গাইবান্ধায় সেচপাম্পে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে গিয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু
Published: 24th, October 2025 GMT
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় সেচপাম্পে বিদ্যুৎ–সংযোগ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বাবা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের প্রফেসর বাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া দুজন হলেন প্রফেসর বাজার এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম (৪৫) ও তাঁর ছেলে শিহাব মিয়া (১৩)।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, শহিদুল ইসলাম ছেলে শিহাবকে নিয়ে আজ সকালে নিজের পুকুর থেকে ধানখেতে পানি দেওয়ার জন্য সেচপাম্প চালু করতে যান। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে পুকুরপাড়ে অবস্থিত সেচপাম্পের কাছে শিহাবকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পান। পুকুরে পাওয়া যায় বিদুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যাওয়া বাবা শহিদুলের লাশ। পরে গ্রামবাসী মরদেহ দুটি বাড়িতে পৌঁছে দেন।
বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হাকিম আজাদ। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৩ হাজার টাকায় শুরু, সাগর এখন ২০ লাখ টাকার রঙিন মাছের মালিক
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সরকারটারি গ্রামের বাসিন্দা সাগর সরকার। তিন হাজার টাকায় ৩৪টি রঙিন মাছ কিনেছিলেন। বাড়ির আঙিনায় মাটিতে গর্ত করে পলিথিন দিয়ে সেই মাছের চাষ শুরু করেন। ছয় বছরের ব্যবধানে তিনি গড়ে তুলেছেন মাছের খামার। নাম দিয়েছেন ‘সাগর এগ্রো ফার্ম’।
সাগর সরকারের খামারে এখন ভেসে বেড়াচ্ছে নানা জাতের প্রায় দুই লাখ রঙিন মাছ। তিন হাজার টাকা দিয়ে শুরু, এখন তিনি ২০ লাখ টাকার রঙিন মাছের মালিক। খরচ বাদে মাসে আয় থাকে গড়ে ৭০ হাজার টাকা। এখন তিনি সফল উদ্যোক্তা। সফল মাছচাষি হিসেবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে তিনি অর্জন করেছেন একাধিক পুরস্কার।
শুরুর কথা
কথায় কথায় সাগর জানালেন, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তাঁরা তিন বন্ধু ইউটিউবে অ্যাকুয়ারিয়ামে রঙিন মাছ চাষের পদ্ধতি দেখেন। পরে তাঁরা মিলে রঙিন মাছ চাষের পরিকল্পনা করেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে তিন বন্ধু মাত্র তিন হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এই টাকায় ৩৪টি অটো ব্রিডিং এবং গোল্ড ফিশ মাছ কেনেন। নিজের বাড়ির আঙিনায় মাটিতে গর্ত খুঁড়ে সেই গর্তে পলিথিন দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে মাছের চাষ শুরু করেন।
তবে শীতের কারণে তাদের বেশির ভাগ মাছ মারা যায়। দুই বন্ধু আর সাগরের সঙ্গে থাকেননি। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি টিফিন ও হাত খরচের টাকা বাঁচিয়ে প্রতি মাসে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া থেকে অক্সিজেন দিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় মা মাছ আমদানি করতে থাকেন। সেই মা মাছের পোনা বড় করে বিক্রি করতেন তিনি।
প্রথম দেড় বছর সাগর লাভের মুখ দেখেননি। ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে তাঁর লাভ আসা শুরু হয়। আস্তে আস্তে ব্যবসা বড় হতে থাকে। মাটির গর্তের পরিবর্তে তিনি ১৮টি পাকা চৌবাচ্চায় রঙিন মাছ চাষ শুরু করেন। এখন তাঁর বাড়িতে সারি সারি চৌবাচ্চা। সেখানে আছে নানা রঙের মাছ। এর পাশাপাশি নিজের ছয়টি পুকুরেও রঙিন মাছের চাষ করছেন। পুকুরের ওপরে জাল দিয়ে ছাউনি দেন। যাতে রোদ আর ছায়া দুটোই পাওয়া যায়। বর্তমানে তাঁর খামারে নানা জাতের দুই লাখ রঙিন মাছ আছে। এগুলোর মূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা বলে তিনি দাবি করেন।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সরকারটারি গ্রামের সাগর সরকারের খামারে নানা জাতের দুই লাখ রঙিন মাছ আছে