কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে ইউক্রেন ও সিরিয়া
Published: 25th, September 2025 GMT
সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে বৈঠক করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরপরই তিনি সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ঘোষণা দেন।
সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও স্বৈরশাসক বাশার আল–আসাদের আমলে এ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল।
এ বছরের আগে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে সিরিয়া সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে অংশ নেয়নি। যুদ্ধে সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের গোলান মালভূমি দখল করে ইসরায়েল।গতকাল বুধবার নিউইয়র্কে দুই নেতার ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানিও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বলে সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রাশিয়া–সমর্থিত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিজেদের স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তাদের স্বীকৃতি দেন। এর জেরে ২০২২ সালে সিরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে ইউক্রেন।
ইউক্রেনের ঘোষণার পরপর সিরিয়াও কিয়েভের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছিল।
জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন ও সিরিয়া কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা বিষয়ে একটি যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা এ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই এবং সিরিয়ার জনগণের স্থিতিশীলতার পথে পাশে থাকতে প্রস্তুত।’
সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা–ও জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি লেখেন, ‘সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে আলোচনার সময় আমরা কোন কোন খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে, উভয় দেশের ওপর যেসব নিরাপত্তা হুমকি রয়েছে, সেগুলো নিয়ে এবং তা মোকাবিলার গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।’
আমরা এ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই এবং সিরিয়ার জনগণের স্থিতিশীলতার পথে পাশে থাকতে আমরা প্রস্তুত।ভলোদিমির জেলেনস্কি, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টজাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে যোগ দিতে একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে গত রোববার নিউইয়র্কে পৌঁছান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। প্রায় ছয় দশকের মধ্যে এই প্রথম সিরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্ট এ সম্মেলনে যোগ দিলেন।
এ বছরের আগে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর থেকে সিরিয়া আর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট পর্যায়ে যোগ দেয়নি। যুদ্ধে সিরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের গোলান মালভূমি দখল করে ইসরায়েল।
আরও পড়ুনসিরিয়ায় ৫ অক্টোবর পার্লামেন্ট নির্বাচন২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫আল-শারার আগে সর্বশেষ সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট নুরউদ্দিন আল-আতাসি জাতিসংঘের এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৬৬ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।
আরও পড়ুনসিরিয়ায় ‘ব্যর্থ’ আল-শারা, নির্বাচন কি শাপে বর হবে ২৩ আগস্ট ২০২৫আরও পড়ুনযে মার্কিন জেনারেল একদিন গ্রেপ্তার করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে সাক্ষাৎকার দিলেন আল-শারা২২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প র ইসর য় ল দ আল শ আল শ র
এছাড়াও পড়ুন:
নিউইয়র্ক সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগদান শেষে নিউইয়র্ক থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফিরেছেন।
নয় দিনের নিউইয়র্ক সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেন। এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে আজ সকাল ৯টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এই তথ্য জানান।
এর আগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা যুক্তরাষ্ট্রের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি সালাহউদ্দিন নোমান চৌধুরী ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক এমদাদ আরিফুল ইসলাম বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান।
সফরকালে গত ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুর পরিস্থিতিবিষয়ক’ উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
২৯ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর অবস্থান করা হোটেলে সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি। একই দিন জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ এবং ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রপুঞ্জবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমাও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
নিউইয়র্ক সফরে মুহাম্মদ ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন। তিনি ট্রাম্পকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এ ছাড়া মুহাম্মদ ইউনূস নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, ভুটান, কসোভোসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র-সরকারপ্রধানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
প্রধান উপদেষ্টা গত ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন।