সিদ্ধিরগঞ্জে র্যাবের উপর হামলা করে সন্ত্রাসীকে ছিনিয়ে নিয়েছে সহযোগীরা
Published: 30th, September 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী সাবেহ আলীকে আটক করেও রাখতে পারেনি র্যাব সদস্যরা। সাহেব আলীর সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের উপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছেন র্যাবের ৩ সদস্যসহ ৪ জন।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টায় আটি ওয়াপদা কলোনি বউ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও র্যাব-১১ এর সিপিএসসি লে: কমা-ার মো.
সন্ত্রাসী সাহেব আলী(৩৮) ওয়াপদা কলোনি বউবাজার এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। সাহেব আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ ডজন খানেক মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, ১ সহযোগীসহ সাহেব আলীকে আটক করে সাদা পোশকদারী র্যাবের একটি আভিযানিক দল। এসময় ২ জন র্যাব সদস্যের পাহারায় তাদেরকে ওয়াপদা কলোনি বউবাজার তিন রাস্তার মোড়ে একটি চা দোকানে রেখে তার অন্য সহযোগীদের আটক করতে যান র্যাবের অন্য সদস্যরা। তখন সাহেব আলীর সহযোগী সন্ত্রাসীরা র্যাব সদস্যের উপর আকস্মিক হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া ইটপাটকেলের আঘাতে ১ জন গুরুতরসহ র্যাবের ৩ সদস্য ও রানা নামে স্থানীয় একজন বাসিন্দা আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমি এসে দেখি সন্ত্রাসী সাহেব আলী ও তার ১ সহযোগীকে আটক করে দুজন র্যাব সদস্য শীতলের চা দোকানে বসে আছেন। এসময় ৮-১০ জনের একটি বাহিনী এসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও দোকানের চেয়ার দিকে র্যাব সদস্যদের উপর আক্রমন করে তাদের ছিনেয় নেয়।
আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী আলাউদ্দিন বলেন, আমি এসে দেখি একজন র্যাব সদস্য রক্তাক্ত অবস্থায় বিসমিল্লাহ ফার্মেসীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিসমিল্লাহ ফার্মেসীতে কর্মরত শাহাদাত হোসেন বলেন, প্রশাসনের চার লোক দোকানে এসেছিল চিকিৎসার জন্য। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় ও দুজনের হাতে আঘাত প্রাপ্ত ছিল। প্রাথমিকভাবে রক্তকরণ বন্ধকরে দেওয়ার পর র্যাবের লোকজন এসে আহতদের নিয়ে যান।
জানতে চাইলে র্যাবের সিপিএসসি লে: কমান্ডার মো. নাঈম উল হক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা সাহেব আলীর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে বউবাজার এলাকায় যায়। এসময় একদল সন্ত্রাসী বাহিনী তাদেরকে আক্রমন করে। তবে সাহেব আলীকে আটক ও ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: সন ত র স ন র য়ণগঞ জ স হ ব আল র য ব সদস য সন ত র স সহয গ র উপর
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
সরকারি গাড়িতে এসে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) প্রভাষক পদের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের এক উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস)। তাঁর নাম আশিকুর রহমান। তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার এপিএস হিসেবে কর্মরত আছেন।
নোবিপ্রবির সংস্থাপন শাখা সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। ওই বিজ্ঞপ্তির আলোকে পরীক্ষায় অংশ নিতে গতকাল শনিবার নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন আশিকুর রহমান। পরীক্ষায় দুটি প্রভাষক পদের বিপরীতে আশিকুর রহমানসহ ২৭ জন পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন। লিখিত পরীক্ষা শেষে একই দিন ১৪ জনকে মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আশিকুর রহমান সরকারি লোগো ও ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ডযুক্ত গাড়িতে করে ক্যাম্পাসে আসেন। পরীক্ষা শেষে একই গাড়িতে তিনি ঢাকায় ফিরে যান। ওই গাড়ির ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। বিষয়টি নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, উপদেষ্টার এপিএস আশিকুর রহমানের ব্যবহৃত গাড়িটি বন অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক, আগারগাঁও, ঢাকার ঠিকানায় নিবন্ধিত।
সরকারি গাড়ি নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ ছিলাম। আগের দিন রাত দুইটার সময় জানতে পেরেছি যে পরদিন পরীক্ষা। আমি নোয়াখালীতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল ১০টা বেজে যায়। আমাকে কেউ যদি সাহায্য করে, আপনি কীভাবে দেখবেন? আমি পদে এসে কোনো ধরনের নিয়োগ-বাণিজ্য, বদলির তদবির করিনি। আমি যতটুকু জানি, ওখানে একজন শিক্ষকের একজন চাকরিপ্রার্থী ছিলেন। তিনি আমার প্রোফাইল দেখে ভয় পেয়েছেন। তাই ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। আমি দেশ-বিদেশে একজন বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত।’
সরকারি গাড়ি ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে বন অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান বন সংরক্ষক (অর্থ, বাজেট ও সাধারণ নির্দেশনা ইউনিট) হক মাহবুব মোরশেদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, অধিদপ্তরের গাড়িগুলো একজন রেঞ্জ কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকে। তাঁকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তাঁকে জানাতে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ তামজিদ হোছাইন প্রথম আলোকে বলেন, উপদেষ্টার এপিএসের সরকারি গাড়ি নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আসার বিষয়টি সম্পর্কে তিনি জানেন না। তা ছাড়া তিনি শনিবার ছুটিতে ছিলেন। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার বোর্ডে উপাচার্য, বিভাগের চেয়ারম্যানসহ অন্য সদস্যরা থাকেন। নিয়োগ পরীক্ষায় কে কীভাবে এলেন, সেটি দেখা নিয়োগ বোর্ডের কাজ নয়। বোর্ডের সামনে একজন করে প্রার্থী উপস্থিত হন।
সরকারি গাড়ি ব্যবহারের নীতিমালা সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ কে এম আবদুল আওয়াল মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, লিখিতভাবে এমন কোনো বিধির কথা তিনি জানেন না। তবে মন্ত্রী বা পিএসের জন্য সরকারি গাড়ি থাকে। ঢাকা থেকে সরকারি গাড়িতে নোয়াখালীতে এসে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া উপদেষ্টার এপিএসের ‘বাড়াবাড়ি’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।