বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, তবু থেমে নেই প্রচারণা
Published: 26th, September 2025 GMT
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা হয়েছে। তবে থেমে নেই চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রচারণা আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে প্রার্থীরা প্রচারণায় মেতে ওঠেন।
আজ বিজ্ঞান অনুষদের মসজিদে নামাজ আদায় করেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। মসজিদটি চাকসু ভবনের পাশেই। পরে নামাজ শেষে প্রার্থীরা একত্র হয়ে কুশল বিনিময় করেন। শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট চান।
ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্প্রীতি শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী সাইদ বিন হাবিব, ছাত্রদলের প্যানেলের জিএস প্রার্থী মো.
ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল জিএস প্রার্থী সাইদ বিন হাবিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ভোট ও দোয়া চাইছি। শিক্ষার্থীরা দারুণভাবে সাড়া দিচ্ছে। গতকাল প্যানেলের অনেকেই একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছি।’
ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী শাফায়াত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত। আমরা প্যানেল নিয়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর দুয়ারে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তাঁদের আশ্বস্ত করছি।’
আরও পড়ুনচাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী ৯০৭ জন, প্রত্যাহার করেছেন ২০ জন২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫আগামী ১৫ অক্টোবর চাকসুর সপ্তম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার ভোটার ২৭ হাজার ৫২১ জন। নির্বাচনে লড়তে ১৩টি প্যানেল করেছে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এসব প্যানেলের মধ্যে লড়াই জমে উঠবে বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সংগঠন ও প্রার্থীদের অতীত ইতিহাস, বর্তমান কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। কোনো সংগঠনের নামে ভোট পড়বে না।
ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাসান জুবাইর প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এর পর থেকে ক্যাম্পাসের পরিবেশ পাল্টে যায়। এখন অনেক সংগঠনই স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যা আগে দেখা যায়নি। এখন সুষ্ঠু ভোটের অপেক্ষা।
এক প্যানেলের ইশতেহার ঘোষণা
১৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে ‘রেভল্যুশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি’ নামের একটি প্যানেল। প্যানেলটি ‘বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট’–সমর্থিত।
আজ চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ইশতেহার ঘোষণা করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের শাখা সভাপতি জুয়েনা সুলতানা। আর যৌথভাবে ইশতেহার উপস্থাপন করেন প্যানেলের ভিপি প্রার্থী কেফায়েত উল্লাহ ও জিএস প্রার্থী কাজী শাহরিয়ার উল্লাহ। তাঁরা বলেন, দলীয় আধিপত্যমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলা এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করাই তাঁদের মূল অঙ্গীকার।
১৭ দফা ইশতেহারের মধ্যে রয়েছে, অনলাইন ভোটিং সিস্টেম চালু, নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তোলা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পূর্ণ ডেটাবেজ তৈরি ও সব প্রশাসনিক কার্যক্রম অনলাইনভিত্তিক করা, গুপ্ত রাজনীতি বিলুপ্ত করে বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একাডেমিক রাজনীতি চালু, অভিযোগ-পরামর্শের জন্য ‘অভিযোগ সেল’ গঠন।
আরও পড়ুনচাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হলেন একমাত্র বম শিক্ষার্থী২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমর থ ত ইশত হ র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত