বিএনপি ও জামায়াতের টানাপোড়েনে এনসিপির ভাবনায় নতুন মোর্চা
Published: 27th, September 2025 GMT
এনসিপি আগামী নির্বাচনে একা নাকি জোটগতভাবে অংশ নেবে; বিএনপি বা জামায়াতের আসন সমঝোতায় যাবে নাকি আলাদা জোট করবে—এ নিয়ে রাজনীতিতে নানা আলোচনা রয়েছে।
দলটির ভেতরের সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—দুই দলের সঙ্গেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু পথচলার শুরুতেই দলটি কোনো বড় দল বা মতের ‘ট্যাগ’ গায়ে লাগাতে চায় না। তারা ‘মধ্যপন্থী’ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিতি দাঁড় করিয়ে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করতে চায়। এমন চিন্তা থেকে সমমনা বা কাছাকাছি মনোভাবের বিভিন্ন দলকে নিয়ে পৃথক নির্বাচনী মোর্চা করার কথা ভাবছে তারা।
এনসিপির গুরুত্বপূর্ণ তিনজন নেতা প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁরা তৃতীয় একটি জোট বা সমঝোতায় থাকতে চান। তবে নির্বাচনে কোথাও কোথাও বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে আসনভিত্তিক সমঝোতা হতে পারে।
পথচলার শুরুতেই এনসিপি কোনো বড় দল বা মতের ‘ট্যাগ’ গায়ে লাগাতে চায় না। তারা ‘মধ্যপন্থী’ দল হিসেবে নিজেদের পরিচিতি দাঁড় করিয়ে একটি স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করতে চায়।জামায়াতের সঙ্গে সুসম্পর্ক, তবু আলাদা পথেজাতীয় ঐকমত্য কমিশনে সংস্কারের বিভিন্ন আলোচনায় অনেকটা কাছাকাছি অবস্থানে ছিল জামায়াত ও এনসিপি। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়েও এই দুই দলের অবস্থান বিএনপির চেয়ে ভিন্ন। এ ছাড়া এনসিপির সঙ্গে জামায়াতের একধরনের ‘সুসম্পর্ক’ নিয়েও রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে।
কিন্তু চলতি মাসে কিছু অভিন্ন দাবিতে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ সাতটি রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে এনসিপির যুক্ত না হওয়ায়, এ নিয়ে ভিন্ন আলোচনা তৈরি করেছে। সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে এই আন্দোলনে এনসিপিকেও রাখার চেষ্টা ছিল। এনসিপির এক শীর্ষ নেতার বাসায় জামায়াতসহ সংশ্লিষ্ট অন্য দলগুলোর নেতারা বৈঠকও করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এনসিপি এই আন্দোলনে যায়নি।
চলতি মাসে কিছু অভিন্ন দাবিতে জামায়াত, ইসলামী আন্দোলনসহ সাতটি রাজনৈতিক দলের আন্দোলনে এনসিপির যুক্ত না হওয়ায়, এ নিয়ে ভিন্ন আলোচনা তৈরি করেছে।বিএনপির ওপর চাপ তৈরি করতে জামায়াতসহ সাত দল এই আন্দোলন শুরু করেছে বলে রাজনীতিতে আলোচনা আছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ ন এনস প র র জন ত ব এনপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
রুনা লায়লার জন্মদিন: সংগীতজীবনের বর্ণময় ৬ দশকের উদ্যাপন
উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ৭৩ বছর পূর্ণ করলেন। একইসঙ্গে পূর্ণ করলেন তার গৌরবময় সংগীত-জীবনের ৬০ বছর। উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে সমানতালে গান গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় জয় করেছেন রুনা লায়লা। ১৮টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। ফলে তিনি যে উপমহাদেশের শীর্ষ সংগীতশিল্পীদের একজন—এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বাংলাদেশের বাংলা গানকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে তার অবদান অনন্য। দেশ-বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অগণিত স্বীকৃতির মাঝে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ তার অর্জনকে আরো মহিমান্বিত করেছে।
আরো পড়ুন:
কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি
চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি
ভক্তদের কাছে রুনা লায়লার এবারের জন্মদিনটি বিশেষ। কোক স্টুডিও বাংলার তৃতীয় মৌসুমের শেষ গানটি প্রকাশ পেয়েছে তার গাওয়া জনপ্রিয় সুফি কাওয়ালি ‘দামা দম মাস্ত কালান্দার’ দিয়ে—যে গানটি বহু বছর আগে তাকে আন্তর্জাতিক পরিচিতি এনে দিয়েছিল।
তবে জন্মদিন নিয়ে শিল্পীর বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তিনি জানান, পরিবারকে সময় দিয়েই কাটাবেন দিনটি। ঘরোয়া পরিবেশেই উদ্যাপিত হবে জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। সংগীতজীবনের শুরু ষাটের দশকের শেষ দিকে পাকিস্তানের চলচ্চিত্র শিল্পে। শিল্পী আহমেদ রুশদির গায়কিতে অনুপ্রাণিত হয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করা এই কণ্ঠশিল্পী দ্রুতই উর্দুভাষী শ্রোতাদের মন জয় করে নেন। ‘উনকি নজরোঁ সে মোহাব্বত কা জো পয়গাম মিলা’—এর মতো গান তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
এরপর ভারতেও ছড়িয়ে পড়ে তার কণ্ঠের জাদু। ‘ও মেরা বাবু ছৈল ছাবিলা’ তাকে পরিচিত করে তোলে সাদাকালো যুগেই। পরে সংগীত পরিচালক বাপ্পি লাহিড়ীর সঙ্গে ‘ডিস্কো দিওয়ানে’ (১৯৮২) অ্যালবাম তাকে বিশ্বব্যাপী নতুন আরেক পরিচিতির শিখরে পৌঁছে দেয়।
যদিও তিন দেশে সাফল্য পেয়েছেন, রুনা লায়লার সংগীতজীবনের মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশ। ‘দ্য রেইন’ (১৯৭৬), ‘জাদুর বাঁশি’ (১৯৭৭), ‘অ্যাক্সিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪)—সহ মোট সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন। ‘সাধের লাউ বানাইলা মোরে বৈরাগী’, ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িতে গেলাম’—এর মতো বাংলা লোকগান তার কণ্ঠে নতুন প্রাণ পেয়েছে।
দীর্ঘ ও সফল এই যাত্রায় মায়ের অবদান সবচেয়ে বেশি—এ কথা প্রায়ই উল্লেখ করেন রুনা লায়লা। তিনি বলেন, “মা আমাকে প্রচণ্ড সহযোগিতা করেছেন। ছোটবেলায় গান গাইতে গেলে মা সবসময় সঙ্গে যেতেন।”
ঢাকা/রাহাত/শান্ত