১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
Published: 9th, October 2025 GMT
নিলামের মাধ্যমে আরো ১০ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ১০টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে এই পরিমাণ ডলার কেনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।
আরো পড়ুন:
সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ কমানো সম্ভব: গভর্নর
রপ্তানিতে দেশীয় বিমা কাভারেজের অনুমতি দিল বাংলাদেশ ব্যাংক
আরিফ হোসেন খান বলেন, “বাজারে এখন চাহিদার তুলনায় ডলারের সরবরাহ বেশি। রপ্তানিকারক ও প্রবাসীদের স্বার্থ রক্ষায় বাজারমূল্য ধরে রাখতে গত জুলাই থেকে ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত মোট ২০৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবার ডলার কেনা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ (এফএক্স) নিলাম কমিটির মাধ্যমে, মাল্টিপল প্রাইস অকশন পদ্ধতিতে। যেখানে এক ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা।”
এর আগে আলাদা সময়ে ১৩ দফায় ডলার কিনেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে গত ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংক থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়েছিল। গত ১৫ জুলাই একই দরে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২৩ জুলাই ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে এক কোটি ডলার কেনা হয়েছিল।
এছাড়া গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে চার কোটি ৫০ লাখ ডলার, ১০ আগস্ট ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ১৪ আগস্ট ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, ২৮ আগস্ট ১২১ টাকা ৬৬ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৭০ পয়সা দরে ১৪ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, ২ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে চার কোটি ৭৫ লাখ ডলার, ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, ৯ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ১৫ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার, গত ২২ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১২ কোটি ৯০ লাখ ডলার, গত ৬ অক্টোবর ১২১ টাকা ৭৮ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৮০ পয়সা দরে ১০ কোটি ৪০ লাখ ডলার কেনা হয়েছিল।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বহুমাত্রিক হুমায়ুন আজাদ
হুমায়ুন আজাদের ‘এক একর সবুজ জমি’ গদ্যের প্রকৃতি অনুযায়ী তিন ভাগে বিন্যস্ত: সাহিত্যভিত্তিক কলাম, স্মৃতিকথা এবং গ্রন্থালোচনা। ১৯৬৯ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাইশ মাস ধরে তিনি দৈনিক ইত্তেফাক-এর সাহিত্য সাময়িকীতে ‘জর্নাল’ শিরোনামে ধারাবাহিক কলাম লিখেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে দৈনিক বাংলার ‘রোববারের সাহিত্য’ পাতায় তিনি এই শিরোনামে নিয়মিত সাহিত্য-সমালোচনামূলক কলাম লেখা শুরু করেন; সেই অভিজ্ঞতার অগ্রসর পরিণতি ‘এক একর সবুজ জমি’। তবে এই উদ্যোগ স্থায়ী হয়নি—মাত্র ছয়টি কিস্তি প্রকাশের পর কলামটি বন্ধ হয়ে যায়। তবু এই স্বল্পায়ু লেখাগুলোর ভেতরেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে হুমায়ুন আজাদের প্রাথমিক গবেষকসত্তা, সাহিত্যকে নতুন দৃষ্টিতে দেখার উদ্দীপনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতা। এই গ্রন্থে তাই পাওয়া যায় এক উঠতি সাহিত্যমননের দ্বিতীয় দ্যুতি।
এক একর সবুজ জমি
হুমায়ুন আজাদ
সংকলক: মুহিত হাসান
প্রকাশক: আগামী প্রকাশনী
প্রকাশ: অক্টোবর ২০২৫
প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত
পৃষ্ঠা: ৯৬
মূল্য: ২৭০ টাকা
গ্রন্থের দ্বিতীয় ভাগ ‘স্মৃতিকথা’-তে সংকলিত হয়েছে হুমায়ুন আজাদের লেখা পাঁচটি স্মৃতিমণ্ডিত রচনা। এগুলো ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে রচিত। এর মধ্যে চারটিই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে লেখা। এই অংশটি মুক্তিযুদ্ধের আবেগ, বেদনা ও উত্তরণের এক অন্তর্লিখিত ইতিহাস। এখানে আছে প্রতিরোধের প্রথম প্রহরে শহীদ হওয়া এক স্বজনের বেদনাময় স্মৃতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তিন শহীদ বুদ্ধিজীবী শিক্ষকের অকৃত্রিম মানবিকতা, যুদ্ধকালীন ঢাকার অস্থির ও বিভীষিকাময় পরিবেশ এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের দীপ্ত মুহূর্ত। প্রতিটি রচনায় মুক্তিযুদ্ধের রেশ ভেসে ওঠে গভীর ব্যক্তিগত অনুভবের আলোছায়ায়। এর সঙ্গে ‘উপরি পাওনা’ হিসেবে রয়েছে পিএইচডি গবেষণাকালীন অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা একটি দুর্দান্ত রচনা, যেখানে দেখা যায় তরুণ গবেষক আজাদের অনুসন্ধিৎসু মন, বৌদ্ধিক পরিশ্রম এবং নিজ সময়কে বোঝার গভীর চেষ্টা।
হুমায়ুন আজাদ নানা ধরনের বই নিয়ে নিয়মিতভাবে পত্রপত্রিকায় লঘু-গুরু সমালোচনা লিখতেন। সেই নির্বাচিত সমালোচনার ছয়টি সংকলিত হয়েছে গ্রন্থের তৃতীয় অংশ ‘গ্রন্থালোচনা’য়। এখানে যে বইগুলো নিয়ে তিনি নিজস্ব কায়দায় আলোচনা করেছেন, সেগুলোর তালিকা বেশ বৈচিত্র্যময়: মোহাম্মদ নাসির আলীর কিশোর গল্পসংকলন ‘লেবুমামার সপ্তকাণ্ড’, মোহাম্মদ মাহ্ফুজুল্লাহ্র কবিতা সংকলন ‘কাব্য-সম্ভার’, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর প্রবন্ধগ্রন্থ ‘বেকনের মৌমাছিরা’, নওয়াজেশ আহমেদের আলোকচিত্রগ্রন্থ ‘পোর্ট্রেট অব বাংলাদেশ’, আহমদ ছফার গল্পগ্রন্থ ‘নিহত নক্ষত্র’ এবং সেলিনা হোসেনের গল্পগ্রন্থ ‘উৎস থেকে নিরন্তর’। এই ছয়টি গ্রন্থকে ঘিরে আজাদের বিশ্লেষণ যেমন স্বতন্ত্র, তেমনি তীক্ষ্ণ ও আগ্রহোদ্দীপক। সমালোচনার এই ছোট্ট পরিসর থেকেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাঁর বিস্তৃত পাঠাভ্যাস, বিষয়বস্তুর প্রতি নিবিড় মনোযোগ এবং সাহিত্য, শিল্প ও সংস্কৃতি—সবকিছুকে একই আগ্রহে অন্বেষণের বৌদ্ধিক উদারতা।