উইন্ডোজ ১০-এর সহায়তা সমর্থন শেষ হচ্ছে অক্টোবরে, তবে
Published: 27th, September 2025 GMT
আগামী ১৪ অক্টোবরের পর উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আর কোনো সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা দেবে না মাইক্রোসফট। ব্যবহারকারীদের দ্রুত উইন্ডোজ ১১-তে হালনাগাদ করার পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে উইন্ডোজ ১০-এর সমর্থন শেষ হওয়ার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই দুশ্চিন্তা বাড়ছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে। তবে ইউরোপে বসবাসকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের জন্য আরও এক বছর বিনা মূল্যে বাড়তি সহায়তা সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইন মানতে গিয়ে উইন্ডোজ ১০ আপডেট চালু রাখতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ) অনেক দিন ধরেই বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর বিভিন্ন বিষয়ে চাপ তৈরি করছে। এই আইনের কারণেই অ্যাপল আইফোনে ইউএসবি সি চার্জিং পোর্ট চালু করতে বাধ্য হয়েছে। এবার একই আইনের কারণে উইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা নীতি পরিবর্তন করছে মাইক্রোসফট। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট উইন্ডোজ সেন্ট্রাল জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইইউ অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তত আরও এক বছর উইন্ডোজ ১০ আপডেট দেওয়া হবে। তবে উত্তর আমেরিকা, এশিয়া বা অন্যান্য অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের জন্য এই সুযোগ থাকছে না।
সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা বন্ধ হলেও উইন্ডোজ ১০ কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে, তবে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে। ফলে সাইবার অপরাধীরা সহজেই এসব কম্পিউটারে সাইবার হামলা করতে পারবে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এক কোটির বেশি কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। আর তাই একাধিক ভোক্তা অধিকার সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সত্য নাদেলাকে চিঠি লিখে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। তাদের মতে, বিকল্প কোনো সমাধান ছাড়া হঠাৎ সহায়তা সমর্থন বন্ধ করলে কোটি কোটি উইন্ডোজ ব্যবহারকারী সাইবার হামলার ঝুঁকিতে পড়বেন। শুধু সাইবার নিরাপত্তাই নয়, পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ইসেটের তথ্যমতে, সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা শেষ হওয়ার পর অনেক ব্যবহারকারীকে বাধ্য হয়ে নতুন কম্পিউটার কিনতে হবে। এতে পুরোনো কম্পিউটার অকার্যকর হয়ে বিপুল পরিমাণ ই-বর্জ্য তৈরি হবে। ফলে সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকির পাশাপাশি পরিবেশের ওপর নতুন চাপ তৈরি হবে।
প্রসঙ্গত, যাঁরা আরও কিছুদিন উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করতে চান, তাঁদের জন্য ইএক্সটেন্ডেড সিকিউরিটি আপডেটস (ইএসইউ) সুবিধা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাইক্রোসফট। ব্যবহারকারীরা চাইলে অর্থের বিনিময়ে বা নির্দিষ্ট শর্ত মেনে ২০২৬ সালের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিনা মূল্যে ইএসইউ সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন।
সূত্র: নিউজ১৮
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর উইন ড জ ১০ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
সফটওয়্যার কোম্পানির টাকায় যক্ষ্মা সম্মেলনে
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিদেশি সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে অর্থ চেয়েছে। ওই কোম্পানির সঙ্গে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লেনদেন আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা ক্রয় আইনের লঙ্ঘন। চারজন বিদেশগামী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁরা নিজের অর্থে সম্মেলনে যাচ্ছেন।
যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগের আন্তর্জাতিক বার্ষিক সম্মেলন ইউনিয়ন কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে। সম্মেলন শুরু হচ্ছে ১৮ নভেম্বর, শেষ হবে ২১ নভেম্বর। সারা বিশ্বের যক্ষ্মা ও ফুসফুসের রোগবিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় এইডস/এসটিডি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সদ্য সাবেক উপপরিচালক জোবায়দা নাসরিন ভারতের সফটওয়্যার কোম্পানি কিউর এআই-কে ৫ অক্টোবর চিঠি দিয়ে অর্থসহায়তার অনুরোধ করেন। বর্তমানে তিনি যক্ষ্মা ও কুষ্ঠরোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপপরিচালক।
এটি স্বার্থের দ্বন্দ্বের বিষয়। যে কোম্পানির সঙ্গে যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ব্যবসা আছে, তার কাছে অর্থসহায়তা চাওয়া অনৈতিক। এটা সরকারি ক্রয়বিধির পরিপন্থী। আইনের লঙ্ঘন। এটা ভবিষ্যৎ ক্রয়প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করবে। এটা গ্রহণযোগ্য না, শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবিচিঠিতে বলা হয়, কোম্পানিটি যেন যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পাঁচ কর্মকর্তাকে ওই সম্মেলনে যোগদান নিশ্চিত করতে অর্থসহায়তা দেয়। কোম্পানিটির কাছে অর্থসহায়তা বাবদ ২২ হাজার ২৭০ ডলারের (প্রায় ২৭ লাখ টাকা) একটি বাজেটও দেওয়া হয়।
সফটওয়্যার কোম্পানির কাছে পাঁচজনের একটি নামের তালিকা পাঠানো হয়। তাঁরা হচ্ছেন যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপপরিচালক মো. শাফিন জব্বার, জাতীয় কর্মসূচি সমন্বয়ক রূপালি শিশির বাণু, যক্ষ্মা ল্যাবরেটরি বিশেষজ্ঞ উম্মে তাসনিম মালিহা, বিভাগীয় যক্ষ্মাবিশেষজ্ঞ (ঢাকা উত্তর) ফারজানা জামান এবং সহকারী পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ এফ এম মনিরুল হক। প্রথমজন সরকারি কর্মকর্তা। বাকি চারজন দাতা সংস্থা গ্লোবাল ফান্ডের কর্মকর্তা। এই চারজন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অফিসে বসে কাজ করলেও তাঁদের বেতন–ভাতা দেয় গ্লোবাল ফান্ড।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এর আগে ২০২১–২২ ও ২০২২–২৩ অর্থবছরে কিউর এআইয়ের কাছ থেকে সফটওয়্যার কিনেছে। এই সফটওয়্যার কেনা হয় গ্লোবাল ফান্ডের টাকায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই সফটওয়্যার যক্ষ্মা শনাক্তের কাজে ব্যবহৃত হয়।
সংশ্লিষ্ট একজন সরকারি, তিনজন বেসরকারি ও একজন দাতা সংস্থার প্রতিনিধি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আরও সফটওয়্যার কেনার প্রক্রিয়া চলমান। কোন কোম্পানির কাছ থেকে তা কেনা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। এরই মধ্যে একটি কোম্পানির কাছে অর্থসহায়তা চেয়ে জোবায়দা নাসরিনের এই চিঠি নানা সন্দেহ তৈরি করেছে।
তাঁরা কিছুই জানতেন নাযক্ষ্মা একটি সংক্রামক রোগ