ইন্টারনেট সংস্কৃতি বদলে দেওয়া ৩০ প্রতিষ্ঠান পেল ওয়েবি অ্যাওয়ার্ডস
Published: 1st, October 2025 GMT
ওয়েবের অস্কার হিসেবে খ্যাত ‘দ্য ওয়েবি অ্যাওয়ার্ডস’ ১৯৯৬ সাল থেকে ইন্টারনেটে শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়কে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে। পুরস্কার প্রবর্তনের ৩০ বছর উপলক্ষে ইন্টারনেটের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রভাবশালী ৩০টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার একটি বিশেষ তালিকা প্রকাশ করেছে ওয়েবি অ্যাওয়ার্ডস। ‘দ্য ওয়েবি ৩০’ নামের এ তালিকায় এমন কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম আছে, যারা গত তিন দশকে ডিজিটাল জগতে সৃজনশীলতা, যোগাযোগ-সংযোগ ও সংস্কৃতিতে পরিবর্তন এনেছে। তালিকায় অ্যাডোবি, অ্যামাজন, অ্যাপল, বিবিসি, বাজফিড, এইচবিও, গুগল, মাইক্রোসফট, মেটা, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, নেটফ্লিক্স, টিকটকসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।
তালিকার বর্ণ অনুসারে প্রথমেই রয়েছে অ্যাডোবির নাম। অ্যাডোবি সম্পর্কে বলা হয়েছে, বর্তমান ওয়েবের চেহারা, গতি ও তৈরির পেছনে বেশ কিছু সরঞ্জাম তৈরি করে অ্যাডোবি ইন্টারনেট সংস্কৃতিকে আধুনিক রূপ দিয়েছে। ইউটিউবকে ব্রাউজারের ভেতরে নির্ভরযোগ্যভাবে ভিডিও চালাতে প্রথম সুযোগ করে দেয় অ্যাডোবি ফ্ল্যাশ। ২০১৩ সালে অ্যাডোবি ক্রিয়েটিভ স্যুট ক্রিয়েটিভ ক্লাউডে স্থানান্তর করা হয়। মেটা সম্পর্কে বলা হয়েছে, মেটা বিভিন্ন সামাজিক যোগযোগমাধ্যম তৈরি করেছে, যা কোটি কোটি মানুষকে যুক্ত করার পাশাপাশি বিভিন্ন আধেয় তৈরির সুযোগ দিচ্ছে। ইন্টারনেট সংস্কৃতি বিকাশে ভূমিকা রাখছে।
টিকটক সম্পর্কে ওয়েবি কর্তৃপক্ষ লিখেছে, টিকটক সৃজনশীলতা কীভাবে প্রকাশ করা যায়, তা নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছে। নতুন ট্রেন্ডের পাশাপাশি নতুন তারকাদের জন্ম দিয়েছে, যা অ্যাপের বাইরেও বেশ জনপ্রিয়। টিকটক সৃজনশীল ইতিহাসের সবচেয়ে পুরোনো চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবিষ্কারের বিষয়টি সমাধান করেছে। শতাব্দী কাল ধরে বিভিন্ন শিল্পী ও অভিনয়শিল্পীরা তাঁদের কাজ দেখানোর জন্য অন্যদের ওপর নির্ভর করতেন। সেখানে টিকটক যে কারও জন্য দর্শক খুঁজে পাওয়ার সুযোগ করে দেয়। অনেক গায়ক মাত্র ১৫ সেকেন্ডের ক্লিপ আপলোড করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেছেন। কৌতুক অভিনেতা থেকে শুরু করে শিক্ষকেরা রাতারাতি বিশ্বব্যাপী অনুসারী তৈরি করছেন।
তালিকায় স্থান করে নিয়েছে উইকিপিডিয়াও। ২০০১ সালে বিশ্বের সব জ্ঞান ধারণ করার সহজ কিন্তু বিশাল লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করে উইকিপিডিয়া। ওয়েবি অ্যাওয়াডর্স উইকিপিডিয়াকে ইন্টারনেটের সর্বজনীন স্মৃতি, যা সবাই লিখতে পারে বলে অভিহিত করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক, সম্পাদক ও পাঠকদের এক বিশাল কমিউনিটির মাধ্যমে গড়ে ওঠা এই প্ল্যাটফর্ম এখন শত শত কোটি মানুষের কাছে তথ্য পাওয়ার এক নির্ভরযোগ্য উৎস। উইকিপিডিয়ার মাধ্যমে একটি বৈশ্বিক জ্ঞানভান্ডার তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।
সূত্র: ওয়েবি অ্যাওয়ার্ডস ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে মানববন্ধন
নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামইরহাট) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার জিরো পয়েন্ট এলাকায় এ কর্মসূচির আয়োজন করেন মনোনয়নবঞ্চিত এক প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকেরা।
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষিবিষয়ক সম্পাদক সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করেছে দলটি। এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী।
খাজা নাজিবুল্লাহর সমর্থকেরা বেলা ১১টার দিকে নজিপুর জিরো পয়েন্ট এলাকায় নওগাঁ-নজিপুর সড়কের একপাশে দাঁড়িয়ে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধন করেন। এ কর্মসূচিতে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা থেকে আসা নেতা–কর্মীরা অংশ নেন। তাঁদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও এতে অংশ নেন। মানববন্ধনের আগে জিরো পয়েন্ট এলাকায় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বিতর্কিত ব্যক্তি সামসুজ্জোহা খানের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সময়ে হরতালসহ বিভিন্ন আন্দোলনে খাজা নাজিবুল্লাহর নেতৃত্বে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা মাঠে ছিলেন। তাঁরা নওগাঁ-২ আসনে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে খাজা নাজিবুল্লাহকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার অনুরোধ জানান।
নজিপুরের সাবেক পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন বলেন, নাজিবুল্লাহ ত্যাগী, পরীক্ষিত ও বারবার কারা নির্যাতিত নেতা। তাঁর নেতৃত্বেই পত্নীতলা ও ধামইরহাট বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। অথচ তৃণমূলের মতামত অগ্রাহ্য করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে। খাজা নাজিবুল্লাহকে প্রার্থী ঘোষণা না করা হলে তৃণমূল বিএনপি বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
ধামইরহাট উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন বলেন, ২০১৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগবিরোধী সব আন্দোলনে যাঁরা মাঠে সক্রিয় ছিলেন, তাঁরা সবাই খাজা নাজিবুল্লাহর পক্ষে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হোক—এটি শুধু বিএনপির নেতা–কর্মীদের চাওয়া নয়, দুই উপজেলার সব মানুষের চাওয়া। তাই এখানে মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য দলের শীর্ষ নেতাদের কাছে আহ্বান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সামসুজ্জোহা খান বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করা হবে।’
মনোনয়নবঞ্চিত খাজা নাজিবুল্লাহ বলেন, ‘সব আন্দোলন–সংগ্রামে মাঠে সক্রিয় ছিলাম। দুর্দিনে তৃণমূল নেতাদের পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। আমরা কেউ দলের ঊর্ধ্বে নই। দলের জন্য কাজ করছি। পুনর্বিবেচনা হলে মনোনয়ন পেতে পারি। দলই সবার আগে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য আনোয়ার হোসেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মিজানুর রহমান, ধামইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য রেজাউল ইসলাম, ধামইরহাট মহিলা দলের সহসভাপতি নাহিদা সুলতানা, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল ধামইরহাট শাখার আহ্বায়ক রকিবুল হাসান, পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আবু তাহের প্রমুখ।