ফতুল্লা থানার পশ্চিম ইসদাইর হোসেন আহম্মদ সড়কটি যেনো খাল। অথচ এই সড়কের উপর দিয়েই প্রতি দিন চলাচল করছে ট্রাক, রিকশা, অটো রিকশা, সিএনজি সহ সব ধরনের যানবাহন। সড়কটির পাশে রয়েছে রপ্তনীমুখী গার্মেন্ট সহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা।

ফলে এই সড়কের চারপাশের এলাকায় বসবাস করে হাজার হাজার শ্রমিক। এছাড়া স্থানীয় এলাকাবাসীতো রয়েছেনই। তাদের সকলের চলাচলের এই একটিই রাস্তা। ফতুল্লার পুলিশ লাইন থেকে উত্তর দিকে যে রাস্তাটি গিয়েছে এই রাস্তার নামই হোসেন আহম্মদ সড়ক।

কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এই রাস্তাটি মেরামত করা হচ্ছে না। যার ফলে যা হবার তাই হয়েছে। রাস্তাটি রীতিমতো একটি নালা বা খালে পরিনত হয়েছে। কিন্তু বাধ্য হয়ে ওই এলাকার মানুষকে এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। 

এলাকাবাসী জানিয়েছে, উপজেলা প্রশাসন এলজিইডি’র মাধ্যমে এই রাস্তাটি মেরামত করার স্বিদ্ধান্ত নিয়েও করেনি। স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলার কারণে মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।

এ বিষয়ে এলাকার গার্মেন্ট মালিক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা কি পরিমান দূর্ভোগ পোহাচ্ছি নিজ চোখে না দেখলে বুঝা যাবে না। রাস্তাটি ভেঙ্গে রীতিমতো খালে পরিনত হয়েছে। তাই আমরা আমাদের গার্মেন্টের পন্য পরিবহন করতে পারছি না।

রাস্তায় কভার্ডভ্যান, ট্রাক আটকে যাচ্ছে। এতে পণ্য পরিবহনে বেশ কষ্ট হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষের চলাচলে দূর্ভোগেরতো কোনো সীমা নেই। 

তিনি আরো বলেন, এলজিইডি থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছিলো ড্রেন সহ এই রাস্তাটি মেরামত করা হবে। তার জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। পরে জানতে পারলাম এই বরাদ্ধ কেটে অন্যত্র নেয়া হয়েছে।

আসলে প্রশাসন কি করছে আমরা তা জানিনা। আমরা আশা করবো নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গুরুত্ব দিয়ে রাস্তাটি মেরামত করবেন। তিনি আরো বলেন আমি গত ১৩ আগষ্ট রাস্তাটি মেরামত করার জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নতুন করে আবেদন করেছি।

আশা করছি তিনি রাস্তাটি অতি দ্রুত মেরামত করে অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষকে এই দূর্ভোগ থেকে বাঁচানোর ব্যাবস্থা করবেন।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ এই র স ত

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৬৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সড়কটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় অনেক গর্ত। এসব গর্তের পাশ দিয়ে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি জানানো হলেও সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের দুই পাশে জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোথাও সড়কের পিচ উঠে গেছে, কোথাও আবার গর্তের গভীরতা এত বেশি যে, ছোট যানবাহন উল্টে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে দুর্ঘটনায় কলেজছাত্রের মৃত্যু, ট্রাকে আগুন

সিলেটে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ, বাবা-মেয়ে নিহত

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও, এর ওপরে নির্মিত পাকা সড়কটি সওজ বিভাগের আওতাধীন। এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর যানবাহন চলাচল করে।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক রোবেল হোসেন বলেন, ‍“নির্মাণের দুই-তিন বছর যেতে না যেতেই সড়কের দুই পাশে অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রতিদিন গাড়ি চালাতে হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।”

মোটরসাইকেল চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, “দিনে কোনোভাবে পার হওয়া যায়, কিন্তু রাতের পরিস্থিতি থাকে ভয়ঙ্কর। কারণ, অনেক সময় দূর থেকে গর্ত দেখা যায় না। এই সড়কে খুব ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।” 

পিকআপ ভ্যানের চালক আব্দুর রহমান বলেন, “কয়েক বছর না যেতেই রাস্তা গর্তে ভরে গেছে। রাতের বেলায় গর্তগুলো বোঝা যায় না, তাই সব সময় আতঙ্ক নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।”

কলাকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। এখন গর্তের কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত মেরামতের জন্য আমরা একাধিকবার জানিয়েছি।”

মতলব উত্তর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, “এই বেড়িবাঁধ শুধু মতলব নয়, পুরো অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক। তাই সওজ বিভাগের উদাসীনতা জনজীবনে ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্ষার আগেই এই সড়কটির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার জরুরি।”

চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “অতিবৃষ্টির কারণে গর্ত তৈরি হয়েছে। আমরা সড়কটি মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি।”

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, মতলব ব্রিজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। পশ্চিম অংশ এখনও ঠিকাদারের দায়িত্বে আছে, তাদেরকেও মেরামতের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চঃ দাঃ) সেলিম শাহেদ বলেন, “বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হলেও এর ওপরে থাকা পাকা সড়ক সওজ বিভাগের দায়িত্বে। বেড়িবাঁধের যদি কোথাও ক্ষতি হয়, আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেই; সড়ক সংস্কার কাজ সওজ বিভাগকেই করতে হয়।”

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, “বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা গেছে, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেন মরণফাঁদ
  • হাসপাতাল-স্কুলে যাওয়ার সড়কটি এমন বেহাল