কী অভিপ্রায়ে হিমু-শুভ্র-মিসির আলির সৃষ্টি
Published: 13th, November 2025 GMT
তিন শতাধিক গ্রন্থে হুমায়ূন আহমেদ অসংখ্য চরিত্রের জন্ম দিয়েছেন। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় তিনটি চরিত্র হলো হিমু, শুভ্র ও মিসির আলি। সম্ভবত তাঁর নিজেরও অতি আপন এই তিন চরিত্র। আমাদের বিদ্বৎসমাজে অবশ্য এদের বা এদের উপজীব্য করে রচিত উপন্যাসগুলোর কদর অতি অল্প। প্রশ্ন হলো, হুমায়ূন আহমেদ কেন ১৯৭২ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’র ধারা অনুসরণ না করে আপাত হেঁয়ালিপূর্ণ ক্ষুদ্রায়তন এই সব উপন্যাস রচনায় নিরত হলেন? কেন মহৎ সাহিত্য রচনায় না নেমে হাস্যরস উৎপাদনকেই তাঁর সাহিত্যিক ব্রত হিসেবে গ্রহণ করলেন? এসব প্রশ্ন নিয়ে, বিশেষত তাঁর সৃষ্ট তিনটি স্বনামধন্য চরিত্র নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটানোই এ লেখার উদ্দেশ্য।
আমাদের পক্ষে এখন আর জানা সম্ভব নয় এসব চরিত্র সৃষ্টির পেছনে হুমায়ূন আহমেদের অন্তর্গত অভিপ্রায় বা বাসনা কী ছিল। যদিও অনেকে বলে থাকেন যে তাঁর এসব চরিত্রে মূলত তাঁরই নানা বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অর্থাৎ এসব চরিত্রের মধ্য দিয়ে নিজেকেই তিনি বিশদ করেছেন। সে সিদ্ধান্ত আপাতত একপাশে রেখে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক ও প্রশাসনিক বাস্তবতার নিরিখে হুমায়ূনের এই চরিত্রদের অবস্থান আমরা খোঁজার চেষ্টা করব। বুঝতে চাইব, ঠিক কী করতে চায় তাঁর এই চরিত্ররা।
১.হিমু
মোটামুটি আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে বা নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে হুমায়ূন আহমেদ ‘মিসির আলি’, ‘হিমু’ বা ‘শুভ্র’ চরিত্র নিয়ে কাজ শুরু করেন। কালানুক্রমিক পর্যালোচনায় না গিয়ে ২০০৬ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘হলুদ হিমু কালো র্যাব’ উপন্যাস দিয়ে শুরু করা যাক। নামেই বোঝা যায়, হিমুর পাশাপাশি এই উপন্যাসের কেন্দ্রে রয়েছে ২০০৪ সালে গঠিত বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
২০০৬ সালে আমাদের দেশের বাস্তবতায় র্যাব ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে থাকা এক স্পর্শকাতর ব্যাপার। তত দিনে সন্ত্রাস দমনের নামে অকাতরে মানুষ হত্যাকে তারা জায়েজ করতে সক্ষম হয়েছে। এ বিষয়ে কলম ধরা তখনকার বাস্তবতায় সহজ কাজ ছিল না। হিমুকে অবলম্বন করে র্যাবকে নিয়ে উপন্যাস লিখলেন হুমায়ূন।
হলুদ হিমু কালো র্যাব। প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি, ২০০৬। প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ ম য় ন আহম দ উপন য স প রক শ চর ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কী অভিপ্রায়ে হিমু-শুভ্র-মিসির আলির সৃষ্টি
তিন শতাধিক গ্রন্থে হুমায়ূন আহমেদ অসংখ্য চরিত্রের জন্ম দিয়েছেন। তাঁর সবচেয়ে আলোচিত ও জনপ্রিয় তিনটি চরিত্র হলো হিমু, শুভ্র ও মিসির আলি। সম্ভবত তাঁর নিজেরও অতি আপন এই তিন চরিত্র। আমাদের বিদ্বৎসমাজে অবশ্য এদের বা এদের উপজীব্য করে রচিত উপন্যাসগুলোর কদর অতি অল্প। প্রশ্ন হলো, হুমায়ূন আহমেদ কেন ১৯৭২ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’র ধারা অনুসরণ না করে আপাত হেঁয়ালিপূর্ণ ক্ষুদ্রায়তন এই সব উপন্যাস রচনায় নিরত হলেন? কেন মহৎ সাহিত্য রচনায় না নেমে হাস্যরস উৎপাদনকেই তাঁর সাহিত্যিক ব্রত হিসেবে গ্রহণ করলেন? এসব প্রশ্ন নিয়ে, বিশেষত তাঁর সৃষ্ট তিনটি স্বনামধন্য চরিত্র নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত ঘটানোই এ লেখার উদ্দেশ্য।
আমাদের পক্ষে এখন আর জানা সম্ভব নয় এসব চরিত্র সৃষ্টির পেছনে হুমায়ূন আহমেদের অন্তর্গত অভিপ্রায় বা বাসনা কী ছিল। যদিও অনেকে বলে থাকেন যে তাঁর এসব চরিত্রে মূলত তাঁরই নানা বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। অর্থাৎ এসব চরিত্রের মধ্য দিয়ে নিজেকেই তিনি বিশদ করেছেন। সে সিদ্ধান্ত আপাতত একপাশে রেখে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক ও প্রশাসনিক বাস্তবতার নিরিখে হুমায়ূনের এই চরিত্রদের অবস্থান আমরা খোঁজার চেষ্টা করব। বুঝতে চাইব, ঠিক কী করতে চায় তাঁর এই চরিত্ররা।
১. হিমুমোটামুটি আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে বা নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে হুমায়ূন আহমেদ ‘মিসির আলি’, ‘হিমু’ বা ‘শুভ্র’ চরিত্র নিয়ে কাজ শুরু করেন। কালানুক্রমিক পর্যালোচনায় না গিয়ে ২০০৬ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘হলুদ হিমু কালো র্যাব’ উপন্যাস দিয়ে শুরু করা যাক। নামেই বোঝা যায়, হিমুর পাশাপাশি এই উপন্যাসের কেন্দ্রে রয়েছে ২০০৪ সালে গঠিত বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
২০০৬ সালে আমাদের দেশের বাস্তবতায় র্যাব ধরাছোঁয়ার ঊর্ধ্বে থাকা এক স্পর্শকাতর ব্যাপার। তত দিনে সন্ত্রাস দমনের নামে অকাতরে মানুষ হত্যাকে তারা জায়েজ করতে সক্ষম হয়েছে। এ বিষয়ে কলম ধরা তখনকার বাস্তবতায় সহজ কাজ ছিল না। হিমুকে অবলম্বন করে র্যাবকে নিয়ে উপন্যাস লিখলেন হুমায়ূন।
হলুদ হিমু কালো র্যাব। প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারি, ২০০৬। প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ