‘যারা বলে আমি ফুরিয়ে গেছি, তাদের দেখিয়ে দিলাম’
Published: 24th, September 2025 GMT
২০১৩ সাল থেকে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন মাবিয়া আক্তার। ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় এখন যেন তিনি নিজের সঙ্গেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৪১তম পুরুষ ও ১৮তম মহিলা জাতীয় সিনিয়র ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় আজ তিনি তুললেন ২১০ কেজি। আনসারের এই ভারোত্তোলক আবারও ছাড়িয়ে গেলেন নিজেকে।
গত বছরের মার্চে জাতীয় প্রতিযোগিতায় স্ন্যাচে ৮১ ও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৯৯ কেজি মিলিয়ে তুলেছিলেন ১৮০ কেজি। এরপর নভেম্বরে আন্তসার্ভিস প্রতিযোগিতায় ভাঙেন নিজেরই রেকর্ড। সেবার স্ন্যাচে ৮৫ আর ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১১ কেজি—মোট ১৯৬ কেজি তুলে গড়েন নতুন জাতীয় রেকর্ড।
এবার সেই রেকর্ডও ভেঙে দিলেন আনসারের এই ভারোত্তোলক। হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে তিনি স্ন্যাচে ৯২ কেজি এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ১১৮ কেজি তুলে মোট ২১০ কেজি ওজন তুলেছেন।
আরও পড়ুন‘টংঘরে থাকতাম, সবজির ঝুড়ি বাজারে নিয়ে বাবার সঙ্গে বিক্রি করেছি’১৯ আগস্ট ২০২৫নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আনন্দ লুকাননি মাবিয়া। প্রথম আলোকে মাবিয়া বলেন, ‘যারা বলে আমি ফুরিয়ে গেছি, তাদের দেখিয়ে দিলাম। আমি আরও এগোতে চাই। এমন রেকর্ড গড়তে চাই, যেন মানুষ আমাকে অনেক দিন মনে রাখে।’
ওজন তুলছেন মাবিয়া আক্তার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র কর ড
এছাড়াও পড়ুন:
জগন্নাথের শিক্ষার্থী নূরনবী ক্যানসারে আক্রান্ত, ফুল বিক্রি করে সহায়তার উদ্যোগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মীর নূরনবী কয়েক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন। তবে অর্থসংকটে বন্ধ রয়েছে তাঁর চিকিৎসা। এ সংকট সমাধানে নূরনবীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীরা। এ জন্য ক্যাম্পাসে ফুল বিক্রি করা হচ্ছে। সেই অর্থ তুলে দেওয়া হবে নূরনবীর চিকিৎসায়।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে হেঁটে হেঁটে শিক্ষার্থীদের কাছে ফুল বিক্রি করে নূরনবীর চিকিৎসা বাবদ অর্থ সংগ্রহ করতে দেখা যায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা–কর্মীদের। সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্যের চত্বরে টেবিল–চেয়ার পেতে ফুল বিক্রি করেন তাঁরা। এরপর শহীদ মিনার, কলা অনুষদ, সামাজিক অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের প্রাঙ্গণে হেঁটে হেঁটে শিক্ষার্থীদের কাছে ফুল বিক্রি করে নূরনবীর জন্য অর্থ সহায়তা নেওয়া হয়।
নূরনবী বর্তমানে স্নাতক চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। ২০১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর তাঁর শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। পরে বাঁ পা কেটে ফেলতে হয়। কিন্তু পড়াশোনায় হাল ছাড়েননি নূরনবী। অদম্য সাহস ও স্বপ্ন নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তি হন। প্রতিদিন সাভার থেকে বাসে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নিয়মিত ক্লাস করেন তিনি। এরই মধ্যে সাতটি সেমিস্টার শেষ করেছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ক্যানসার এখন নূরনবীর ফুসফুসেও ছড়িয়ে পড়েছে।
ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আল শাহরিয়ার বলেন, ‘সবার সহায়তা নূরনবীর জন্য নতুন জীবনের আলো নিয়ে আসতে পারবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রচারণার কাজ করছি। বিভিন্ন জায়গায় দেয়ালিকা লাগানো হয়েছে। সামনে আরও নতুন কিছু অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আসুন, মানবতার বন্ধনে আমরা সবাই এক হয়ে নূরনবীর পাশে দাঁড়াই।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র অধিকারের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘অনেকেই অনেকভাবে নূরনবীর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছে। আমরা ভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহের চিন্তা করলাম। ফুলের বিনিময়ে অর্থ সাহায্যের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বেশ সাড়া পাচ্ছি। শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বেশ আন্তরিকতা দেখিয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নূরনবীকে সহায়তা করা হবে কি না—জানতে চাইলে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক কে এ এম রিফাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রকল্যাণ দপ্তর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোনো বরাদ্দ নেই। এখানে যে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটা শুধু দাপ্তরিক কাজে খরচ হয়। এখন নূরনবীর চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কনসার্ট আয়োজন করতে চেয়েছে তার সহপাঠীরা। সে ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা করব।’