প্রায় অনিবার্য হয়ে উঠতে পারে।

যুদ্ধাস্ত্রে এআই ব্যবহারের বিরোধিতা করলেও চলচ্চিত্র নির্মাণে এর সীমিত ও পরিকল্পিত ব্যবহারকে সমর্থন করেন ক্যামেরন। তার মতে, ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের ক্ষেত্রে এআই ব্যয় প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দিতে পারে। এআই সৃজনশীল প্রক্রিয়ার গতি বাড়ালেও চিত্রনাট্যকার বা অভিনেতার জায়গা নিতে পারবে না।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ