একজনের ব্যাট থেকে এসেছে ১১৫ রান, অন্যজনের ব্যাট থেকে ১১১। রানসংখ্যায় কাছাকাছি থাকলেও দলগত ফলে ব্যবধানটা হলো অনেক বড়। আইসিসি নারী বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে  নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৮৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে অ্যাশলি গার্ডনারের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়া করে ৩২৬ রান। তাড়া করতে নেমে নিউজিল্যান্ড ৪৩.

২ ওভারে ২৩৭ রানে অলআউট হয়।

ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে নিউজিল্যান্ড তাদের ইনিংসের প্রথম ৯ বলের মধ্যে হারিয়ে ফেলে ২ উইকেট। সুজি বেটসকে বোল্ড করেন সোফি মলিনুর, আরেক কিউই ওপেনার জর্জিয়া প্লিমার রানআউট। দুই ওপেনার আউট হওয়ার সময় নিউজিল্যান্ডের রান ছিল শূন্য। সেখান থেকে তৃতীয় উইকেটে অ্যামেলিয়া কার ও সোফি ডিভাইন গড়েন ৭৫ রানের জুটি।  

কার ৩৩ রান করে আউট হওয়ার পর ডিভাইনের সঙ্গে ৫২ রানের জুটিতে সঙ্গ দেন ব্রুক হ্যালিডে। পরে ষষ্ঠ উইকেটে আরেকটি পঞ্চাশ ছাড়ানো (৫৪) জুটি গড়ে ওঠে ডিভাইন-ইসাবেলা গেজের মধ্যে। তবে লক্ষ্য বড় হওয়ায় প্রয়োজনীয় গতিতে রান তুলতে পারেনি দলটি।

প্রথম ২৫ ওভারের মধ্যে ১০০টি ডট দেওয়া নিউজিল্যান্ড শেষের দিকে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে উইকেটও হারিয়েছে দ্রুতই। অধিনায়ক ডিভাইন এক প্রান্ত আগলে রেখে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১০৭ বলে। পরে বড় শট খেলতে গিয়ে বোল্ড হন । অ্যানাবেল সাদারল্যান্ডের বলে। তাঁর ১২ চার ৩ ছক্কায় ১১২ বলে ১১১ রানের ইনিংসেই নিউজিল্যান্ডের জয়ের সম্ভাবনা কার্যত শেষ হয়ে যায়।

এর আগে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসও বলতে গেলে একজনই টেনেছেন। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার অ্যালিসা হিলি (১৯), ফিবি লিচফিল্ড (৪৫) ও এলিস পেরিরা (৩৩) বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও দল ২ উইকেট হারিয়েই পৌঁছে যায় এক শ রানে। এরপর মিডল অর্ডারের ভাঙনে ১০৮/২ থেকে ১২৮/৫ উইকেটে পরিণত হয় অস্ট্রেলিয়ার স্কোর।

সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার রান তিন শর ওপারে নিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব গার্ডনারের। ছয় নম্বরে নামা এই ব্যাটার ৪৩ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর সেঞ্চুরি করেন ৭৭ বলে। শেষ পর্যন্ত ৪৭তম ওভারে যখন আউট হন, নামের পাশে ১৬ চার ১ ছক্কায় ৮৩ বলে ১১৫ রান। মেয়েদের ওয়ানডেতে ছয় বা তার নিচে নেমে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। ভেঙেছেন ২০১৩ সালে ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শেমেইন ক্যাম্পবেলের রেকর্ড।

গার্ডনার নতুন রেকর্ড গড়ার দিনে দলের জয়ে পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।

আগামীকাল কলম্বোয় পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া নারী দল: ৪৯.৩ ওভারে ৩২৬ (গার্ডনার ১১৫, লিচফিল্ড ৪৫, গার্থ ৩৮; তাহুহু ৩/৪২, কার ৩/৫৯)।

নিউজিল্যান্ড নারী দল: ৪৩.২ ওভারে ২৩৭ (ডিভাইন ১১১, কার ৩৩, গেজ ২৮; মলিনু ৩/২৫, সাদারল্যান্ড ৩/২৬)।

ফল:  অস্ট্রেলিয়া নারী দল ৮৯ রানে জয়ী।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: অ্যাশলি গার্ডনার।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র ডন র ড ভ ইন প রথম উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাচ্ছে জাপান

তাইওয়ান ইস্যুকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে তীব্র কূটনৈতিক টানাপড়েন সৃষ্টি হয়েছে জাপানের। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে চীনকে শান্ত করতে এবং চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনা প্রশমিত করতে বেইজিংয়ে জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে পাঠাচ্ছে টোকিও।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) জাপানের গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আরো পড়ুন:

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ২ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমান

শীতকাল এলেই ‘স্নো ফেইরি’ হয়ে যায় বরফের বলের মতো

প্রতিবেদনে বলা হয়, উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনার শুরু হয় জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির একটি মন্তব্যকে ঘিরে। চলতি মাসের শুরুতে পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, “চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ চালায়, তাহলে তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য একটি হুমকি এবং জাপান সামরিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে।” 

পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আগে থেকে কিছুটা বিরোধ থাকলেও,, জাপানের কর্মকর্তারা এতদিন প্রকাশ্যে এমন মন্তব্য করাটা এড়িয়ে চলতেন, কারণ এতে বেইজিং আরও ক্ষুব্ধ হতে পারে। গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে থাকে চীন।

জাপানের মিডিয়া সোমবার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও ওসেনিয়া ব্যুরোর প্রধান মাসাআকি কানাই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা লিউ জিনসংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে কানাই তাকে জানাবেন যে- তাকাইচির মন্তব্য জাপানের নিরাপত্তা নীতিতে কোনো পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না এবং একইসঙ্গে তিনি চীনকে এমন পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাবেন যা দুই দেশের সম্পর্কে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তাইওয়ান জাপানের পশ্চিমতম দ্বীপপুঞ্জ থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার (৬৮ মাইল) দূরে অবস্থিত এবং তেল ও গ্যাস সরবরাহের জন্য টোকিও নির্ভরশীল গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথের কাছাকাছি অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জাপানে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে বড় অবস্থান রয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার বেইজিং সতর্ক করে বলেছিল, তাইওয়ান ইস্যুতে জাপান সামরিক হস্তক্ষেপ করলে তারা ‘ভয়াবহ পরাজয়’ বরণ করবে। পাশাপাশি জাপানে ভ্রমণের বিরুদ্ধে চীনা নাগরিকদের সতর্কও করা হয়। আর এটি জাপানের পর্যটনব্যবসার জন্য বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি করেছে।

জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, “চীনের ভ্রমণ সতর্কতা ‘কৌশলগত, পারস্পরিক উপকারী সম্পর্ক উন্নয়নের বিস্তৃত দিকের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। আমরা চীনা পক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দৃঢ় অনুরোধ করেছি।”

জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি এই সপ্তাহের শেষের দিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সুযোগ পেতে পারেন, উভয়ই শুক্রবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ‘গ্রুপ অব ২০’ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সোমবার নিউ তাইপেতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই ছিং-তে বলেন, চীন জাপানের বিরুদ্ধে ‘বহুমুখী আক্রমণ’ চালাচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের আহ্বান জানাচ্ছি। চীনকে সংযত আচরণ করার এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য সমস্যা সৃষ্টিকারী না হয়ে একটি বড় শক্তির মতো দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করার আহ্বান জানাচ্ছি।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ