‘আমি এনসিপির রাজনীতি করি, নিজেই জানি না’
Published: 17th, August 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রধান সমন্বয়কারী ফরহাদ হোসেন খান (৪৫) পদত্যাগ করেছেন। কমিটি গঠনের ৭৪ দিন পর আজ রোববার দুপুরে ডাকযোগে তিনি দলের মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বরাবর এ পদত্যাগপত্র পাঠান।
পদত্যাগপত্রের অনুলিপি জেলা এনসিপির আহ্বায়ক, নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও নগরকান্দা প্রেসক্লাবেও পাঠানো হয়। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়। ফরহাদ নগরকান্দা পৌরসভার নগরকান্দা মহল্লার বাসিন্দা।
পদত্যাগপত্রে ফরহাদ হোসেন খান উল্লেখ করেন, ‘গত ৪ জুন কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে নগরকান্দা উপজেলা সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে আমাকে প্রধান সমন্বয়ক পদ দেওয়া হয়। দুঃখের বিষয়, কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়া এই কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। তা ছাড়া আমাকে এই পদ দেওয়া হবে, এ ব্যাপারে আমাকে অবগত করা হয়নি। এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদস্বরূপ আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির নগরকান্দা উপজেলা শাখার এই কমিটির প্রধান সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করছি। একই সঙ্গে ঘোষণা করছি যে এর পর থেকে এনসিপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমার কোনো রকম সম্পর্ক থাকবে না।’
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরহাদ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যে এনসিপির রাজনীতি করি, আমি নিজেই জানি না। শুধু এনসিপি নয়, আমি কোনো রাজনৈতিক দলেরই সদস্য নই। আমাকে না জানিয়ে এই পদ দেওয়া হয়েছে।’ ৭৪ দিন পর কেন পদত্যাগ করলেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, পারিবারিক একটি মামলায় তিনি ২ জুন থেকে জেলে ছিলেন। জুলাইয়ের মাঝামাঝি মুক্তি পেয়ে আবার মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় অনেক দিন শয্যাশায়ী ছিলেন। তিনি পদে থাকার বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে তিন-চার দিন আগে জানতে পারেন। জানার পরপরই তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন।
জানতে চাইলে এনসিপির ফরিদপুর অঞ্চলের সংগঠক মো.
৪ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে ১২ সদস্যবিশিষ্ট নগরকান্দা উপজেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। এতে একজন প্রধান সমন্বয়কারী, চারজন যুগ্ম সমন্বয়কারী ও সাতজনকে সদস্য হিসেবে পদ দেওয়া হয়। এ কমিটির মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়, আগামী ৩ মাস অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগপর্যন্ত ওই কমিটি অনুমোদন করা হলো।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদত য গপত র ফরহ দ হ স ন নগরক ন দ এনস প র র জন ত সদস য উপজ ল স গঠক
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ডাকাত দলের ১৩ সদস্য গ্রেপ্তার
মাদারীপুরে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ডাকাতি হওয়া একটি পিকআপ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) দুপুরে জেলার রাজৈর থানায় সংবাদ বিবৃতির মাধ্যমে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) সালাহ উদ্দিন কাদের।
আরো পড়ুন:
ময়মনসিংহে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, গ্রেপ্তার ২
কুমিল্লায় ডাকাত সর্দার দুলালসহ ১৩ সদস্য গ্রেপ্তার
উদ্ধার হওয়া পিকআপটির মালিক খুলনার রুপসা উপজেলার শিরগাতি গ্রামের সরদার জাহাঙ্গীর আলম (৬২)। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় ফলের ব্যবসা করেন।
গ্রেপ্তার ডাকাতরা হলেন, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার খাটরা গ্রামের শাহ আলম শেখ (৪০), একই উপজেলার পরারন গ্রামের কবির চোকদার (৪৫), সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুরের জাকির খাঁ (৫০), ভাঙ্গার কাউলীবেড়া গ্রামের ইকরাম আলী মুন্সী (৩৫), পাতরাইল গ্রামের হৃদয় বয়াতি (২৩), নগরকান্দা উপজেলার মীরাকান্দা গ্রামের সুমন হোসেন মাতুব্বর (২৬), ঢাকার কেরানীগঞ্জের পুরান পাঁচদোনা আল আমিন (৪৫), কেরানীগঞ্জের ঘাটার চর এলাকার হাবিব (২৫), নগরকান্দার ছোট নাওডোবার ইকবাল হোসেন (৩৬), মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শংকরদী গ্রামের সুজন মাতুব্বর (২৭), কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার গুশ্বা গ্রামের সোহাগ ওরফে নোবেল (২৬), একই উপজেলার সাইটুটা গ্রামের ডালিম সরকার (৩০) ও স্বপন (২৫)।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খুলনার তেরখাদা থেকে তরমুজ নিয়ে মাদারীপুরের মস্তফাপুর ফলের আড়ৎয়ে যাচ্ছিল একটি পিকআপ। পথিমধ্যে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ব্রিজ এলাকার গঙ্গাবর্দী স্থানে আসলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর থেকে চালক-হেলপারকে মারধর করে তরমুজ ভর্তি পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
ওইদিন রাতেই রাজৈর থানায় ডাকাতি মামলা করা হয়। পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ডাকাত দলের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করে রাজৈর থানা পুলিশ। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ভাঙ্গা, সদরপুর, নগরকান্দা, কেরানিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অভিযান চালিয়ে আরো ছয় ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে আবার অভিযান চালিয়ে আরো পাঁচজনসহ ডাকাত দলের মোট ১৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একইসঙ্গে তাদের তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে ডাকাতি করা পিকআপটি উদ্ধার করা হয়। পরে রাজৈর থানা থেকে পিকআপ মালিককে খবর দেওয়া হয়।
পিকআপ মালিক ও ফল ব্যবসায়ী সরদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমার ডাকাতি হওয়া পিকআপটি রাজৈর থানার পুলিশ অনেক কষ্ট করে উদ্ধার করেছে। একইসঙ্গে ডাকাত দলও গ্রেপ্তার হয়েছে। আমি রাজৈর থানা পুলিশের জন্য দোয়া করি এবং তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। গ্রেপ্তার ডাকাতদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।”
মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) সালাহ উদ্দিন কাদের বলেন, “আমগ্রাম থেকে তরমুজ ভর্তি পিকআপ ডাকাতির ঘটনায় বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ধাপে ধাপে এ পর্যন্ত মোট ১৩ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি এবং তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পিকআপটিও উদ্ধার করেছি।”
তিনি বলেন, “এরা মুলত মহাসড়কে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। এর আগে আটজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছি এবং আজ আরো পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “ডাকাতি করা তরমুজগুলো ঢাকার যাত্রাবাড়ী নিয়ে বিক্রি করে দেয় ডাকাতরা। এরপর গাজীপুরের জয়দেবপুরে নিয়ে পিকআপটি লুকিয়ে রাখে।”
ঢাকা/বেলাল/মেহেদী