‘জীবন-জীবিকা রক্ষায় নদ-নদী বাঁচাতে হবে’
Published: 28th, September 2025 GMT
বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, জীবন-জীবিকা রক্ষায় নদ-নদী বাঁচাতে হবে। নদী আমাদের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সেই নদী ভাঙন, দখলে ও দুষণের শিকার। যে কারণে দেশে পরিবেশগত বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) খুলনা জেলার পাইকগাছায় কপোতাক্ষ নদের পাড়ে মানববন্ধন শেষে প্লাস্টিক বর্জ্য পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
সিলেটের সাদা পাথর লুটের ঘটনা তদন্তে সিআইডি
বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অভিযান, জরিমানা
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সচেতন সংস্থার সভাপতি বিদ্যুৎ বিশ্বাস। বক্তৃতা করেন অধ্যাপক বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য্য, ইউপি সদস্য শঙ্কর বিশ্বাস, ডা.
মানববন্ধনে খুলনা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত কপোতাক্ষ নদ ও শিবসা নদী দ্রুত খনন এবং উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান বক্তারা। তারা বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ওই অঞ্চলের মানুষের সীমাহীন সংকটের মুখোমুখী। এই সংকট মোকাবিলায় মৃতপ্রায় নদীগুলো দ্রুত খনন করতে হবে।”
একইসঙ্গে উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। খুলনা-পাইকগাছা মহাসড়ক দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
দুর্যোগকবলিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদী খননে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, “একসময় কপোতাক্ষ ও শিবসা নদীতে লঞ্চ, স্টিমারসহ বিভিন্ন নৌযান চলাচল করতো। খুলনা ও সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের মানুষ নৌপথে সহজেই যাতায়াত করতো। অথচ এক সময়ের প্রবল খরস্রোতা নদী দুটি এখন পলি জমে ভরাট হয়ে চর জেগে উঠেছে। আবার কপোতাক্ষ পাড়ের বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে পাইকগাছা বাজার প্লাবিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নদীপাড়ের মানুষ দুর্যোগে-দুর্ভোগে জীবনযাপন করছে। জলাবদ্ধতার কারণে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে জীবিকা হারিয়ে অনেকেই এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।”
বক্তারা বলেন, “দেশের সিংহভাগ নদী দখল-দূষণ, অবহেলা ও তীব্র নাব্যতা সংকটে বিপণ্নপ্রায়। আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি নিয়ে ভারতের সঙ্গে ফারাক্কা বাঁধ ও তিস্তা ব্যারাজের মতো সমস্যা ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাঝে মধ্যে অতিবর্ষণ ও ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছাস আঘাত হানছে। তাই বন্যা ও জলোচ্ছাস মোকাবিলায় নদীগুলোর পানি ধারণক্ষমতা বাড়ানো অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।”
তারা বলেন, “ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সব নদ-নদী খনন করে গভীরতা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ-ভারতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে।”
ঢাকা/এএএম/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ নদ নদ নদ উপক ল
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন
খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ এবং এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভাকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মানববন্ধন থেকে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানানো হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন হয়। এতে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন গণসাক্ষরতা অভিযান, ব্লাস্ট, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ও নারী প্রগতি সংঘের সদস্যরা।
মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম বলেন, এখনো ধর্ষণের মামলা করতে গেলে নির্যাতনের শিকার নারীকে আলামত দিতে হয়। নির্যাতনের শিকার নারী কেন আলামত দেবে? ধর্ষণকারী প্রমাণ করবে তিনি ধর্ষণ করেছেন কি করেননি।
ফওজিয়া মোসলেম আরও বলেন, পাহাড়ি আদিবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে নানা বৈষম্যের শিকার। তাদের ওপর সহিংস আক্রমণ চালিয়ে একধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরি করা হচ্ছে। এর দায়ভার কে নেবে?
মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, খাগড়াছড়িতে ন্যায়বিচার না পেয়ে যখন এলাকাবাসী ফুঁসে উঠল, তখন দেখা গেল প্রতিবাদকারীদের ওপরই হামলা চালানো হলো, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট ঘটল। কিন্তু একটি নিরীহ কিশোরী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা কোথায় ছিল—এ প্রশ্ন আজ সবার মনে জেগে উঠেছে।
মালেকা বানু আরও বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে যারা প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা জরুরি।
মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড সম্পাদক রেখা সাহা বলেন, ‘সব খবর পত্রিকায় আসে না। পাহাড়ের নারী ও মেয়েরা সহজে ধর্ষণের শিকার হন। যেকোনো বয়স ও ধর্মের নারী হামলার শিকার হলেই মহিলা পরিষদের সদস্যরা এখানে প্রতিবাদ করতে আসি। কিন্তু এসব ঘটনার প্রতিকার হচ্ছে না।’
নারী প্রগতি সংঘের সেলিনা পারভিন বলেন, ‘গত এক বছরে এ ধরনের কত ঘটনা ঘটেছে, আপনারা কেউ বলতে পারেন? অথচ আপনারা দেশ পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। খাগড়াছড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছে। আমরা এমন দেখতে চাই না।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম এবং ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেহানা ইউনূস।