টিকটকের নীতিমালায় আসছে বড় পরিবর্তন, ভিডিও নির্মাতাদের যা মানতে হবে
Published: 17th, August 2025 GMT
আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে নিজেদের কমিউনিটি গাইডলাইনসে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ভিডিওভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক। এক ব্লগ বার্তায় টিকটকের গ্লোবাল হেড অব ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি সন্দীপ গ্রোভার জানিয়েছেন, ভ্রান্ত তথ্য বা মিথ্যা প্রচার ঠেকাতে নতুন নিয়ম চালু হচ্ছে। একই সঙ্গে বুলিং বা অনলাইন হয়রানিমূলক নীতিও স্পষ্ট করা হচ্ছে। টিকটকের নীতিমালা আরও সহজ, পরিষ্কার ও ব্যবহারবান্ধব করাই এই পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য।
বর্তমানে টিকটকে জরুরি পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি কোনো ভিডিও যাচাই ছাড়া ‘ফর ইউ ফিড’–এ দেখানো হয় না। নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, বড় ধরনের সংকট বা নাগরিক ঘটনা–সম্পর্কিত ভিডিওগুলোও যাচাইয়ের আগে একইভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। নতুন নীতিমালায় অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিচারস বিভাগেও বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে টিকটকে লাইভ চলাকালে যা কিছু ঘটবে, তার দায়ভার সম্পূর্ণভাবে নির্মাতার হবে। এমনকি ভয়েস–টু–টেক্সটের মতো তৃতীয় পক্ষের কোনো টুল ব্যবহার করে ক্ষতিকর মন্তব্য প্রচার করলেও দায় এড়াতে পারবেন না নির্মাতা।
বর্তমানে টিকটকের গাইডলাইনের মূল পেজে কনটেন্ট মডারেশন–সংক্রান্ত নিয়মগুলোর প্রাধান্য রয়েছে। নতুন নীতিমালায় নিরাপত্তা, মানসিক ও আচরণগত স্বাস্থ্য, সংবেদনশীল ও প্রাপ্তবয়স্ক বিষয়, সততা ও স্বচ্ছতা, বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও গোপনীয়তাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মানহীন ভিডিওর পাশাপাশি দুশ্চিন্তা বা ভয় ধরানো ভিডিওগুলো ব্যবহারকারীদের কাছে রিকমেন্ড করা হবে না।
মন্তব্যসংক্রান্ত নীতিতেও আসছে পরিবর্তন। টিকটক জানিয়েছে, আলোচনায় অশ্লীল ভাষা বা আক্রমণাত্মক বক্তব্য থাকলে, সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে সার্চ অপশনের নিচের দিকে সরিয়ে দেওয়া হবে। গ্রোভার জানিয়েছেন, নির্মাতা, বিশেষজ্ঞ ও আঞ্চলিক পরামর্শক কাউন্সিলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা ও মতবিনিময়ের ভিত্তিতেই এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নীতিমালা কার্যকর করতে মানবসম্পদ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
সূত্র: ম্যাশেবল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নত ন ন ত ম ল ট কটক র
এছাড়াও পড়ুন:
চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাচ্ছে জাপান
তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে তীব্র কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে জাপানের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে চীনকে শান্ত করতে এবং চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে বেইজিংয়ে জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে পাঠাচ্ছে টোকিও।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) জাপানের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
আরো পড়ুন:
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ২ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমান
শীতকাল এলেই ‘স্নো ফেইরি’ হয়ে যায় বরফের বলের মতো
প্রতিবেদনে বলা হয়, উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনার শুরু হয় জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্যকে ঘিরে। চলতি মাসের শুরুতে পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ চালায়, তাহলে তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি এবং জাপান সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।”
পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আগে থেকে কিছুটা বিরোধ থাকলেও,, জাপানের কর্মকর্তারা এতদিন প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করাটা এড়িয়ে চলতেন, কারণ এতে বেইজিং আরও ক্ষুব্ধ হতে পারে। গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে চীন।
জাপানের মিডিয়া সোমবার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ওসেনিয়া ব্যুরোর প্রধান মাসাআকি কানাই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লিউ জিনসংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে কানাই তাকে জানাবেন যে- তাকাইচির মন্তব্য জাপানের নিরাপত্তা নীতিতে কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না এবং একইসঙ্গে তিনি চীনকে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাবেন যা দুই দেশের সম্পর্কে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তাইওয়ান জাপানের পশ্চিমতম দ্বীপপুঞ্জ থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার (৬৮ মাইল) দূরে অবস্থিত এবং তেল ও গ্যাস সরবরাহের জন্য টোকিও নির্ভরশীল গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের কাছাকাছি অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জাপানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় অবস্থান রয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার বেইজিং সতর্ক করে বলেছিল, তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান সামরিক হস্তক্ষেপ করলে তারা ‘ভয়াবহ পরাজয়’ বরণ করবে। পাশাপাশি জাপানে ভ্রমণের বিরুদ্ধে চীনা নাগরিকদের সতর্কও করা হয়। আর এটি জাপানের পর্যটনব্যবসার জন্য বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।
জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “চীনের ভ্রমণ সতর্কতা ‘কৌশলগত, পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক উন্নয়নের বিস্তৃত দিকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। আমরা চীনা পক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দৃঢ় অনুরোধ করেছি।”
জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি এই সপ্তাহের শেষের দিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেতে পারেন, উভয়ই শুক্রবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘গ্রুপ অব ২০’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সোমবার নিউ তাইপেতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং-তে বলেন, চীন জাপানের বিরুদ্ধে ‘বহুমুখী আক্রমণ’ চালাচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানাচ্ছি। চীনকে সংযত আচরণ করার এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সমস্যা সৃষ্টিকারী না হয়ে একটি বড় শক্তির মতো দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”
ঢাকা/ফিরোজ