আগামী ১৪ অক্টোবরের পর উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আর কোনো সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা দেবে না মাইক্রোসফট। ব্যবহারকারীদের দ্রুত উইন্ডোজ ১১-তে হালনাগাদ করার পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে উইন্ডোজ ১০-এর সমর্থন শেষ হওয়ার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই দুশ্চিন্তা বাড়ছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে। তবে ইউরোপে বসবাসকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের জন্য আরও এক বছর বিনা মূল্যে বাড়তি সহায়তা সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইন মানতে গিয়ে উইন্ডোজ ১০ আপডেট চালু রাখতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কঠোর ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট (ডিএমএ) অনেক দিন ধরেই বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ওপর বিভিন্ন বিষয়ে চাপ তৈরি করছে। এই আইনের কারণেই অ্যাপল আইফোনে ইউএসবি সি চার্জিং পোর্ট চালু করতে বাধ্য হয়েছে। এবার একই আইনের কারণে উইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা নীতি পরিবর্তন করছে মাইক্রোসফট। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট উইন্ডোজ সেন্ট্রাল জানিয়েছে, মাইক্রোসফটের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইইউ অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অন্তত আরও এক বছর উইন্ডোজ ১০ আপডেট দেওয়া হবে। তবে উত্তর আমেরিকা, এশিয়া বা অন্যান্য অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের জন্য এই সুযোগ থাকছে না।

সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা বন্ধ হলেও উইন্ডোজ ১০ কম্পিউটারে ব্যবহার করা যাবে, তবে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে। ফলে সাইবার অপরাধীরা সহজেই এসব কম্পিউটারে সাইবার হামলা করতে পারবে। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এক কোটির বেশি কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হচ্ছে। আর তাই একাধিক ভোক্তা অধিকার সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করে মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সত্য নাদেলাকে চিঠি লিখে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। তাদের মতে, বিকল্প কোনো সমাধান ছাড়া হঠাৎ সহায়তা সমর্থন বন্ধ করলে কোটি কোটি উইন্ডোজ ব্যবহারকারী সাইবার হামলার ঝুঁকিতে পড়বেন। শুধু সাইবার নিরাপত্তাই নয়, পরিবেশগত প্রভাব নিয়েও শঙ্কা রয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ইসেটের তথ্যমতে, সফটওয়্যার হালনাগাদ, নিরাপত্তা সংশোধনী বা কারিগরি সহায়তা শেষ হওয়ার পর অনেক ব্যবহারকারীকে বাধ্য হয়ে নতুন কম্পিউটার কিনতে হবে। এতে পুরোনো কম্পিউটার অকার্যকর হয়ে বিপুল পরিমাণ ই-বর্জ্য তৈরি হবে। ফলে সাইবার নিরাপত্তাঝুঁকির পাশাপাশি পরিবেশের ওপর নতুন চাপ তৈরি হবে।

প্রসঙ্গত, যাঁরা আরও কিছুদিন উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করতে চান, তাঁদের জন্য ইএক্সটেন্ডেড সিকিউরিটি আপডেটস (ইএসইউ) সুবিধা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাইক্রোসফট। ব্যবহারকারীরা চাইলে অর্থের বিনিময়ে বা নির্দিষ্ট শর্ত মেনে ২০২৬ সালের ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বিনা মূল্যে ইএসইউ সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন।
সূত্র: নিউজ১৮

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর উইন ড জ ১০ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।

পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব  প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি  এখন সারানো  হয়েছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।  পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’

ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ