চট্টগ্রাম নগরে সড়ক থেকে মাছভর্তি একটি পিকআপ ভ্যান ডাকাতির পর নেওয়া হয় সাগরপাড়ে। সেখানে ডাকাতি করা মাছ বিক্রি করে দেয় ডাকাত দল। পরে পিকআপ ভ্যানটি ডাকাত দল নিয়ে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। এরপর গাড়িটি কেটে টুকরা টুকরা করে পুকুরে ডুবিয়ে রাখেন ডাকাত দলের এক সদস্য। পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গত ২৭ আগস্ট রাত একটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানার লতিফপুর টোল রোডে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির ঘটনায় পাঁচ দিনের মাথায় পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে। আদালতে তিনি এ ঘটনার বিবরণ দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর তাঁর তথ্যের সূত্র ধরে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কেটে ফেলা পিকআপ ভ্যানটির ১০টি টুকরাও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

রায়হান মূলত ডাকাতি হওয়া গাড়ি কেটে টুকরা টুকরা করে বিক্রি করেন। তিনিও ডাকাত দলের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। কেউ যাতে এসব টুকরা খুঁজে না পায়, সে জন্য পুকুরে লুকিয়ে রাখতেন তিনি। পরে গ্রাহক খুঁজে টুকরা করে বিক্রি করতেন।আরিফুর রহমান, ওসি, আকবরশাহ থানা

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ৩২ মণ ইলিশ চট্টগ্রামের বাঁশখালী থেকে কিনে নিয়ে পিকআপ ভ্যানটিতে করে নোয়াখালী নিয়ে যাচ্ছিলেন মাছ ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন। চট্টগ্রাম নগরের লতিফপুর এলাকায় ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্রের মুখে পিকআপ ভ্যানটি ডাকাতি করেন। তখন পিকআপ ভ্যানে গাড়িচালক ও কামাল উদ্দিনসহ চারজন ছিলেন। তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে তিন ঘণ্টা পাশের একটি জঙ্গলে বসিয়ে রাখে ডাকাত দল। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। পরদিন কামাল উদ্দীন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে এ ঘটনায় আকবর শাহ থানায় মামলা করেন।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি এমন স্থানে ঘটেছে যেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। কোনো সূত্রও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে ভুক্তভোগীদের একজন জানান, জঙ্গলে বসিয়ে রাখার সময় তিনি শুনেছেন ডাকাত দলের একজন বলছেন—‘তাঁদের (ভুক্তভোগীদের) আমাদের খালেকের টং চায়ের দোকানের সামনে নামিয়ে দাও’। এ কথার সূত্র ধরে খালেকের টং চায়ের দোকানটি খুঁজে বের করে সন্দেহবশত মো.

দীপু নামে স্থানীয় এক বাসিন্দাকে আটক করা হয়, যাঁর বিরুদ্ধে ডাকাতির ঘটনায় আগেও মামলা রয়েছে। এরপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ডাকাত দলের বিষয়ে খোঁজ মেলে। দীপু ছাড়া গ্রেপ্তার হওয়া অপর চারজন হলেন মো. মাহফুজ, বশির আহাম্মদ, মো. রায়হান ও আবু বক্কর। এর মধ্যে রায়হানের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাকিরা নগরের আকবরশাহ ও এর পার্শ্ববর্তী উপজেলা সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারির বাসিন্দা।

ঘটনাটি এমন স্থানে ঘটেছে, যেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। কোনো সূত্রও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে ভুক্তভোগীদের একজন জানান, জঙ্গলে বসিয়ে রাখার সময় তিনি শুনেছেন ডাকাত দলের একজন বলছেন, ‘তাঁদের (ভুক্তভোগীদের) আমাদের খালেকের টং চায়ের দোকানের সামনে নামিয়ে দাও’।

আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার রায়হান মূলত ডাকাতি হওয়া গাড়ি কেটে টুকরা টুকরা করে বিক্রি করেন। তিনিও ডাকাত দলের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে। কেউ যাতে এসব টুকরা খুঁজে না পায়, সে জন্য পুকুরে লুকিয়ে রাখতেন তিনি। পরে গ্রাহক খুঁজে টুকরা করে বিক্রি করতেন। ওসি বলেন, ডাকাত দলটির নেতা মো. আজাদ নামে এক ব্যক্তি। তাঁকেসহ দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আকবর শাহ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রবিউল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাতির ঘটনায় প্রথমে গ্রেপ্তার হওয়া দীপু আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন—আজাদের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতির পর গাড়িটি চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে যান আবু বকর। রবিউল হোসেন আরও বলেন, গাড়িতে চালকের আসনের নিচে একটি মুঠোফোন রয়ে যায়। সেটিও রায়হানের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ডাকাতির শিকার পিকআপ ভ্যানটির চালক নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাধারণত ডাকাতেরা গাড়িতে থাকা মালামাল ডাকাতি করে। ইলিশ মাছ ডাকাতি করে গাড়িটি দিয়ে দেবে ভেবেছিলাম, কিন্তু তারা ৩২ মণ মাছসহ পিকআপটিও নিয়ে যায়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে আমাদের। কোনো রকমে প্রাণে বেঁচে এসেছিলাম। আমি ডাকাতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড় য় আকবর শ হ থ ন ড ক ত র ঘটন প কআপ ভ য ন ড ক ত দল র র একজন প রথম সদস য ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

প্রসূনের কাছে পরীমণির দুঃখ প্রকাশ

জন্মদিন উপলক্ষে টানা উৎসবের মেজাজে রয়েছেন ঢাকাই সিনেমার আলোচিত নায়িকা পরীমণি। মালয়েশিয়া সফর শেষে ঢাকায় ফিরেই রাজধানীর পল্লবীতে সাংবাদিক ও সহকর্মীদের জন্য পার্টির আয়োজন করেন পরীমণি। দাওয়াত পেয়ে পার্টিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানান লাক্স তারকা অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ। 

গতকাল থেকে বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর চর্চা চললেও নীরব ছিলেন পরীমণি। অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন আলোচিত এই নায়িকা। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) রাতে তার ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন পরীমণি। 

আরো পড়ুন:

পরীমণির পার্টিতে গিয়ে প্রসূনের ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা

প্রশ্ন করবেন না, সব বলে দেব: পরীমণি

লেখার শুরুতে পরীমণি বলেন, “প্রিয় প্রসূন আজাদ, আপনি আমাকে নিয়ে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাসে লিখেছেন যে, ‘আমি আমার লোক দেখানো পার্টিতে আপনাকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসে অপমান করেছি!’ আপনি এ-ও বলেছেন, ‘আমি আমার নাম রৌশন করতে টাকা দিয়ে কতগুলো সান্ডা সান্ডা পান্ডা লোক রাখি, তারা অনুষ্ঠানে আসা গেস্টদের জিজ্ঞেস করেন যে, তারা কারা!’ 

প্রসূনের কাছে প্রশ্ন রেখে পরীমণি বলেন, “আচ্ছা আপু, সত্যিই কি তোমার মনে হয় আমি তোমাকে ছোট ফিল করানোর জন্য তোমাকে আমার একটা স্পেশাল ইভেন্টে ইনভাইট করব? কখনোই না বোন। তুমি নিজেও জানো আমি তোমাকে কতখানি পছন্দ করি। আমাদের কখনো দেখা হয়নি। তোমার একটা টিভি ইন্টারভিউ দেখে মুগ্ধ হয়ে আমি সাংবাদিক ইমু ভাইয়ের কাছ থেকে তোমার ফোন নাম্বার নিয়ে তোমাকে কল করেছিলাম। সেদিন কত কথা হলো আমাদের! তোমার মনে আছে, আমি তোমাকে প্রথম কী বলেছিলাম!” 

“বলেছিলাম, তুমি একজন পিওর সোল। সত্যিকারের একজন খাঁটি মানুষ তুমি। তোমার বাচ্চাদের নিয়ে তোমার এই জার্নি সত্যিই আমাকে মুগ্ধ করে। তুমি একটা ইন্সপারেশন। তোমার খারাপ লেগেছে তুমি আমাকে একটা টেক্সট তো করতে পারতা আপু!” বলেন পরীমণি।

অনুষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীদের ব্যাপারে পরীমণি বলেন, “যাইহোক, আমার ওই অনুষ্ঠানে আমার হায়ার করা কোনো মানুষ ছিল না; যারা ছিলেন তারা ওই প্রতিষ্ঠানের ম‍্যানেজমেন্ট থেকে ছিলেন। তারা কাউকে অপমান বা অসম্মান করার জন্য অ‍্যাপয়েন ছিলেন না। তারা আমি এবং আমার সমস্ত গেস্টদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতেই গেটে ছিলেন। ভাবুন তো, ওনারা গেটে এই সিকিউরিটি না দিলে ওই জায়গায় কী জনসাধারণের ভীড় ঠেকানো যেত? না কি এত সুন্দর শৃঙ্খল পরিবেশে পুরো অনুষ্ঠানটা শেষ করতে পারতাম! তারা কেবল তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন।”

দুঃখ প্রকাশ করে পরীমণি বলেন, “আপনি নিশ্চয়ই দেখে থাকবেন, যারা ওই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তারা সবাই নিজ নিজ অবস্থানে কত বড় মানুষ। তারা কিন্তু কেউ ছোট ফিল করেননি। আপনি জানেন না হয়তো তাহলে, এই দেশের প্রচুর মানুষ এখনো আমার নাম জিজ্ঞেস করেন। এই তো সেদিন সিজেএফবির অনুষ্ঠানে আমাকে ইউরোর চেয়ারম্যান বললেন কি নাম তোমার? আমি তাতে মোটেও অবাক হইনি। বরং আমার ভালো লাগে আমার নাম বলতে। আমি পরীমণি। আমি খুবই দুঃখিত আপনার কাছে।”

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মেরিনার কাজে প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়’
  • ভারতের নির্বাচনে ব্রাজিলের মডেল কীভাবে ‘২২ বার ভোট’ দিলেন
  • জাহানারার পাশে বাংলাদেশ, কিন্তু…
  • গাজীপুরের সাফারি পার্ক থেকে লেমুর চুরির ঘটনায় একজন গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামের হালিশহরে নিজ বাড়ির সামনে ছুরিকাঘাতে যুবক খুন
  • আলব্যের কামুর দর্শন, চরিত্র ও পাঠক
  • প্রসূনের কাছে পরীমণির দুঃখ প্রকাশ
  • আকবরের ৯ বলে ৩২ রান, শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ
  • পার্বত্য অঞ্চলে ক্রিকেটের উন্নয়নে কাজ করার অঙ্গীকার আসিফের
  • এক সময় ছিলেন এক গুরুর শিষ্য, দ্বন্দ্বে জড়িয়ে খুন দুজনই