নড়াইলে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও সাবেক এমপির বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
Published: 7th, February 2025 GMT
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) বি এম কবিরুল হক মুক্তির বাগানবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। আজ শুক্রবার বিকেলে নড়াইলের কালিয়া পৌর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে কালিয়া বাজারে উপজেলা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একটি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেন। এই কর্মসূচি চলাকালে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলের পাশে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন একদল বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে কালিয়া ডাকবাংলোর পাশে অবস্থিত সাবেক সংসদ সদস্য কবিরুল হকের বাগানবাড়িতেও ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
তবে এ ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক স ম ওয়াহিদুজ্জামান মিলু। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনুষ্ঠান তখন চলছিল। হঠাৎ দেখি পূর্ব পাশে (সেখানে আওয়ামী লীগের কার্যালয়) কারা যেন আগুন ধরিয়ে দিয়েছে, তখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সে সময় আমরাও মাইকে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই। কে বা কারা এ কাজ করেছে, তা আমরা জানি না। এর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
ভাঙচুর ও আগুনের বিষয়ে রাত সাড়ে নয়টার দিকে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে আমরা কোনো লিখিত অভিযোগও পাইনি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার সদস্যসচিব শাফায়াত উল্লাহর নেতৃত্বে নড়াইল পৌরসভার পুরাতন বাস টার্মিনাল, জেলা পরিষদ, সদর উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের চারটি ম্যুরাল এক্সকাভেটর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। এ সময় নড়াইল পৌরসভার ফটক, সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাচীরে থাকা শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ছবিযুক্ত অংশ ভেঙে ফেলা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কোটিপতি হলেও পরিচ্ছন্নতা কর্মীর কাজ করেন তিনি
পর্যাপ্ত অর্থ সঞ্চয় করতে পারলেই আমাদের অনেকে কায়িক পরিশ্রম ছেড়ে দেন। আরাম-আয়েশে জীবন কাটান। কিন্তু সবাই তা করেন না। এমন একজন জাপানের কোইচি মাতসুবারা। ৫৬ বছর বয়সী এই জাপানি নাগরিকের বার্ষিক আয় প্রায় ৩ কোটি ইয়েন (প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা) হওয়া সত্ত্বেও তিনি এখনো নিয়মিত পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করেন।
মাতসুবারা সপ্তাহে তিন দিন, প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে কাজ করেন। তিনি সরকারি পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। এ কাজের অংশ হিসেবে তাঁকে ছোটখাটো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এ কাজ থেকে মাতসুবারা মাসে ১ লাখ ইয়েন (প্রায় ৮২ হাজার ৬৪ টাকা) আয় করেন, যা টোকিওর গড় বেতনের তুলনায় অনেক কম। তারপরও তিনি এ কাজ করেন। কারণ, তিনি এটাকে শারীরিক সক্রিয়তা ও মানসিক প্রশান্তির উপায় হিসেবে দেখেন।
মাতসুবারা ছোটবেলা থেকেই সঞ্চয়ী ছিলেন। মাধ্যমিকের পর তিনি একটি কারখানায় মাসে ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন (প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) বেতনে কাজ শুরু করেন। খরচ বাঁচিয়ে কয়েক বছরে প্রায় ৩০ লাখ ইয়েন (২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা) সঞ্চয় করে তিনি প্রথম স্টুডিও ফ্ল্যাট কিনেছিলেন।
পরে বাড়ি কেনার ঋণ আগেভাগে পরিশোধ করে ধীরে ধীরে আরও ফ্ল্যাট কেনেন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন মাতসুবারা। এখন টোকিও ও এর শহরতলিতে তাঁর সাতটি ফ্ল্যাট রয়েছে, যার সবই ভাড়া দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেছেন।
ধনবান হলেও মাতসুবারা সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এখনো তিনি সস্তা ফ্ল্যাটে থাকেন, নিজের খাবার নিজে বানান, নতুন জামাকাপড় কেনেন না, সাধারণ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এবং প্রধানত সাইকেলে চলাচল করেন। তাঁর জীবনদর্শন—‘প্রতিদিন কিছু না কিছু করার আশা করি, সুস্থ থাকতে চাই এবং নিজেকে নিয়ে চিন্তা করতে চাই।’
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে মাতসুবারাকে ‘অদৃশ্য কোটিপতি’ বলে উল্লেখ করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর গল্প ছড়িয়ে পড়েছে। জাপানে ধনীদের এমন সাধারণ জীবনধারা অস্বাভাবিক নয়। দেশটিতে সাদাসিধে জীবনযাপন অনেকের মধ্যে দেখা যায়।