প্লাস্টিক উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি তারা ব্যক্তিগত সচেতনতা, বিকল্প উপকরণের ব্যবহার ও কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেন। 

রবিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে কক্সবাজারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মিলনায়তনে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এ মত দেন সরকারি কর্মকর্তা, এনজিও প্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মীরা।

জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইবনে মায়াজ প্রামাণিক বলেন, “অপরিচ্ছন্ন জীবনযাপনের কারণেই দেশে ডেঙ্গু, সর্দি-জ্বরসহ নানা রোগ বাড়ছে। প্লাস্টিক রিসাইকেল প্রক্রিয়া জোরদার করা জরুরি।” তিনি প্রতিটি দপ্তরকে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানান। 

ব্র্যাকের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, “প্রতিটি ঘরে আলাদা ডাস্টবিন থাকলেও তা ব্যবহৃত হয় না। আবার সিটি করপোরেশনও ময়লা সংগ্রহের পর সবকিছু একসঙ্গে ফেলে দেয়। প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে শুধু জনদুর্ভোগ নয়, সামুদ্রিক সম্পদও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাছের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।”

দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, “উৎপাদন কমানো না গেলে এর ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব নয়।”

ইউএনডিপির প্রকল্প উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ দ্বীপক কে সি বলেন, ‘‘উৎপাদন বন্ধের পাশাপাশি প্লাস্টিক ও পলিথিনের বিকল্প খুঁজে বের করা জরুরি।’’ 

তবে স্থানীয় সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মীরা বলেন, ‘‘সরকারি দপ্তর ও এনজিওগুলোর অনেক উদ্যোগই লোক দেখানো।’’ 

এর আগে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেন। পরে তারা প্ল্যাকার্ড হাতে নীরব অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন এবং শপথ নেন ‘রিফিউজ পলিথিন’।

গোলটেবিল বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা, মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের প্রধান ড.

আফতাব হোসেন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাবিল খান। 

ঢাকা/তারেকুর/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাজি হয়েছেন পুতিন: ট্রাম্পের দূত

ইউক্রেনকে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাজি হয়েছেন। রোববার সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। এটিকে মোড় বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় বৈঠক করেন ট্রাম্প ও পুতিন। ওই বৈঠক থেকে যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির ঘোষণা আসবে বলে আশা করা হচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত এমন কিছু ঘটেনি। কোনো চুক্তি ছাড়াই মস্কো ফিরে যান পুতিন। আর কয়েক দিন আগেও দ্রুত যুদ্ধবিরতির কথা বলা ট্রাম্প সুর বদলে বলেন, যুদ্ধ বন্ধের চুক্তি রাশিয়া ও ইউক্রেনকে করতে হবে।

এরপর সোমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প। সেখানে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নেতারা যোগ দেবেন। তাঁদের আহ্বান—যুদ্ধ বন্ধের কোনো চুক্তির ক্ষেত্রে যেন ইউক্রেনের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রাখা হয়।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে পুতিনের রাজি হওয়ার বিষয়টি সামনে আনলেন উইটকফ। সিএনএনকে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার বিষয়টিতে রাজি হয়েছেন পুতিন। একে আমি মোড় বদলে দেওয়ার মতো ঘটনা বলে উল্লেখ করব।’

উইটকফ বলেন, ‘আমরা একমত হয়েছি যে ইউক্রেনকে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য দেশগুলো অনুচ্ছেদ–৫–এর মতো ভাষা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারবে।’ অনুচ্ছেদ–৫ বলতে উইটকফ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর বিধানের পাঁচ নম্বর অনুচ্ছেদের কথা বুঝিয়েছেন।

এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জোটের কোনো সদস্যদেশ আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। অনেক আগে থেকেই ন্যাটোর সদস্য হতে চায় ইউক্রেন। তবে এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাশিয়ার। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর অন্যতম প্রধান কারণ ছিল, ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা।

সোমবার ট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠক থেকে ভালো কিছুর আশা করছেন স্টিভ উইটকফ। তিনি বলেন, আলাস্কা থেকে ফেরার পথে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের খুঁটিনাটি আলাপ হয়েছে। ওয়াশিংটনে সোমবারের বৈঠক ফলপ্রসূ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ