প্রেম করে বিয়ের ৬ মাস পর লাশ হলেন সাদিয়া, স্বামী পলাতক
Published: 26th, September 2025 GMT
প্রেম করে প্রায় ছয় মাস আগে সাদিয়া ইসরাত মীমকে (২১) বিয়ে করেছিলেন দীন মোহাম্মদ (২২)। শুক্রবার ( ২৬ সেপ্টেম্বর) নোয়াখালী জেলা শহরের মাইজদীর ফকিরপুর এলাকার ভাড়া বাসা থেকে সাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার পর তার স্বামী পলাতক।
সাদিয়া ইসরাত মীম হাতিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সাব্বির হোসেনের মেয়ে ও চট্টগ্রাম মহসিন কলেজের ছাত্রী ছিলেন। দীন মোহাম্মদ লক্ষ্মীপুর জেলার নূর মোহাম্মদের ছেলে ও নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে চাচিকে গলা কেটে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার
প্রতিবেশীর সেপটিক ট্যাংকে মিলল নিখোঁজ শিশুর লাশ
নিহতের বাবা সাব্বির হোসেন জানান, নোয়াখালী কলেজে পড়ার সময় মীম ও দ্বীন মোহাম্মদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল তাদের বিয়ে হয়। এরপর থেকে তারা মাইজদী শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছিল। শুক্রবার সকালে দ্বীন মোহাম্মদ মীমের খালাতো বোন জুঁই ও আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, মীম হয়তো বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। আপনারা দ্রুত বাসায় আসেন, আমি গাড়ির জন্য বের হয়েছি। এরপর থেকে তার খোঁজ নেই। খবর পেয়ে জুঁই দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মেঝেতে সাদিয়ার লাশ পড়ে থাকতে দেখে ডাক-চিৎকার করে। পরে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই মোনায়েম হোসেন শোভন বলেন, ‘‘খবর পেয়ে গিয়ে দেখি, আমার বোনের লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, তার স্বামী লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যাচ্ছেন। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে, এখনো জানি না।’’
নিহতের আরেক খালাতো বোন শ্রেষ্ঠা বলেন, ‘‘একই বাসায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভা নামের আরেক ছাত্রী সাবলেট থাকত। ঘটনার পর থেকে তিনিও নেই। ফোন দিলে জানান, ঢাকায় যাচ্ছেন। আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামী হত্যা করেছেন।’’
সুধারাম মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু তাহের বলেন, ‘‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই তরুণী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হবে। পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/সুজন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ ন ম হ ম মদ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
বন্ধুকে আসামি করে মামলা করলেন নিহতের বোন
রংপুরের কাঁচামাল ব্যবসায়ী আশরাফুল হক। তিন দিন আগে বন্ধু জরেজ মিয়ার সঙ্গে ঢাকা আসেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহের সামনে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে আশরাফুলের ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত আশরাফুলের বন্ধু মো. জরেজকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করেছে নিহতের পরিবার।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) নিহতের ছোট বোন মোছা. আনজিরা বেগম শাহবাগ থানায় বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ খালিদ মনসুর মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তিনি জানান, নিহত আশরাফুলের বন্ধু জরেজকে প্রধান আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন আনজিরা বেগম। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত চলছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এজাহারে আনজিরা বেগম লিখেছেন, তার বড় ভাই আশরাফুল হক দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে সারা দেশে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন।
গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে আসামি জরেজকে নিয়ে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর থেকে আশরাফুলের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। স্বজনদের সন্দেহ, আসামি জরেজ তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামিদের সহযোগিতায় গত ১১ নভেম্বর রাত থেকে ১৩ নভেম্বর রাতের মধ্যে যে কোনো সময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আশরাফুলকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। হত্যার পর মরদেহ মোট ২৬টি খণ্ডে খণ্ডিত করে গুম করার উদ্দেশ্যে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে রেখে অজ্ঞাতস্থানে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা।
নিহত জাকিরের বোনের স্বামী জাকির হোসেন বলেন, “১১ নভেম্বর রাতে একসঙ্গে রংপুর থেকে ঢাকায় আসেন আশরাফুল ও জরেজ। এরপর থেকে জরেজকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আশরাফুল ও জরেজ বন্ধু। তারা একসঙ্গে ব্যবসা করতেন।”
জরেজের কাছে নিহত আশরাফুল টাকা পেতেন কি-না জানতে চাইলে জাকির বলেন, “টাকা-পয়সার বিষয়টি এখনো জানি না। আমরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।”
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পুলিশ এসে ড্রাম দুটি খুলে অজ্ঞাতপরিচয় এক পুরুষের খণ্ডিত মরদেহ দেখতে পায়। তখন মরদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। পরে দুটি নীল রঙের ড্রাম থেকে মরদেহ বের করা হয়। ড্রামের মধ্যে চাল ছিল এবং কালো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ছিল মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো।
ঢাকা/এমআর/এসবি